রনি আহমেদ রাজুঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে থানায় হেফাজতে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা এবং উল্টো ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও ঢাকা রেঞ্জ পৃথক দুটি তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, কালিয়াকৈর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ–বাণিজ্য ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করতে গেলে এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ও ক্যামেরাম্যানের ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা টেলিভিশনের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং ক্যামেরাম্যানসহ এক সাংবাদিক ও এক পথচারীকে আহত করে। স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
পরে ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি আব্দুল মান্নান সারাদিন নানা অজুহাতে মামলা গ্রহণ না করে তাদের থানায় বসিয়ে রাখেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রথমে ঘটনাটি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন এবং পরে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে মামলা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
সমঝোতা না হওয়ায় রাতের দিকে ওসি উল্টো হামলার শিকার ক্যামেরাম্যানকে থানা হেফাজতে আটক রেখে একটি বানোয়াট মামলা দিয়ে আদালতে পাঠান। এমনকি এশিয়ান টেলিভিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও মামলার আসামি করা হয়।
অভিযোগ আরও রয়েছে, থানায় হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওসির নির্দেশে এসআই শহিদুলসহ এজাহারে উল্লেখিত সিরাজুল ইসলাম, তার ভাতিজা আজিম হোসেন এবং আরও কয়েকজন ক্যামেরাম্যানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের বিষয়ে আদালতে জানালে অতিরিক্ত মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ঘটনার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের হয়। ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন। রেঞ্জ কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন) মোহাম্মদ আব্দুল মাবুদ কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মেরাজুল ইসলামকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সাক্ষ্য–প্রমাণসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
এদিকে, থানা হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার আমলে নিয়ে গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) আমিনুল ইসলামকে পৃথক তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তিনি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) পুলিশ সুপার মোঃ এএইচএম শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। আইজিপি মহোদয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট

মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় 
রনি আহমেদ রাজু, নিজস্ব প্রতিনিধি 




















