ঢুলিরা সমানে বাজিয়ে চলেছে ঢোল। থেমে নেই ঢাকের শব্দও। সব মিলে কানে তালা লেগে যাওয়ার দশা। ঢাক আর ঢোলের শব্দে চাপা পড়ে যাচ্ছে পুরোহিত মশাইয়ের গলা।
তবুও মহানন্দে শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন সুভাষ সাহার বাড়িতে। জমাচ্ছেন বললে ভুল হবে, প্রতি বছরই দুর্গাপূজার সময় অসংখ্য মানুষ পূজা দেখতে ভিড় জমান সুভাষ সাহার বাড়িতে।
সুভাষ সাহার বাড়ির দুর্গাপূজা বোয়ালমারীর অন্যতম পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী পূজা। প্রতি বছরই আড়ম্বরের সঙ্গে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ বাড়িতে। পূজার সময় বাড়ির সামনে বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে বসে মেলা। মেলায় মিষ্টি, মাটির খেলনা, কাঠের জিনিস, বেলুন, বাঁশি- সবই পাওয়া যায়।
বাড়ির সামনে থেকে মেইন রোড পর্যন্ত করা হয় আলোকসজ্জা। পুরো এলাকাটাই যেন সেই আলোয় ঝলমল করতে থাকে। রাস্তার মুখে প্রবেশপথ হিসেবে তৈরি করা হয় বিশাল বড় গেট।
গেট দিয়ে ঢুকে সুভাষ সাহার মূল বাড়ি পর্যন্ত যেতেই চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। এক পাশে জমজমাট মেলা, আর বাড়ি পর্যন্ত যেতে হরেক রঙের আলোকসজ্জা যে কারোরই নজর কাড়বে।
বাড়ির কাছাকাছি যেতেই ভিড় বেড়ে যায় শতগুণ। ভেতর থেকে ভেসে আসে বিকট শব্দ। শব্দ শুনে মনে হবে সত্যিকারের অসুর হাসছে বুঝি। তবে শুধু অসুরের কণ্ঠই নয়, শোনা যায় দেবী দূর্গার মিষ্টি স্বরও। দিনের চেয়ে রাতের বেলায় সত্যিই এই পূজা বেশি আকর্ষণীয়। রাতের আলোকসজ্জা মুগ্ধ করে সবাইকে। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই নন, জাঁকজমকপূর্ণ এ পূজা দেখতে আসেন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও।
দুর্গাপূজার আয়োজনে অনেক বছরের ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছেন সুভাষ সাহা। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই কথাটির জ্বলন্ত প্রমাণ এ বাড়ির দুর্গাপূজা। শুধু বছরের এই নির্দিষ্ট সময়টুকু নয়, সবসময় ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে মিলেমিশে থাকার শিক্ষাই যেন দিয়ে চলেছে এই পূজা।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের বড় নগর গ্রামের সাহা পরিবারে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উপজেলার সর্ব বৃহত দূর্গা প্রতিমার পায়ে পূস্পাঞ্জলী দিয়ে প্রসাদ গ্রহনের আয়েজন করেছে সাহা পরিবারের পক্ষ থেকে বাবু সুবাস সাহা।
প্রিন্ট