ঢাকা , রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোরে আলুর বস্তার ভাড়া ১২ টাকা ! Logo দিনাজপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং রাজ ২৪৫ ফুলবাড়ী থানা উপ কমিটির পরিচিতি ও সংবর্ধনা Logo কুষ্টিয়া ছাগলের ঘাঁস কাঁটতে গিয়ে নরসুন্দরের রহস্যজনক মৃত্যু Logo ইবিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা Logo ফুলবাড়ীতে কাজিহাল ইউনিয়নের কয়েকটি হাট পরিদর্শন করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার Logo কুষ্টিয়ায় শ্রমিক অধিকার, নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক মতবিনিময় Logo কুষ্টিয়ায় হত্যাসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল Logo ডিভোর্সী নারীকে বিয়ে নিয়ে দ্বন্দ্বঃ যশোরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত Logo পাংশায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্র-গুলিসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাবুল সরদার গ্রেফতার Logo শালিখায় বি.এন.পি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত 
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বাবার সাথে শেষ কথা তুই থাকিস আমি আসবনে

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কুষ্টিয়ার আশীষ মণ্ডলের মেয়ে আনুশকা মণ্ডল পরী বাবার মরদেহের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলাে ‘যাওয়ার সময় বাবা আমাকে বলেছিল, তুই যাবি নে? আমি বলেছিলাম, না বাবা আমার শরীর খারাপ। বমি হচ্ছে, আমি যাব না। বাবা বলেছিল, আর কোন জায়গায় তোকে নিয়ে যাব না। ওই দিন বাবার সাথে শেষ কথা হয়েছিল। আর কোনো দিন কথা বলতে পারব না বাবার সাথে। বাবা আমারে কয়ে থুয়ে গেছিলো, তুই থাকিস আমি আসবনে।

.

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে আশীষের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়া শহরের কুমারগাড়া ঘোষপাড়ায় বাড়িতে পৌঁছালে তার স্বজনেরা আহাজারি করে ওঠেন। তাঁকে শেষবারের মতো এক নজর শেষ দেখার জন্য ভিড় করে এলাকাবাসী।

.

বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন আশীষের স্ত্রী। স্বজনেরা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন। সে সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন শ্বশুর মিহির বিশ্বাস। কথা হলে চোখ মুছে তিনি বলেন, ‘গত রোববার কুষ্টিয়া থেকে জামাই (আশীষ) তার ভাইয়ের ছেলে দুর্জয়কে নিয়ে পিকনিকে যাওয়ার জন্য ঢাকায় বোন-জামাইয়ের বাড়িতে যায়। সেখানে থেকে বোন সাধনা রানী মণ্ডল, ভগ্নিপতি দিলীপ কুমার বিশ্বাস, ভাগনি আরাধ্যা বিশ্বাসসহ কয়েকজন মাইক্রোবাসে কক্সবাজার যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে জামাই, তার বোন ও ভগ্নিপতির মৃত্যু হয়।

.

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জামাইয়ের নিথর দেহ বাড়িতে পৌঁছেছে। এখন কীভাবে চলবে এই পরিবার এই ভেবে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে।

.

স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশীষ মণ্ডল স্থানীয় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কর্মস্থলের কাছাকাছি শহরের নিজ বাড়িতেই স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। খুব ছোটবেলায় মামা তাঁকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছিলেন। সেই সূত্রে মামা বাড়ির পাশেই জমি কিনে স্থায়ী বসবাস করছেন।

.

নিহত আশীষ মণ্ডল কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত যতীন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে।

.

এদিকে ভাগনেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মামা গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস। কথা হলে তিনি বলেন, আশীষের যখন দেড় বছর বয়স তখন আমি তাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। সন্তানের মতো কোলে-পিঠে করে ভাগনেকে বড় করেছি। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছিল। বিবাহিত জীবনে তার ৯ বছরের একটি মেয়ে আছে। এখন কোথায় যাবে ওরা? ওদের তো আর কেউ থাকল না।।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে আলুর বস্তার ভাড়া ১২ টাকা !

error: Content is protected !!

বাবার সাথে শেষ কথা তুই থাকিস আমি আসবনে

আপডেট টাইম : ১১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫
ইসমাইল হােসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপাের্টার :

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কুষ্টিয়ার আশীষ মণ্ডলের মেয়ে আনুশকা মণ্ডল পরী বাবার মরদেহের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলাে ‘যাওয়ার সময় বাবা আমাকে বলেছিল, তুই যাবি নে? আমি বলেছিলাম, না বাবা আমার শরীর খারাপ। বমি হচ্ছে, আমি যাব না। বাবা বলেছিল, আর কোন জায়গায় তোকে নিয়ে যাব না। ওই দিন বাবার সাথে শেষ কথা হয়েছিল। আর কোনো দিন কথা বলতে পারব না বাবার সাথে। বাবা আমারে কয়ে থুয়ে গেছিলো, তুই থাকিস আমি আসবনে।

.

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে আশীষের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়া শহরের কুমারগাড়া ঘোষপাড়ায় বাড়িতে পৌঁছালে তার স্বজনেরা আহাজারি করে ওঠেন। তাঁকে শেষবারের মতো এক নজর শেষ দেখার জন্য ভিড় করে এলাকাবাসী।

.

বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন আশীষের স্ত্রী। স্বজনেরা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন। সে সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন শ্বশুর মিহির বিশ্বাস। কথা হলে চোখ মুছে তিনি বলেন, ‘গত রোববার কুষ্টিয়া থেকে জামাই (আশীষ) তার ভাইয়ের ছেলে দুর্জয়কে নিয়ে পিকনিকে যাওয়ার জন্য ঢাকায় বোন-জামাইয়ের বাড়িতে যায়। সেখানে থেকে বোন সাধনা রানী মণ্ডল, ভগ্নিপতি দিলীপ কুমার বিশ্বাস, ভাগনি আরাধ্যা বিশ্বাসসহ কয়েকজন মাইক্রোবাসে কক্সবাজার যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে জামাই, তার বোন ও ভগ্নিপতির মৃত্যু হয়।

.

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জামাইয়ের নিথর দেহ বাড়িতে পৌঁছেছে। এখন কীভাবে চলবে এই পরিবার এই ভেবে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে।

.

স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশীষ মণ্ডল স্থানীয় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কর্মস্থলের কাছাকাছি শহরের নিজ বাড়িতেই স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। খুব ছোটবেলায় মামা তাঁকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছিলেন। সেই সূত্রে মামা বাড়ির পাশেই জমি কিনে স্থায়ী বসবাস করছেন।

.

নিহত আশীষ মণ্ডল কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত যতীন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে।

.

এদিকে ভাগনেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মামা গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস। কথা হলে তিনি বলেন, আশীষের যখন দেড় বছর বয়স তখন আমি তাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। সন্তানের মতো কোলে-পিঠে করে ভাগনেকে বড় করেছি। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছিল। বিবাহিত জীবনে তার ৯ বছরের একটি মেয়ে আছে। এখন কোথায় যাবে ওরা? ওদের তো আর কেউ থাকল না।।


প্রিন্ট