মানিক কুমার দাসঃ
ফরিদপুরের মধুখালীর এক গৃহবধূকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মরণাপন্ন করার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে বাদী পক্ষের আইনজীবী অনিমেষ রায় এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এক নম্বর আমলি আদালতে এ অভিযোগ করেন মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামের প্রশান্ত কুমার রায় (৪৫)।
মামলায় মধুখালীর এক গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মন্ডল (৩৫) এবং ফরিদপুর শহরের একটি ক্লিনিকের দুই চিকিৎসকসহ মোট তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামের প্রশান্ত কুমার রায়ের স্ত্রী শিখা রায় (৩৫) বুকে ও পেটে ব্যথা অনুভব করলে তাকে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মন্ডলকে দেখানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অশোক মন্ডল জানান শিখার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে, অস্ত্রোপচার করতে হবে। গত ২ আগস্ট অশোক মন্ডল শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে ৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিখা রায়ের অপারেশন করান। ৬ আগস্ট ওই ক্লিনিক ছাড়পত্র দিলে শিখাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।
অভিযোগে বলা হয় ১০ আগস্ট শিখার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব হলে তিনি অশোক মন্ডলকে ফোন করেন। অশোক মন্ডল ফোন না ধরায় শিখাকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। ওই ক্লিনিক শিখাকে ভর্তি করতে অস্বীকার করলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান শিখার অস্ত্রোপচার সঠিক হয়নি। বর্তমানে তিনি মৃত্যু ঝুঁকিতে হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসাধুভাবে অর্থ আদায়ের আশায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হতে পারে জেনেও ভুল চিকিৎসা প্রদান করেন, যার কারণে তার স্ত্রী এখন মৃত্যুপথযাত্রী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী অনিমেষ রায় বলেন, এক নম্বর আমলি আদালতের দায়িত্ব পালনকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ এলাহী শিখা রায়ের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়াবলী তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফরিদপুরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৩ অক্টোবর অভিযোগ শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মন্ডল বলেন, শিখা রায়ের পিত্তথলির অস্ত্রপচারে কোনো সমস্যা হয়নি। পাথর বের করা হয়েছে। তবে অস্ত্রোপচারের পর বাড়িতে এসে সঠিকভাবে ওষুধ না খাওয়ায় ইনফেকশন হয়ে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, এ সংক্রান্ত আদালতে নির্দেশনা তিনি এখন পর্যন্ত হাতে পাননি। আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে আদালতের চাহিদা অনুযায়ী তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
প্রিন্ট