ঢাকা , শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার আ. লীগ নেতা কৃষ্ণ চন্দ্র এখন এনসিপিতে Logo ইতিহাস ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ গোপালগঞ্জ -ভিপি নুরুল হক নুর Logo শহিদুল ইসলাম বাবুলের মুক্তির দাবিতে সদরপুর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ Logo মধুখালীতে ইউনিয়ন কর্মী সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১০ Logo বৃহত্তর রাজশাহীর কৃষি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান সুমন রাফি Logo মাগুরায় সাবেক এমপি কাজী কামাল ও যুবদল নেতা নয়নের গণ সংবর্ধনা Logo চট্টগ্রামের পটিয়ায় প্রধান শিক্ষকের উপর দুর্বৃত্তদের হামলা Logo আমরা সবাই মিলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবোঃ -মহম্মদপুরে কাজী কামাল  Logo কালুখালীতে শিল্প ও বনিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটি গঠন Logo ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন জাতের আখ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত কৃষক

নানা প্রতিবন্ধকতায় পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা

অন্যান্য বছরে মতো এবছরও ‘ফরিদপুরের বিভিন্ন  উপজেলার  কৃষকরা পাটচাষ করেছে। কিন্তু এ বছর পাটের উৎপাদনখ্যাত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কৃষকরা পাট নিয়ে পড়েছেন  মহা বিপাকে। অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাটের মাধ্যমে পানির উৎস বন্ধু  হওয়া, বৃষ্টিপাত না হওয়ায়  খাল বিল শুকিয়ে যাওয়ায় ভরা  মৌসুমে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেনা তারা।
ফলে বেশীরভাগ ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।এখন পাট কাটার ভরা মৌসুম শুরু হলেও সময় মত পাট না কাটায় পানির অভাবে এলাকার অধিকাংশ ক্ষেতের পাট মরে শুকিয়ে গেছে। অপরদিকে এ বছর স্মরনকালের বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এলাকার খালবিল শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। অনেকে পাট কেটে ২০/৩০ কি.মি. দূরে ভ্যানযোগে বহন করে নিয়ে জাগ দেওয়ায় বাড়তি ভোগান্তি হিসেবে পরিবহন খরচ যুক্ত হচ্ছে।এর ফলে উৎপাদন খরচ প্রচুর বেড়ে গেছে।
নানা প্রতিবন্ধকতায় লোকসানের শংকায় পাট চাষে আগহ হারাচ্ছে কৃষকরা। এলাকার কৃষকরা জানান, চলতি বছর বৈরী আবহাওয়া সত্যেও পাটের ভাল ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর  ভাঙ্গা উপজেলায় ১০ হাজার ২,শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষমাত্রা ছিল  ১০ হাজার,১,শ হেক্টর। কৃষি বিভাগের তদারকি,ভাল বীজ, সুষম সার প্রয়োগ এবং সঠিক পরিচর্যায় বৈরী আবহাওয়া সত্বেও পাটের যথেষ্ট ভাল ফলন হয়েছে।
এর মধ্যে দেশীয় প্রজাতির তোষা জাতের রবি-১ এবং জেআরও। এতে প্রনোদনা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে ১ হাজার হেক্টর জমিতে দেশীয় উদ্ভাবিত জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। এলাকার কৃষকরা জানান,দুরদুরান্তে পরিবহনের মাধ্যমে পানির উৎস স্থানে নিয়ে জাগ দেওয়ায় এর খরচ বেড়েছে বহগুন। স্বচ্ছ পানির অভাবে এলাকার অনেক কৃষক কাঁদা ও নোংরা পানিতে পাট জাগ দিয়ে ওই পানিতে ধুয়ে নিচ্ছে। ফলে রংসহ পাটের আশের গুনগত মান খারাপ হচ্ছে।  ফলে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের ।
উপজেলার সাউতিকান্দা গ্রামের কৃষক পান্নু মিয়া জানান,এ বছর পাটের উৎপাদন মুটামুটি ভাল হলেও পানি না থাকায় পাট কেটে ভ্যানযোগে নিয়ে কুমার নদীতে জাগ দিয়েছি। এতে শ্রমিকের খরচ এবং উৎপাদন খরচ বাদ দিলে কোন লাভ হবেনা। একই এলাকার কৃষক মিরাজ মিয়া জানান, খরচের কথা চিন্তা করে পাট না কাটায় সব পাট ক্ষেতেই মরে গেছে। এতে আমি সহ অধিকাংশ কৃষকই চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।
তাছাড়া কেউ কেউ আবার পাট পচাতে সার ব্যবহার করছে। সারের নতুন করে বৃদ্বির ফলে কৃষকের মরার উপর খড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এলাকার সিংহভাগ কৃষকই জানান সার,বীজের মূল্য উর্ধ্বগতি,শ্রমিকের মূল্য বৃদ্বি পাওয়ার ফলে পাটের উৎপাদন খরচ বৃদ্বি পেযেছে বহুগুন। তাছাড়া বর্তমানে পাটের বাজারমূল্য পড়ে যাওয়ায় লোকসানের কথা চিন্তা করে  আগামীতে আর পাটচাষ না করার সিদ্বান্ত নিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের পাটচাষে সঠিক পরামর্শ প্রদান, প্রনোদনার মাধ্যমে সার,বীজ বিতরণ করা এবং বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে পাটচাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়ায় সমস্যা হওয়ায়  কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আশ তৈরীতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা চলমান সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।  সোনালী আশের জেলা খ্যাত এলাকার চাষীরা পাটচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার আ. লীগ নেতা কৃষ্ণ চন্দ্র এখন এনসিপিতে

error: Content is protected !!

বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত কৃষক

নানা প্রতিবন্ধকতায় পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২
মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ :
অন্যান্য বছরে মতো এবছরও ‘ফরিদপুরের বিভিন্ন  উপজেলার  কৃষকরা পাটচাষ করেছে। কিন্তু এ বছর পাটের উৎপাদনখ্যাত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কৃষকরা পাট নিয়ে পড়েছেন  মহা বিপাকে। অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাটের মাধ্যমে পানির উৎস বন্ধু  হওয়া, বৃষ্টিপাত না হওয়ায়  খাল বিল শুকিয়ে যাওয়ায় ভরা  মৌসুমে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেনা তারা।
ফলে বেশীরভাগ ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।এখন পাট কাটার ভরা মৌসুম শুরু হলেও সময় মত পাট না কাটায় পানির অভাবে এলাকার অধিকাংশ ক্ষেতের পাট মরে শুকিয়ে গেছে। অপরদিকে এ বছর স্মরনকালের বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এলাকার খালবিল শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। অনেকে পাট কেটে ২০/৩০ কি.মি. দূরে ভ্যানযোগে বহন করে নিয়ে জাগ দেওয়ায় বাড়তি ভোগান্তি হিসেবে পরিবহন খরচ যুক্ত হচ্ছে।এর ফলে উৎপাদন খরচ প্রচুর বেড়ে গেছে।
নানা প্রতিবন্ধকতায় লোকসানের শংকায় পাট চাষে আগহ হারাচ্ছে কৃষকরা। এলাকার কৃষকরা জানান, চলতি বছর বৈরী আবহাওয়া সত্যেও পাটের ভাল ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর  ভাঙ্গা উপজেলায় ১০ হাজার ২,শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষমাত্রা ছিল  ১০ হাজার,১,শ হেক্টর। কৃষি বিভাগের তদারকি,ভাল বীজ, সুষম সার প্রয়োগ এবং সঠিক পরিচর্যায় বৈরী আবহাওয়া সত্বেও পাটের যথেষ্ট ভাল ফলন হয়েছে।
এর মধ্যে দেশীয় প্রজাতির তোষা জাতের রবি-১ এবং জেআরও। এতে প্রনোদনা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে ১ হাজার হেক্টর জমিতে দেশীয় উদ্ভাবিত জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। এলাকার কৃষকরা জানান,দুরদুরান্তে পরিবহনের মাধ্যমে পানির উৎস স্থানে নিয়ে জাগ দেওয়ায় এর খরচ বেড়েছে বহগুন। স্বচ্ছ পানির অভাবে এলাকার অনেক কৃষক কাঁদা ও নোংরা পানিতে পাট জাগ দিয়ে ওই পানিতে ধুয়ে নিচ্ছে। ফলে রংসহ পাটের আশের গুনগত মান খারাপ হচ্ছে।  ফলে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের ।
উপজেলার সাউতিকান্দা গ্রামের কৃষক পান্নু মিয়া জানান,এ বছর পাটের উৎপাদন মুটামুটি ভাল হলেও পানি না থাকায় পাট কেটে ভ্যানযোগে নিয়ে কুমার নদীতে জাগ দিয়েছি। এতে শ্রমিকের খরচ এবং উৎপাদন খরচ বাদ দিলে কোন লাভ হবেনা। একই এলাকার কৃষক মিরাজ মিয়া জানান, খরচের কথা চিন্তা করে পাট না কাটায় সব পাট ক্ষেতেই মরে গেছে। এতে আমি সহ অধিকাংশ কৃষকই চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।
তাছাড়া কেউ কেউ আবার পাট পচাতে সার ব্যবহার করছে। সারের নতুন করে বৃদ্বির ফলে কৃষকের মরার উপর খড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এলাকার সিংহভাগ কৃষকই জানান সার,বীজের মূল্য উর্ধ্বগতি,শ্রমিকের মূল্য বৃদ্বি পাওয়ার ফলে পাটের উৎপাদন খরচ বৃদ্বি পেযেছে বহুগুন। তাছাড়া বর্তমানে পাটের বাজারমূল্য পড়ে যাওয়ায় লোকসানের কথা চিন্তা করে  আগামীতে আর পাটচাষ না করার সিদ্বান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুনঃ বোয়ালমারীতে স্কুল সভাপতির নেতিবাচক কর্মকান্ডে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগে থানায় ডায়েরী
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের পাটচাষে সঠিক পরামর্শ প্রদান, প্রনোদনার মাধ্যমে সার,বীজ বিতরণ করা এবং বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে পাটচাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়ায় সমস্যা হওয়ায়  কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আশ তৈরীতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা চলমান সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।  সোনালী আশের জেলা খ্যাত এলাকার চাষীরা পাটচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

প্রিন্ট