ঢাকা , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নলছিটিতে একাধিক মাদক মামলার আসামি খলিল আটক Logo উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় সংহতি জোরালো করার দাবী Logo বিএনপির চেয়ারপার্সনের সুস্বাস্থ্য কামনায় দিনমজুর ও পথচারীদের মাঝে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ Logo তানোরে পথচারীদের মাঝে ছাতা ও খাবার বিতরণ Logo সালথায় স্কুলের টিউবওয়েলের পানি খেয়েই ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ Logo গোমস্তাপুরে কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়ায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২ Logo ফরিদপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo ভেড়ামারা সাংবাদিক কন্যা আসমাউল জান্নাত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন Logo তানোরে রাব্বানী-মামুন একট্টা জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফলোআপ নিউজ

জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হতে মরিয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক সহকারী প্রধান শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সহকারী প্রধান শিক্ষকের শিক্ষা জীবনে দুটি তৃতীয় বিভাগ প্রাপ্ত হওয়ায় তিনি বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য। এ কারণে তিনি একটি বিতর্কিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সনদ কিনে এনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়ায় অবস্থিত ‘হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়’র শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য আগামী ১৯ মে ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৬ জন ওই পদে আবেদন করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমানও প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। তার শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ রয়েছে। তিনি এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ পান। শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ হওয়ার কারণে বিধি মোতাবেক তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য।
এ কারণে তিনি ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ নামক একটি বিতর্কিত বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থের বিনিময়ে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রীর জাল সনদ কিনে এনে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। ২০২০ সালে উপজেলাভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের তথ্যসম্বলিত কাগজে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে আযুবুর রহমান নিজেই এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ উল্লেখ করেছেন।
২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি ওই কাগজ স্বাক্ষর করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন। এখন প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনের সময় বিএ ডিগ্রির কথা গোপন করে একটি বিতর্কিত বেসরকারি ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ইস্যুকৃত অনার্স-মাস্টার্স পাসের সনদ দাখিল করেছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ থেকে তিনি এই সনদ সংগ্রহ করেছেন। এদিকে চাকরি বিধি অনুযায়ী চাকরিতে থাকাকালীন কেউ কোন ডিগ্রি অর্জন করতে চাইলে তাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। আর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিনি বোয়ালমারীতে বসে কুমিল্লার একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি অনার্স-মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করলেন কখন এবং কীভাবে- এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাইন্সিল না থাকায় ‘ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’র একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোন বৈধতা নেই।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনেই আমি আবেদন করেছি। আমি ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চাকরিবিধি মেনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই আমি চাকরিরত অবস্থায় অনার্স-মাস্টার্স করেছি।’ এ সময় এ প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে প্রার্থী আয়ুবুর রহমান প্রসঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একেএম আব্দুস ছত্তার বলেন, ‘কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কি তিনি আবেদন করেছেন? কাগজপত্র যাদের যাচাই-বাছাই করার কথা তারা যদি যাচাই-বাছাই করে মনে করেন কোন প্রার্থীর কাগজপত্র ঠিক নেই তাহলে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।’
প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমানের জাল সনদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন ফোনে বিষয়টি বলেছে। কিন্তু কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে নিয়োগ পরীক্ষার দিন সনদ যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষ্ণু পদ ঘোষাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। এটা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আবেদন পত্র বাছাই কমিটিতে যারা থাকবেন তারা এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা বিচার করবেন। কিন্তু নিয়োগে কোন অনিয়ম হলে নিয়োগের পরে যদি কেউ কোন অভিযোগ করে তবে সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নলছিটিতে একাধিক মাদক মামলার আসামি খলিল আটক

error: Content is protected !!

ফলোআপ নিউজ

জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হতে মরিয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক

আপডেট টাইম : ০৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক সহকারী প্রধান শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সহকারী প্রধান শিক্ষকের শিক্ষা জীবনে দুটি তৃতীয় বিভাগ প্রাপ্ত হওয়ায় তিনি বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য। এ কারণে তিনি একটি বিতর্কিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সনদ কিনে এনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়ায় অবস্থিত ‘হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়’র শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য আগামী ১৯ মে ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৬ জন ওই পদে আবেদন করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমানও প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। তার শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ রয়েছে। তিনি এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ পান। শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ হওয়ার কারণে বিধি মোতাবেক তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য।
এ কারণে তিনি ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ নামক একটি বিতর্কিত বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থের বিনিময়ে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রীর জাল সনদ কিনে এনে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। ২০২০ সালে উপজেলাভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের তথ্যসম্বলিত কাগজে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে আযুবুর রহমান নিজেই এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ উল্লেখ করেছেন।
২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি ওই কাগজ স্বাক্ষর করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন। এখন প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনের সময় বিএ ডিগ্রির কথা গোপন করে একটি বিতর্কিত বেসরকারি ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ইস্যুকৃত অনার্স-মাস্টার্স পাসের সনদ দাখিল করেছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ থেকে তিনি এই সনদ সংগ্রহ করেছেন। এদিকে চাকরি বিধি অনুযায়ী চাকরিতে থাকাকালীন কেউ কোন ডিগ্রি অর্জন করতে চাইলে তাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। আর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিনি বোয়ালমারীতে বসে কুমিল্লার একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি অনার্স-মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করলেন কখন এবং কীভাবে- এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাইন্সিল না থাকায় ‘ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’র একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোন বৈধতা নেই।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনেই আমি আবেদন করেছি। আমি ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুমিল্লা’ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চাকরিবিধি মেনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই আমি চাকরিরত অবস্থায় অনার্স-মাস্টার্স করেছি।’ এ সময় এ প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে প্রার্থী আয়ুবুর রহমান প্রসঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একেএম আব্দুস ছত্তার বলেন, ‘কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কি তিনি আবেদন করেছেন? কাগজপত্র যাদের যাচাই-বাছাই করার কথা তারা যদি যাচাই-বাছাই করে মনে করেন কোন প্রার্থীর কাগজপত্র ঠিক নেই তাহলে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।’
প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমানের জাল সনদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন ফোনে বিষয়টি বলেছে। কিন্তু কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে নিয়োগ পরীক্ষার দিন সনদ যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষ্ণু পদ ঘোষাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। এটা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আবেদন পত্র বাছাই কমিটিতে যারা থাকবেন তারা এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা বিচার করবেন। কিন্তু নিয়োগে কোন অনিয়ম হলে নিয়োগের পরে যদি কেউ কোন অভিযোগ করে তবে সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’