–শামীম আহমেদ
সকাল থেকেই অনিকের উত্তেজনা ধরে রাখা যাচ্ছে না। বইমেলা! বাবা-মায়ের সাথে আজ সে প্রথমবারের মতো বইমেলায় যাবে। নতুন বইয়ের গন্ধ, লেখকদের সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা, স্টলের ভিড়—সবকিছু নিয়েই সে রোমাঞ্চিত।
মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতেই চারপাশের বইয়ের রঙিন প্রচ্ছদ, মানুষের কোলাহল আর মাইকের ঘোষণা তাকে অভিভূত করে ফেলে। বাবা-মা তার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন, কিন্তু এক মুহূর্তের অসাবধানতায় সে ভিড়ের মাঝে হারিয়ে যায়।
চারদিকে তাকিয়ে সে দেখল, বাবা-মায়ের কোনো খোঁজ নেই! বুকের ভেতর ধুকধুক শুরু হলো। আশপাশের মানুষজন ব্যস্ত, কেউ বই দেখছে, কেউ লেখকের অটোগ্রাফ নিচ্ছে। সেলফি তুলছে। অনিক ভয় পেয়ে গেল, কী করবে এখন?
তখনই সে দেখতে পেল এক পরিচিত মুখ—তার প্রিয় লেখক মেঘরাজ চৌধুরী! সাহস করে সে দৌড়ে গেল তার কাছে। কাঁপা গলায় বলল, “আমি হারিয়ে গেছি!”
মেঘরাজ চৌধুরী হাসলেন। তিনি মেলার এক কর্মীকে ডেকে বললেন, “এই ছোট্ট পাঠকের বাবা-মাকে খুঁজে দাও তো!” ঘোষণা দেওয়া হলো মাইকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা-মা ছুটে এলেন। মা অনিককে জড়িয়ে ধরলেন, বাবা কপালে চুমু খেলেন। মেঘরাজ চৌধুরী মুচকি হেসে বললেন, “বইমেলা শুধু বইয়ের জন্য নয়, এখানে গল্পও তৈরি হয়!”
অনিক হাসল। সত্যিই, আজকের দিনটা তার জীবনের এক স্মরণীয় গল্প হয়ে থাকল।
লেখকঃ শামীম আহমেদ
-কবি, লেখক ও সাহিত্যিক।
প্রিন্ট