ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ছত্রিশ বছরে কেউ পা রাখেনি সেতুটিতে

তিন যুগ ধরে আট পায়ে খাঁড়া দাঁড়িয়ে সেতুটি। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নে মালপাড়া খালের ওপর সেতুটি তৈরি হয়েছিল ৩৬ বছর আগে। কিন্তু এত দিনেও তৈরি হয়নি সংযোগ সড়ক।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি’। মালপাড়া খালের ওপর নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটিও সুনীলের মতো আক্ষেপে আজ বলতে পারে, ‘ছত্রিশ বছর কাটল, কেউ পা রাখেনি।’

মালপাড়া খালটি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নে। ৩৬ বছর আগে এই খালের ওপর তৈরি করা হয়েছিল ৫০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি। তখন আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, এই সেতু মিলিয়ে দেবে খালের এপার-ওপার। আর মিলিয়ে দেওয়ার আশায় সেতুটিও নিশ্চয় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু তার সেই সাধ পূরণ হলো না এত দিনেও। কারণ, আর কিছু নয়, তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তৈরি হলো না সেতুর দুই পারের সংযোগসড়ক।

স্থানীয়দের দাবি, সেতুটির এই শেষ বয়সে এসেও যদি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংযোগ সড়ক নির্মাণ দিত, হলে জনসাধারণের চলাচলে সুবিধা হতো। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় গাইবান্ধা সুরুজ্জাহান উচ্চবিদ্যালয়, নাপিতেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গাইবান্ধা কাছিমুল উলুম কওমি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাত্র এক কিলোমিটারের পথ ঘুরপথে অন্তত তিন থেকে চার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নাপিতেরচর, মরাবন, মালপাড়া, ডাকপাড়া, আদর্শগ্রাম, চন্দনপুর, ফুলারচরসহ আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষের গাইবান্ধা গো-হাটসহ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘১৯৮৫ সালে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন ব্রিজটি নির্মাণ করে এলজিইডি বিভাগ। ৩৬ বছরেও ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় পারাপার হতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাইকেল, মোটরসাইকেল ও মালবোঝাই ভ্যান গাড়ি তো দূরের কথা, ব্রিজটির ওপর দিয়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না।’

আর বর্তমান চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারীর ভাষ্য, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করবে—এমনটি প্রত্যাশা করি।’

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক জানান, ব্রিজটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক না থাকার বিষয়টি জেনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

একই রকম আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল। তাঁর মতে, ‘৩৬ বছর আগে নির্মিত ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

ছত্রিশ বছরে কেউ পা রাখেনি সেতুটিতে

আপডেট টাইম : ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্টঃ :

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি’। মালপাড়া খালের ওপর নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটিও সুনীলের মতো আক্ষেপে আজ বলতে পারে, ‘ছত্রিশ বছর কাটল, কেউ পা রাখেনি।’

মালপাড়া খালটি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নে। ৩৬ বছর আগে এই খালের ওপর তৈরি করা হয়েছিল ৫০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি। তখন আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, এই সেতু মিলিয়ে দেবে খালের এপার-ওপার। আর মিলিয়ে দেওয়ার আশায় সেতুটিও নিশ্চয় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু তার সেই সাধ পূরণ হলো না এত দিনেও। কারণ, আর কিছু নয়, তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তৈরি হলো না সেতুর দুই পারের সংযোগসড়ক।

স্থানীয়দের দাবি, সেতুটির এই শেষ বয়সে এসেও যদি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংযোগ সড়ক নির্মাণ দিত, হলে জনসাধারণের চলাচলে সুবিধা হতো। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় গাইবান্ধা সুরুজ্জাহান উচ্চবিদ্যালয়, নাপিতেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গাইবান্ধা কাছিমুল উলুম কওমি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাত্র এক কিলোমিটারের পথ ঘুরপথে অন্তত তিন থেকে চার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নাপিতেরচর, মরাবন, মালপাড়া, ডাকপাড়া, আদর্শগ্রাম, চন্দনপুর, ফুলারচরসহ আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষের গাইবান্ধা গো-হাটসহ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘১৯৮৫ সালে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন ব্রিজটি নির্মাণ করে এলজিইডি বিভাগ। ৩৬ বছরেও ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় পারাপার হতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাইকেল, মোটরসাইকেল ও মালবোঝাই ভ্যান গাড়ি তো দূরের কথা, ব্রিজটির ওপর দিয়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না।’

আর বর্তমান চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারীর ভাষ্য, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করবে—এমনটি প্রত্যাশা করি।’

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক জানান, ব্রিজটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক না থাকার বিষয়টি জেনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

একই রকম আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল। তাঁর মতে, ‘৩৬ বছর আগে নির্মিত ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।’


প্রিন্ট