ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সরদ ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে এক রাতের মধ্যে তিন সহোদরের বসত ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিনগত রাত দেড় টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে, ক্ষতিগ্রস্ত অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খবিবুর রহমান মিয়া আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ১০-১২ জন সশস্ত্র ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খবিবুর রহমানের বাড়ির গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা খবিবুর রহমানকে হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং তার স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকা, চার ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এরপর মেঝ ভাই খায়ের মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। ডাকাতেরা খায়ের মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে নগদ দুই লাখ টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে নেয়। সবশেষে, বড় ভাই মৃত্যু টুকু মিয়া এবং তার ছেলে সেনা সদস্য শাহ আলমের ঘরে প্রবেশ করে দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
ডাকাত দল প্রতিটি ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং বাড়ির পুরুষ সদস্যদের বেঁধে ফেলে, নারীদের জিম্মি করে মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ডাকাত দল তাণ্ডব চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তিন সহোদরের বাড়ি থেকে মোট নগদ প্রায় সোয়া চার লাখ টাকা এবং সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়।
খবিবুর রহমান বলেন, “গতকাল আলফাডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকা উত্তোলন করে বাসায় রেখেছিলাম, ভাতিজার জমি বিক্রির টাকা ছিল বাড়িতে। ডাকাতরা আমাকে হাত-পা বেঁধে বলেছিল, ‘গতকাল ব্যাংক থেকে যে টাকা উত্তোলন করেছো, সে টাকা দাও।’ রাতের অন্ধকারে তাদের কাউকে আমরা চিনতে পারিনি, তবে তাদের হাবভাব দেখে মনে হয়েছে তারা খুব পরিচিত লোকজন।”
ঘটনার পর, প্রতিবেশীরা চিৎকার শুনে এসে সাহায্য করে এবং পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে।
এলাকার চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল জানান, বিদ্যাধর গ্রামে এটি প্রথম ডাকাতির ঘটনা। তিনি বলেন, “এই তিন ভাই গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত এবং ভদ্র পরিবার হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনির প্রতি অনুরোধ জানাই যেন ডাকাতদের চিহ্নিত করে মালামাল উদ্ধার এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়।”
আরও পড়ুনঃ লালপুরে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্পে দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে চোখ অপারেশন
পুলিশের তদন্ত
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, “রাতে ঘটনাটি জানার পর আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। ডাকাতদের চিহ্নিত করে মালামাল উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আমরা সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।”
প্রিন্ট