ফরিদপুরের সালথা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ সাদিক (৪৫) ও এসআই তন্ময় চক্রবর্তীর (৩৫) বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার মো. হাফিজুর রহমান মুন্নু (৬৫) নামে এক ব্যক্তি ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ হাসান মোকদ্দমাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সেখ সাদিক চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার বারাদি গ্রামের শেখ আমিনউদ্দীনের ছেলে। ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সালথা থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসআই তন্ময় চক্রবর্তী রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ভররামদিয়া গ্রামের তাপস চক্রবর্তীর ছেলে। তিনি বর্তমানে বোয়ালমারী থানায় কর্মরত রয়েছেন।
মামলার বাদী সালথার ভাওয়াল গ্রামের হাফিজুর রহমান মুন্নু গ্রামীণ ব্যাংকের একজন অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম। আরজিতে মুন্নু বলেন, ‘চাকরি থেকে অবসরে যেয়ে তিনি গ্রামে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আমাকে ওসি সেখ সাদিক ও এসআই তন্ময় বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে বলতো যে- আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অনেক টাকা উপার্জন করে গ্রামে এসে রাজনীতি করছেন। এখন আমাদের ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিবেন, নইলে শান্তিতে থাকতে পারবেন না।’
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত বছরের ১১ মার্চ রাতে তাঁকে আটক করে আসামিরা ২০ লাখ চাঁদা দাবি করে, নইলে থানায় নিয়ে নির্যাতন ও হাতপা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দেয়। তিনি প্রাণভয়ে নানাভাবে তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা দেন। এরপরেও তারা তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে রাতভর অমানবিকভাবে নির্যাতন করে পরেরদিন একটি বিস্ফোরক মামলায় আদালতে চালান করে। মামলা নং- ২৫০/২২, দণ্ডবিধি- ১৪৩/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৫৪।
হাফিজুর রহমান মুন্নু আরও বলেন, ‘আমাকে মিথ্যা মামলায় আদালতে চালান দেওয়ার পরে এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ওই মামলায় আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসি। সেসময় ভয়ে ভীত হওয়ায় আদালতে মামলা করতে পারিনি। এখন দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসায় এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় মামলাটি দায়ের করেছি।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মামুন অর রশীদ বলেন, ‘দণ্ডবিধি ১৪৩/৩২৩/৩৮৫/৩৮৭/৫০৬/১১৪ ধারায় মোকদ্দমাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
প্রিন্ট