ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় মুড়িকাটা পিয়াজ চাষে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে হাজারো কৃষক

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ায় আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে হাজারো কৃষক। বিঘাপ্রতি অর্ধলক্ষাধিক টাকা লোকসানের বোঝা বইতে গিয়ে অনেক কৃষককে হারাতে হচ্ছে চাষের জমি কিংবা হালের গরু।

 

কৃষকদের অভিযোগ, মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুমকে সামনে রেখে সরকার দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করেছে। এতেই লোকসানে পড়তে হয়েছে তাদের।

 

এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজে প্রতি বিঘায় কৃষকের খরচ গেছে লাখ টাকার ওপরে। রোপণ করার জন্য চাষিদের ছোট সাইজের পেঁয়াজ কিনতে হয় ৮ হাজার টাকা মণ। আকাশছোঁয়া দামের বীজ থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা মণ। তাছাড়া রোপণের পরপরই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ফলনও নেমে এসেছে ৪ ভাগের ১ ভাগে।

 

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষক আমান উল্লা বলেন, গত বছর এই সময় পেঁয়াজের মণ ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত দাম হওয়ায় আমরা কিনেও খেতে পারিনি। আমার এক বিঘা ৪ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ হয়েছে মাত্র ৩২ মণ। অন্তত ৮০ হাজার টাকা লোকসান হবে। তাই দুই পয়সা লাভের আশায় ৮ হাজার টাকা মণ হলেও বীজ কিনে পেঁয়াজ চাষ করেছি।

 

দৌলতপুর ভাগজােদ গ্রামের সাবিনা ইয়াসিমন নামের একজন নারী চাষী বলেন, সরকার আমাদের বিপদে ফেলে অন্য দেশ থেকে পিয়াজ আনছে। আমরা চাষ করলেই সেই জিনিসের দাম কমে যায়। পিয়াজের দামে হতাশ এ অঞ্চলের কৃষকরা। কয়েক দফা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেছেন।

 

তবে আশ্বাস দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি দাবি করে ছালাম নামের একজন কৃষক বলেন, শুনছি বিদেশি পিয়াজে বাজার সয়লাব। ক্রেতারাও কম দামে পিয়াজ পেয়ে নাকি খুশি। কিন্তু আমাদের দুঃখকষ্ট তো সরকার বুঝতে পারে। কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছে না।

 

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলছেন, সব কৃষক সমান ক্ষতির মুখে পড়বে না। যদি ফলন স্বাভাবিক হয়, তাহলে দাম কিছুটা কম হলেও ক্ষতি এতো বড় হবে না। যেমন মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার যেসব কৃষক আগাম পিয়াজ চাষ করেছেন, তাদের পিয়াজ বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও ১৫-২০ দিন পরে যাদের পিয়াজ উঠবে, তারা ফলন ও দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

রাজবাড়ীতে ডিবি পুলিশের অভিযানে ইয়াবাসহ মাদকব্যবসায়ী গ্রেফতার

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় মুড়িকাটা পিয়াজ চাষে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে হাজারো কৃষক

আপডেট টাইম : ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ায় আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে হাজারো কৃষক। বিঘাপ্রতি অর্ধলক্ষাধিক টাকা লোকসানের বোঝা বইতে গিয়ে অনেক কৃষককে হারাতে হচ্ছে চাষের জমি কিংবা হালের গরু।

 

কৃষকদের অভিযোগ, মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুমকে সামনে রেখে সরকার দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করেছে। এতেই লোকসানে পড়তে হয়েছে তাদের।

 

এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজে প্রতি বিঘায় কৃষকের খরচ গেছে লাখ টাকার ওপরে। রোপণ করার জন্য চাষিদের ছোট সাইজের পেঁয়াজ কিনতে হয় ৮ হাজার টাকা মণ। আকাশছোঁয়া দামের বীজ থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা মণ। তাছাড়া রোপণের পরপরই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ফলনও নেমে এসেছে ৪ ভাগের ১ ভাগে।

 

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষক আমান উল্লা বলেন, গত বছর এই সময় পেঁয়াজের মণ ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত দাম হওয়ায় আমরা কিনেও খেতে পারিনি। আমার এক বিঘা ৪ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ হয়েছে মাত্র ৩২ মণ। অন্তত ৮০ হাজার টাকা লোকসান হবে। তাই দুই পয়সা লাভের আশায় ৮ হাজার টাকা মণ হলেও বীজ কিনে পেঁয়াজ চাষ করেছি।

 

দৌলতপুর ভাগজােদ গ্রামের সাবিনা ইয়াসিমন নামের একজন নারী চাষী বলেন, সরকার আমাদের বিপদে ফেলে অন্য দেশ থেকে পিয়াজ আনছে। আমরা চাষ করলেই সেই জিনিসের দাম কমে যায়। পিয়াজের দামে হতাশ এ অঞ্চলের কৃষকরা। কয়েক দফা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেছেন।

 

তবে আশ্বাস দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি দাবি করে ছালাম নামের একজন কৃষক বলেন, শুনছি বিদেশি পিয়াজে বাজার সয়লাব। ক্রেতারাও কম দামে পিয়াজ পেয়ে নাকি খুশি। কিন্তু আমাদের দুঃখকষ্ট তো সরকার বুঝতে পারে। কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছে না।

 

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলছেন, সব কৃষক সমান ক্ষতির মুখে পড়বে না। যদি ফলন স্বাভাবিক হয়, তাহলে দাম কিছুটা কম হলেও ক্ষতি এতো বড় হবে না। যেমন মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার যেসব কৃষক আগাম পিয়াজ চাষ করেছেন, তাদের পিয়াজ বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও ১৫-২০ দিন পরে যাদের পিয়াজ উঠবে, তারা ফলন ও দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছি।


প্রিন্ট