ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতা-এমপি-মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা গা ঢাকা দেন।
এমনই খবর বের হয়, আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভারতে চলে গেছেন। তাকে নাকি দিল্লিতে একটি দোকানে দেখা গেছে। তবে সেই খবর মিথ্যা বললেন খোদ মনিরুল নিজেই। রোববার রমনা এলাকায় নিজের সরকারি বাসার সামনে থেকে ঘুরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন মনিরুল।
এদিকে ভারতে চলে গেছেন বলে সাম্প্রতিক যে আলোচনা চলছে তার উত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেছেন, পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাওয়ায় কোথাও যেতে পারেননি তিনি, আছেন দেশেই। ৫ আগস্টের পর দেওয়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হলে আত্মসমর্পণেও রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন একসময়ের প্রভাবশালী এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশের ডিএমপি শাখায় প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করেছেন সাবেক এই কর্মকর্তা। ডিএমপির মুখপাত্র থাকায় গণমাধ্যমে ছিলেন আলোচিত মুখ। ২০২১ সালে হয়েছিলেন এসবি শাখার প্রধান।
৫ আগস্ট ক্ষমতার পালা বদলের পর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা গ্রেফতার হলেও আলোচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবস্থান জানান দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। এরপর থেকে নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে তাকে।
সম্প্রতি তার কয়েকটি ছবি যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয় ভারতের একটি দোকানে কেনাকাটা করছেন তিনি। এরপরই গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে দিল্লিতে চলে গেছেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
আসলে তিনি কোথায় আছেন?
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, কালকে (রোববার) রমনার বাসায় ঢুকতে পারলাম না। রাস্তা থেকে শুধু দেখলাম। এ বাসায় অনেকদিন থাকছি। অথচ বাসাতে ঢুকতে পারলাম না।
দিল্লির ছবির বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালে মার্চের দিকে মালদ্বীপ গিয়েছিলাম পরে দিল্লিতে দুইদিন অবস্থান করেছিলাম।
দেশে থাকার দাবি করলেও কেন আত্মসমর্পণ করছেন না?
এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। আমি যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার হতে পারি। এটা আমি ধারণা করছি। সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রফেশনাল তদন্তে সংশ্লিষ্টতা মিললে গ্রেফতার হতে রাজি। আত্মসমর্পণ করারও চিন্তা করে দেখব।
উল্লেখ্য, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম চলতি মাসের ৬ অক্টোবর দেশ থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পালিয়ে গেছেন এমন খবর প্রচার হয় গণমাধ্যমে। কোটা সংস্কার ঘিরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৫ কোটি টাকা আনার অভিযোগ ওঠে পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
প্রিন্ট