ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. মনিরুজ্জামান মনিরের অবহেলায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী কুলসুম মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের মেয়ে আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কুলসুম পেট ও মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মনির তাকে ভালোভাবে পরীক্ষা না করে কিছু ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা পর কুলসুম আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত আবারও হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন, কিন্তু রেফার্ডের ১৫ মিনিট পরেই বোয়ালমারী হাসপাতালে কুলসুম মারা যান।
একই দিনে বিকেলে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বেদেনা বেগম নামের আরেক রোগী হাসপাতালে আসেন। ইমার্জেন্সির ডাক্তার না পেয়ে অটোভ্যানের উপরে আধাঘণ্টা পরে তিনি মারা যান।
শিক্ষার্থীর বাবা হাবিবুর রহমান জানান, “আমার মেয়ে বুধবার রাতে পোলাও ও মুরগীর রোস্ট খেয়েছিল। খাওয়ার পরে রাতেই বমি করলে তাকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানো হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। ডা. মনিরুজ্জামান মনির মেয়েকে চেকআপ না করে মুখের কথায় ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে এসে তার মুখ দিয়ে ফেনা ও লালা বের হলে আবারও হাসপাতালে আনা হয়, পরে আমার মেয়ে মারা যায়। এটা সম্পূর্ণ চিকিৎসকের অবহেলায় ঘটেছে। আমি চিকিৎসকের অবহেলা বিচারের দাবি জানাই, যেন আর কোন তাজা প্রাণ অকালে না ঝড়ে।”
ডা. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, “দুপুরে একটি অল্পবয়সী মেয়ে পেট ও মাথায় ব্যথা নিয়ে এসেছিল। পরে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। আমি তাকে ভালোভাবে দেখেছি, এমনকি পেটের সমস্যা বুঝে ওষুধ দিয়েছিলাম। তবে ওই মেয়েটার অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে, যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আমি ডিউটি শেষে চলে গিয়েছিলাম।”
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে এম মাহমুদুর রহমান বলেন, “এমন ঘটনা ঘটে থাকলে এটা দুঃখজনক। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রিন্ট