রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। ইতমধ্যে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে এগিয়ে থেকে ভোটারদের কাছে পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছেন চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। উপজেলার দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ আবারো ময়নার ওপরেই আস্থা রেখে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
স্থানীয়রা এবারের নির্বাচনকে এমপি অনুসারী ও বিরোধী লড়াই বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমপি অনুসারী হিসেবে ভোটে লড়ছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না (কাপ-পিরিচ) ।অন্যদিকে এমপি বিরোধী হিসেবে ভোটে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন (মোটরসাইকেল)। এবার মামুনকে বিজয়ী করতে তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন তারই এক সময়ের শক্র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী।
কিন্তু রাব্বানী অনুসারী নেতাকর্মীরা বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে পারছে না, বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গোলাম রাব্বানী দু’বার দলীয় মনোনয়নে উপজেলা নির্বাচন করছেন। কিন্ত্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে রাব্বানীর পরাজয় নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও তিনি এক সময় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এমপি ফারুক চৌধুরীকে ফেরেস্তার সঙ্গে তুলনা করে রাব্বানীর বিরুদ্ধে অকথ্য-অশ্লীল ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ নষ্টের মুলেই মামুন। কারণ ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মামুন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে যদি গোলাম রাব্বানীর পরাজয় না ঘটাতেন। তাহলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকতেন এমপির সঙ্গে রাব্বানীর কোনো বিরোধের সৃষ্টি হতো না। এমপির সঙ্গে মতবিরোধ এবং রাজনীতিতে গোলাম রাব্বানীর আজকের এই দৈন দশার জন্য মামুন দায়ী।
রাব্বানীর অনুসারী নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা এসব ঘটনা এখানো ভুলতে পারেনি। তারা বলছে, যে মামুন রাজনীতিতে রাব্বানীর সর্বনাশ করেছে, সেই মামুন আবার রাব্বানীর ঘাড়ে ভর করে উপজেলা চেয়ারম্যান হবার স্বপ্ন দেখছেন, এটা তারা কখানোই হতে দিতে পারেন না।কারণ রাব্বানীকে ভোটের মাঠে ব্যবহার করে যদি মামুন চেয়ারম্যান হয়, তাহলে সে আবারো যে এমপির কাছে ফিরবে না তার নিশ্চয়তা কি ? এটা হলে তো রাজনীতিতে গোলাম রাব্বানীর অস্থিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এসব বিবেচনায় রাব্বানীর অনুসারীরা মামুনকে মানতে নারাজ। তাদের ভাষ্য, মামুন ব্যতিত যে কেউ আসলে তারা ভোটের মাঠে মরণ কামড় দিতে প্রস্তুত।
কিন্ত্ত মামুনকে তারা কখানোই কোনো ভাবেই মানতে পারবেন না, প্রয়োজনে তারা স্বপক্ষ ত্যাগ করতে প্রস্তুত। এদিকে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে রাব্বানীর-এমন মামুনপ্রীতি, রাজনীতিতে তার চরম দেউলিয়াত্বেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। ওদিকে সাধারণ ভোটারদের মনে প্রশ্ন, এরা কখন কার পক্ষে থাকে, কখন কি রঙ বদলায় সেটা বোঝা দায় ? কিন্ত্ত তারা রাজনীতি বোঝেন না, উন্নয়ন দেখতে চাই। ফলে উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কোনো ব্যক্তি নয় তারা এমপি অনুসারী প্রার্থীর বিজয় ঘটাতে চাই।
প্রিন্ট