ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে রাখার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে জীবাণুযুক্ত তুলো, ব্যান্ডেজ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ। এর ফলে দূষিত পানি ছড়িয়ে পড়ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অসচেতনতার কারণে এ অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্থানীয় পৌরসভা নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ না করার কারণে পরিস্থিতি এই রকম হয়েছে।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের পেছনে দেখা গেছে, কয়েক ফুট দূরে বর্জ্যের একটি বড় স্তুপ। সেখানে প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে হাজারো রোগীর চিকিৎসা বর্জ্য, যার মধ্যে রয়েছে ব্যবহৃত সুই, সিরিঞ্জ, তুলো, অব্যবহৃত ওষুধ এবং রোগীদের রক্ত ও গজ-ব্যান্ডেজ।
রোগীদের অভিভাবকরা জানান, খোলা জায়গায় ফেলে রাখা এসব প্রাণঘাতী চিকিৎসা বর্জ্য অনেক ক্ষতিকর। এর দুর্গন্ধে হাসপাতালে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বর্জ্যের দুর্গন্ধে তারা ক্লাস করতে পারেন না। এক শিক্ষার্থী বললেন, “হোস্টেল থেকে ক্লাসে আসার সময় নাক-মুখ চেপে দ্রুত পার হতে হয়।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের পশ্চিম দিকে একটি ইনসিনারেটর রয়েছে, কিন্তু সেটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভা হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিলেও তাদের কর্মকাণ্ড চলছে অদৃশ্যভাবে। গত এক মাস ধরে পৌরসভা নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ করতে আসছে না, যার ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে, সেখানে অপসারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।” হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম আশ্বাস দিয়েছেন যে, আধুনিক ও ধোঁয়া বিহীন একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হচ্ছে, যা চিকিৎসা বর্জ্যকে মুহূর্তেই নিষ্পত্তি করবে। এতে হাসপাতালের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আসবে।
প্রিন্ট