ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকামীদের মাঝে ক্ষোভ

নগরকান্দায় আ’লীগের কমিটির বয়স ১০, বিএনপির ৭ বছর

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ১০ বছর অতিক্রম করেছে। আর বিএনপির কমিটির বয়স ৬ বছর পার হয়েছে। এতে করে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি । ফলে ৭ বছর আগেই পেরিয়ে গেছে কমিটির মেয়াদ। আর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর। তাদের মেয়াদ পেরিয়েছে ৫ বছর আগে। কিন্তু এ উপজেলায় বড় এ দুই দলে নতুন করে সম্মেলনের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। নেতারাও এ ব্যাপারে কোনো আভাস দিতে পারছেন না।

এ উপজেলায় সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি নগরকান্দা এম এন একাডেমী মডেল স্কুল মাঠে জাঁকজমক ভাবে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি। সেই সম্মেলনে সদ্য প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বড় ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলুকে সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর তিন বার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের ঠিক চারদিন আগে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি এ্যাডঃ সুবল চন্দ্র সাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছিল। এর পর ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অসুস্থতার কারণে এ সম্মেলনও স্থগিত করেন জেলা কমিটির সভাপতি শামীম হক। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। নগরকান্দা সদরে অবস্থিত জেলা মাল্টিপারপাস হল রুমে এ সম্মেলন হওয়ার কথা। ঐ দিন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর স্বামী ভাষা সৈনিক গোলাম আকবর চৌধুরীর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সম্মেলন ও স্থগিত করেন জেলা আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর উপজেলা বিএনপি সম্মেলনের মাধ্যমে তিন বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রায়ত কে এম ওবায়দুর রহমানের বাস ভবনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। সেই সম্মেলনে সভাপতি এ্যাডঃ লিয়াকত আলী খান বুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুলের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। বর্তমানে বিএনপি নেতাকর্মীরা আন্দোলন, গ্রেপ্তার ও মামলা সামাল দিতে ব্যস্ত। ফলে তাদের সম্মেলনেরও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফ বলেন, গত দুই বছর যাবত ফরিদপুর জেলা বিএনপির কোন কমিটি না থাকায় আমরাও উপজেলার কোন কমিটি করতে পারি নাই। সম্প্রতি জেলার পুনাঙ্গ কমিটি হয়েছে। এখন উপজেলাগুলোতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।

সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল বলেন, দেশে দ্রব্য মূল্য উর্দ্ধগতি নিয়ে আমরা আন্দোলন, গ্রেফতার ও নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা এ গুলো সামাল দিতে ব্যাস্ত। তবে অতি শীঘ্রই সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা কমিটি করা হবে।

সিনিয়র সহসভাপতি হাবীবুর রহমান বাবুল তালুকদার বলেন, উপজেলা কমিটির অনেকেই ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক নেতাকর্মী রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। তাদের রাজনীতিতে সক্রিয় করার জন্য দলের কাজ চলছে। তাছাড়া গত দুই বছর মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে আমরা কমিটি করতে পারিনাই। বর্তমানে আমরা সম্মেলন করতে প্রস্তত। জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ পেলেই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ জামাল হোসেন মিয়া বলেন, নগরকান্দায় দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় দলীয় কার্যক্রম স্থবিত হয়ে পড়েছে। বারবার সম্মেলনের তারিখ হলেও কোন কালো ইশারায় তা স্থগিত করা হচ্ছে। নিয়মিত সম্মেলন হলে দলের গতিশীলতা থাকে এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়। নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হওয়াটা বাঞ্চনীয়। একদিকে সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যদিকে বিএনপি জামায়াত মিলে দেশে একটা অস্থিতিশীল তৈরী করতে চায়। এই বিএনপি জামায়াতকে প্রতিহত করতে অতি শীঘ্র নগরকান্দায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার প্রয়োজন। অতিশীঘ্র নতুন ও তরুন নেতৃত্ব নিয়ে নতুন কমিটি করার দাবী করেন তিনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কারনে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। তার নেতৃত্বে জেলা কমিটির সম্মনয়ে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। আশা করি এ সম্মেলনে নতুন ও তরুন নেতৃত্ব স্থান পাবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকামীদের মাঝে ক্ষোভ

নগরকান্দায় আ’লীগের কমিটির বয়স ১০, বিএনপির ৭ বছর

আপডেট টাইম : ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩
বোরহানুজ্জামান আনিস, স্টাফ রিপোর্টার (নগরকান্দা) ফরিদপুর :

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ১০ বছর অতিক্রম করেছে। আর বিএনপির কমিটির বয়স ৬ বছর পার হয়েছে। এতে করে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি । ফলে ৭ বছর আগেই পেরিয়ে গেছে কমিটির মেয়াদ। আর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর। তাদের মেয়াদ পেরিয়েছে ৫ বছর আগে। কিন্তু এ উপজেলায় বড় এ দুই দলে নতুন করে সম্মেলনের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। নেতারাও এ ব্যাপারে কোনো আভাস দিতে পারছেন না।

এ উপজেলায় সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি নগরকান্দা এম এন একাডেমী মডেল স্কুল মাঠে জাঁকজমক ভাবে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি। সেই সম্মেলনে সদ্য প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বড় ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলুকে সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর তিন বার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের ঠিক চারদিন আগে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি এ্যাডঃ সুবল চন্দ্র সাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছিল। এর পর ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অসুস্থতার কারণে এ সম্মেলনও স্থগিত করেন জেলা কমিটির সভাপতি শামীম হক। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। নগরকান্দা সদরে অবস্থিত জেলা মাল্টিপারপাস হল রুমে এ সম্মেলন হওয়ার কথা। ঐ দিন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর স্বামী ভাষা সৈনিক গোলাম আকবর চৌধুরীর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সম্মেলন ও স্থগিত করেন জেলা আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর উপজেলা বিএনপি সম্মেলনের মাধ্যমে তিন বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রায়ত কে এম ওবায়দুর রহমানের বাস ভবনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। সেই সম্মেলনে সভাপতি এ্যাডঃ লিয়াকত আলী খান বুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুলের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। বর্তমানে বিএনপি নেতাকর্মীরা আন্দোলন, গ্রেপ্তার ও মামলা সামাল দিতে ব্যস্ত। ফলে তাদের সম্মেলনেরও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফ বলেন, গত দুই বছর যাবত ফরিদপুর জেলা বিএনপির কোন কমিটি না থাকায় আমরাও উপজেলার কোন কমিটি করতে পারি নাই। সম্প্রতি জেলার পুনাঙ্গ কমিটি হয়েছে। এখন উপজেলাগুলোতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।

সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল বলেন, দেশে দ্রব্য মূল্য উর্দ্ধগতি নিয়ে আমরা আন্দোলন, গ্রেফতার ও নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা এ গুলো সামাল দিতে ব্যাস্ত। তবে অতি শীঘ্রই সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা কমিটি করা হবে।

সিনিয়র সহসভাপতি হাবীবুর রহমান বাবুল তালুকদার বলেন, উপজেলা কমিটির অনেকেই ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক নেতাকর্মী রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। তাদের রাজনীতিতে সক্রিয় করার জন্য দলের কাজ চলছে। তাছাড়া গত দুই বছর মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে আমরা কমিটি করতে পারিনাই। বর্তমানে আমরা সম্মেলন করতে প্রস্তত। জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ পেলেই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ জামাল হোসেন মিয়া বলেন, নগরকান্দায় দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় দলীয় কার্যক্রম স্থবিত হয়ে পড়েছে। বারবার সম্মেলনের তারিখ হলেও কোন কালো ইশারায় তা স্থগিত করা হচ্ছে। নিয়মিত সম্মেলন হলে দলের গতিশীলতা থাকে এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়। নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হওয়াটা বাঞ্চনীয়। একদিকে সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যদিকে বিএনপি জামায়াত মিলে দেশে একটা অস্থিতিশীল তৈরী করতে চায়। এই বিএনপি জামায়াতকে প্রতিহত করতে অতি শীঘ্র নগরকান্দায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার প্রয়োজন। অতিশীঘ্র নতুন ও তরুন নেতৃত্ব নিয়ে নতুন কমিটি করার দাবী করেন তিনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কারনে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। তার নেতৃত্বে জেলা কমিটির সম্মনয়ে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। আশা করি এ সম্মেলনে নতুন ও তরুন নেতৃত্ব স্থান পাবে।


প্রিন্ট