ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আ.লীগ নেতার বালুর ঘাট ভাগাভাগি ঘটনা নিয়ে দুই বিএনপি নেতা বহিষ্কার

কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার ইজারা নেওয়া বালুর ঘাট ভাগাভাগি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনায় ওয়ার্ড বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দলটি। এছাড়া ওই ওয়ার্ডে বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

 

১৮ অক্টোবর গতকাল কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

 

এর আগে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুগিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই বালুঘাট থেকে সাময়িকভাবে বালু অপসারণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

 

জেলা বিএনপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলামের পরিচালিত জুগিয়া বালুঘাট অবৈধপন্থায় নিয়ন্ত্রণ ও বালু উত্তোলনে সহায়তা করে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রমাণ থাকায় মিজানুর রহমান মজনুকে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিদুল ইসলাম পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এক যুগের বেশি সময় ধরে বালুঘাট তার নিয়ন্ত্রণে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে জুগিয়া বালুঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষ। এরপর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে মহিদুলের সমঝোতা হয়। সমঝোতা অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুল পাবেন ৪০ শতাংশ এবং বিএনপি নেতাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থ ভাগাভাগি হবে।

 

এদিকে বালু বিক্রির টাকার ভাগ না পেয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের অনুসারী শাহজাহান আলী ওরফে সাজুর অনুসারী কর্মীরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বালু পরিবহন ও বিক্রির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

তারা দাবি করেন, বালুবাহী ট্রাকের কারণে এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। পরে তারা জেলা প্রশাসনের কাছে বালুর ঘাটের ইজারা বন্ধসহ বালুবাহী ট্রাক বন্ধের দাবি জানান।

 

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উত্তেজনা শুরু হয়। বিএনপি নেতা সাজু এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বালু পরিবহন বন্ধের দাবি জানালে মহিদুল ও বিএনপির একটি পক্ষের নেতারা ক্ষুব্ধ হন। এ সময় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন।

 

সাজুর অনুসারী ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও তার অনুসারীরা মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

 

 

বালু ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে বুধবার মহিদুল ও বিএনপির একটি পক্ষ এক হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। এ সময় বিএনপি নেতা সাজু ও মিজানুর রহমানসহ এলাকার লোকজন একত্র হয়ে তাদের প্রতিহত করতে পাল্টা হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

আ.লীগ নেতার বালুর ঘাট ভাগাভাগি ঘটনা নিয়ে দুই বিএনপি নেতা বহিষ্কার

আপডেট টাইম : ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, ষ্টাফ রিপোর্টার :

কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার ইজারা নেওয়া বালুর ঘাট ভাগাভাগি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনায় ওয়ার্ড বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দলটি। এছাড়া ওই ওয়ার্ডে বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

 

১৮ অক্টোবর গতকাল কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

 

এর আগে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুগিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই বালুঘাট থেকে সাময়িকভাবে বালু অপসারণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

 

জেলা বিএনপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলামের পরিচালিত জুগিয়া বালুঘাট অবৈধপন্থায় নিয়ন্ত্রণ ও বালু উত্তোলনে সহায়তা করে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রমাণ থাকায় মিজানুর রহমান মজনুকে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিদুল ইসলাম পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এক যুগের বেশি সময় ধরে বালুঘাট তার নিয়ন্ত্রণে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে জুগিয়া বালুঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষ। এরপর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে মহিদুলের সমঝোতা হয়। সমঝোতা অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুল পাবেন ৪০ শতাংশ এবং বিএনপি নেতাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থ ভাগাভাগি হবে।

 

এদিকে বালু বিক্রির টাকার ভাগ না পেয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিনের অনুসারী শাহজাহান আলী ওরফে সাজুর অনুসারী কর্মীরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বালু পরিবহন ও বিক্রির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

তারা দাবি করেন, বালুবাহী ট্রাকের কারণে এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। পরে তারা জেলা প্রশাসনের কাছে বালুর ঘাটের ইজারা বন্ধসহ বালুবাহী ট্রাক বন্ধের দাবি জানান।

 

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উত্তেজনা শুরু হয়। বিএনপি নেতা সাজু এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বালু পরিবহন বন্ধের দাবি জানালে মহিদুল ও বিএনপির একটি পক্ষের নেতারা ক্ষুব্ধ হন। এ সময় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন।

 

সাজুর অনুসারী ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও তার অনুসারীরা মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

 

 

বালু ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে বুধবার মহিদুল ও বিএনপির একটি পক্ষ এক হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। এ সময় বিএনপি নেতা সাজু ও মিজানুর রহমানসহ এলাকার লোকজন একত্র হয়ে তাদের প্রতিহত করতে পাল্টা হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।


প্রিন্ট