ঢাকা , সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় Logo বাঘায় মুক্তিযোদ্ধার সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী চাঁদের মতবিনিময় Logo শিবগঞ্জে চোখ উপড়ে পাহারাদারকে হত্যা Logo মধুখালীতে সাংবাদিক সাগর চক্রবর্তীর মোটরসাইকেল চুরি Logo বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা  Logo বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য পালশা ডে নাইট শর্ট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo তানোর বিএনপির রাজনীতিতে জাহাঙ্গীরকে দায়িত্বশীল পদে দেখতে চায় তৃণমুল Logo কালুখালীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo তানোরে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু Logo হিলিতে বিদুৎ স্পৃষ্টে নিহত-১আহত হয়েছে ৬ জন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

আমনের আশা শেষ

বিরামহীন বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদে’র প্রভাবে অঝোর ধারায় টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে ধান চাষিদের। মাঠের অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তড়িঘড়ি করে ধান কেটে বাড়িতে আনলে তার কতটুকু ঘরে যাবে, তা নিয়ে কৃষকের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

গত শনিবার বিকেল থেকে শুরু হয় একটানা বৃষ্টি। উপজেলার প্রত্যন্ত নিম্নাঞ্চল ফসলের মাঠে এখন জলাবদ্ধতা। অনেকের কাটা ধান এখনও পড়ে আছে পানির নিচে। পেকে যাওয়া কাটা ধান ঘরে তুলতে না পারায় অধিকাংশ কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।একটানা তিন দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির পাকা আমন ধান, শতাধিক সরিষার প্রদর্শনী ক্ষেত ও শাকসবজি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

কৃষকরা দাবি করছেন, প্রায় প্রতিটি গ্রামের মাঠগুলোতে বৃষ্টির পানিতে ক্ষেতের ধান পড়ে আছে। ধান ঘরে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তলিয়ে যাওয়া ধানের কতটুকু ঘরে আসবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।তবে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র বলছে, মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ১১০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ এরই মধ্যে ৯ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছে। মাত্র দুই হাজার হেক্টর জমির কাটা ধান মাঠে থাকায় টানা বৃষ্টিতে ভিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হরিণাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হালিম মোল্যা, রিয়াজুল বিশ্বাস, সালাম মোল্যা, উজির মৃধা ও মেহেদী হাসান রাব্বি জানান, এখনও অনেক ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। তলিয়ে গেছে পানিতে। তার কতটুকু ঘরে তুলে আনতে পারবেন জানেন না। এ বছর তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাদের সর্বনাশ হয়ে গেল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার আট ইউনিয়নে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। অধিকাংশ পাকা ধান কাটা ও ঘরে তোলা প্রায় শেষ। মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ১০ হেক্টর জমির ধান কেটে বিচালি করে রাখায় সেটা পানিতে ডুবে গেছে। তবে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা দিতে তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও সরকারি সহায়তা দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছরের বৈরী আবহাওয়ায় বৃষ্টিতে আগাম আমন আবাদে চোট খেয়েছিলেন কৃষকরা। নাবিতেও সেই বৈরী আবহাওয়ার কারণেই আবার চোট খেল। শেষ মুহূর্তে এসে গত ৩ দিনের বৃষ্টিতে কৃষকের মাঠের পর মাঠ আমন ধান পানিতে ডুবে বেশ ক্ষতি হয়েছে। এর আগেও আগাম ধানে বেশ ক্ষতি হলেও কৃষকরা তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠেছিলেন। তবে এবারের চলমান ক্ষতি আর কাটিয়ে ওঠার নয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ছয়পুকুরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

আমনের আশা শেষ

আপডেট টাইম : ০৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ :

বিরামহীন বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদে’র প্রভাবে অঝোর ধারায় টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে ধান চাষিদের। মাঠের অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তড়িঘড়ি করে ধান কেটে বাড়িতে আনলে তার কতটুকু ঘরে যাবে, তা নিয়ে কৃষকের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

গত শনিবার বিকেল থেকে শুরু হয় একটানা বৃষ্টি। উপজেলার প্রত্যন্ত নিম্নাঞ্চল ফসলের মাঠে এখন জলাবদ্ধতা। অনেকের কাটা ধান এখনও পড়ে আছে পানির নিচে। পেকে যাওয়া কাটা ধান ঘরে তুলতে না পারায় অধিকাংশ কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।একটানা তিন দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির পাকা আমন ধান, শতাধিক সরিষার প্রদর্শনী ক্ষেত ও শাকসবজি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

কৃষকরা দাবি করছেন, প্রায় প্রতিটি গ্রামের মাঠগুলোতে বৃষ্টির পানিতে ক্ষেতের ধান পড়ে আছে। ধান ঘরে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তলিয়ে যাওয়া ধানের কতটুকু ঘরে আসবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।তবে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র বলছে, মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ১১০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ এরই মধ্যে ৯ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছে। মাত্র দুই হাজার হেক্টর জমির কাটা ধান মাঠে থাকায় টানা বৃষ্টিতে ভিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হরিণাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হালিম মোল্যা, রিয়াজুল বিশ্বাস, সালাম মোল্যা, উজির মৃধা ও মেহেদী হাসান রাব্বি জানান, এখনও অনেক ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। তলিয়ে গেছে পানিতে। তার কতটুকু ঘরে তুলে আনতে পারবেন জানেন না। এ বছর তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাদের সর্বনাশ হয়ে গেল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার আট ইউনিয়নে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। অধিকাংশ পাকা ধান কাটা ও ঘরে তোলা প্রায় শেষ। মাত্র এক হাজার থেকে এক হাজার ১০ হেক্টর জমির ধান কেটে বিচালি করে রাখায় সেটা পানিতে ডুবে গেছে। তবে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা দিতে তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও সরকারি সহায়তা দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছরের বৈরী আবহাওয়ায় বৃষ্টিতে আগাম আমন আবাদে চোট খেয়েছিলেন কৃষকরা। নাবিতেও সেই বৈরী আবহাওয়ার কারণেই আবার চোট খেল। শেষ মুহূর্তে এসে গত ৩ দিনের বৃষ্টিতে কৃষকের মাঠের পর মাঠ আমন ধান পানিতে ডুবে বেশ ক্ষতি হয়েছে। এর আগেও আগাম ধানে বেশ ক্ষতি হলেও কৃষকরা তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠেছিলেন। তবে এবারের চলমান ক্ষতি আর কাটিয়ে ওঠার নয়।


প্রিন্ট