ঢাকা , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পাংশায় ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক এ্যাসোসিয়েশনের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা Logo বাংলাদেশ ও ঘানার জন্য আইএইচডিএফ গ্লোবাল মেডিকেল ক্যাম্প ইনিশিয়েটিভ ঘোষণা Logo বোয়ালমারীতে অরক্ষিত রেলক্রসিং ট্রেনের ধাক্কায় নছিমন চালক নিহত Logo হাতিয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় চন্দ্রপাড়া দরবার শরীফে ওরছ অনুষ্ঠিত Logo চার দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ফরিদপুর ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন Logo চট্টগ্রামের পটিয়ায় অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধিতে জনমনে আতঙ্ক Logo নড়াইল পৌর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে চলছে উৎসবের আমেজ, চলছে প্রার্থীদের জোর প্রচারণা Logo যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগ Logo সদরপুরে হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গৃহকর্মীকে হত্যাঃ

তৃতীয় দফায় রিমান্ডে কলেজশিক্ষিকা

আট মাস আগে লক্ষীপুরের মেয়ে লাইলী আক্তার (১৬) ঢাকার একজন কলেজশিক্ষিকার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করে। প্রথম দিকে লাইলীকে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দিতেন শিক্ষিকা ফারজানা ইসলাম। তিনি পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা। তবে মাস ছয়েক আগে থেকে আর লাইলীকে তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না ওই শিক্ষিকা। তবু মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষিকা ফারজানার মুঠোফোনে কল দিয়ে যেতেন মা সামেলা।

৯ দিন আগে (১০ এপ্রিল) গৃহকর্মী লাইলীর মরদেহ শিক্ষিকার পিলখানার ভেতরের বাসা থেকে উদ্ধার করে নিউমার্কেট থানা–পুলিশ। লাইলীর শরীরের বিভিন্ন অংশে ছিল নির্যাতনের চিহ্ন। চোখে, মুখে, কোমরে, হাঁটুতে ছিল পোড়া দাগ।

পরে লাইলীকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে কলেজশিক্ষিকা ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করে তা মা সামেলা। হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য তিন দফা ফারজানাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিউমার্কেট থানা–পুলিশ।
লাইলীর বাবা তিন বছর আগে মারা যান। মা সামেলা খাতুন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর বিশ্বাস বলেন, গৃহকর্মী লাইলীকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছিলেন আসামি ফারজানা। অমানবিক সেই নির্যাতনের ক্ষত লাইলীর চোখে–মুখে, কোমরে ছিল। তবু লাইলী হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য নানা নাটকের অবতারণা করছেন ওই শিক্ষিকা। আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রথমে ফারজানাকে চার দিন, পরে দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজ সোমবারও আদালত ফারজানাকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন।

নিউমার্কেট থানা–পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, লাইলী কলেজশিক্ষিকা ফারজানার বাসায় কাজ শুরু করে গত বছরের ১ আগস্ট। কাজ শুরুর পর লাইলীকে নানা সময়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। তবে লাইলী নির্যাতনের কথা সরাসরি স্বীকার না করে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছেন। ফারজানার বাসা থেকে একটি স্টিলের খুন্তি জব্দ করেছে পুলিশ।

লাইলীর মৃত্যুর সময় কলেজ শিক্ষিকা ফারজানার স্বামী ইউসুফ আলী মাসুদ বিদেশে ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত লাইলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, লাইলী আর কলেজশিক্ষিকা ফারজানার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে একই এলাকায়। তবে ফারজানা বড় হয়েছেন ঢাকায়।

নিহত লাইলীর চাচাতো ভাই নুরুল ইসলাম বলেন, ভালোভাবে থাকা–খাওয়ার কথা বলে গ্রাম থেকে লাইলীকে ঢাকায় নিয়ে যান কলেজশিক্ষিকা ফারজানা। মাসে বেতন দেওয়ার কথা ছিল এক হাজার টাকা। তবে কাজ শুরুর পর লাইলীর মৃত্যুর আগপর্যন্ত একটি টাকাও দেননি ফারজানা। দিনের পর দিন লাইলীকে নির্যাতন করা হয়েছে। লাইলীকে হত্যার জন্য কলেজশিক্ষিকা ফারজানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নিহতের স্বজনেরা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পাংশায় ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক এ্যাসোসিয়েশনের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা

error: Content is protected !!

গৃহকর্মীকে হত্যাঃ

তৃতীয় দফায় রিমান্ডে কলেজশিক্ষিকা

আপডেট টাইম : ১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১
ডেস্ক রিপোর্টঃ :

আট মাস আগে লক্ষীপুরের মেয়ে লাইলী আক্তার (১৬) ঢাকার একজন কলেজশিক্ষিকার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করে। প্রথম দিকে লাইলীকে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দিতেন শিক্ষিকা ফারজানা ইসলাম। তিনি পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা। তবে মাস ছয়েক আগে থেকে আর লাইলীকে তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না ওই শিক্ষিকা। তবু মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষিকা ফারজানার মুঠোফোনে কল দিয়ে যেতেন মা সামেলা।

৯ দিন আগে (১০ এপ্রিল) গৃহকর্মী লাইলীর মরদেহ শিক্ষিকার পিলখানার ভেতরের বাসা থেকে উদ্ধার করে নিউমার্কেট থানা–পুলিশ। লাইলীর শরীরের বিভিন্ন অংশে ছিল নির্যাতনের চিহ্ন। চোখে, মুখে, কোমরে, হাঁটুতে ছিল পোড়া দাগ।

পরে লাইলীকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে কলেজশিক্ষিকা ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করে তা মা সামেলা। হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য তিন দফা ফারজানাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিউমার্কেট থানা–পুলিশ।
লাইলীর বাবা তিন বছর আগে মারা যান। মা সামেলা খাতুন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর বিশ্বাস বলেন, গৃহকর্মী লাইলীকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছিলেন আসামি ফারজানা। অমানবিক সেই নির্যাতনের ক্ষত লাইলীর চোখে–মুখে, কোমরে ছিল। তবু লাইলী হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য নানা নাটকের অবতারণা করছেন ওই শিক্ষিকা। আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রথমে ফারজানাকে চার দিন, পরে দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজ সোমবারও আদালত ফারজানাকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন।

নিউমার্কেট থানা–পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, লাইলী কলেজশিক্ষিকা ফারজানার বাসায় কাজ শুরু করে গত বছরের ১ আগস্ট। কাজ শুরুর পর লাইলীকে নানা সময়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। তবে লাইলী নির্যাতনের কথা সরাসরি স্বীকার না করে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছেন। ফারজানার বাসা থেকে একটি স্টিলের খুন্তি জব্দ করেছে পুলিশ।

লাইলীর মৃত্যুর সময় কলেজ শিক্ষিকা ফারজানার স্বামী ইউসুফ আলী মাসুদ বিদেশে ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত লাইলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, লাইলী আর কলেজশিক্ষিকা ফারজানার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে একই এলাকায়। তবে ফারজানা বড় হয়েছেন ঢাকায়।

নিহত লাইলীর চাচাতো ভাই নুরুল ইসলাম বলেন, ভালোভাবে থাকা–খাওয়ার কথা বলে গ্রাম থেকে লাইলীকে ঢাকায় নিয়ে যান কলেজশিক্ষিকা ফারজানা। মাসে বেতন দেওয়ার কথা ছিল এক হাজার টাকা। তবে কাজ শুরুর পর লাইলীর মৃত্যুর আগপর্যন্ত একটি টাকাও দেননি ফারজানা। দিনের পর দিন লাইলীকে নির্যাতন করা হয়েছে। লাইলীকে হত্যার জন্য কলেজশিক্ষিকা ফারজানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নিহতের স্বজনেরা।


প্রিন্ট