ঢাকা , রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রাজশাহীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের উপর হামলা Logo যশোরে ৬২ রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিল Logo নাটোরের গুরুদাসপুরে ওজনে কম দেওয়ায় ৩ পেট্রোল পাম্পকে জরিমানা Logo দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলে করা হচ্ছে ডাম্পিং Logo কলেজের খেলার মাঠ দখল করে ব্লক নির্মাণ Logo কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু Logo ছাত্রলীগ নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে Logo গোমস্তাপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা Logo সদরপুরে নারীকে ধর্ষণ করে হত্যাঃ ইউপি মেম্বার মমরেজ আটক Logo কুমার নদে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের কঠোর হুশিয়ারি দিলেনঃ -শামা ওবায়েদ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাজশাহীতে ফেরিঘাট ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহী জেলা পরিষদের অধীনস্ত গোদাগাড়ী উপজেলার চারটি ফেরিঘাট ইজারার মধ্যে দুইটি ফেরিঘাট নামমাত্র মূল্যে এক মাসের জন্য ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের প্রায় ১০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
.

জানা গেছে, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান ও পরিষদের সার্ভেয়ার আলিফের কারসাজির মাধ্যমে গোদাগাড়ীর ফুলতলা ভাটোপাড়া ও বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ফেরিঘাট দুইটি পছন্দের ইজারাদারদের এক মাসের জন্য নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করছে।
.

সূত্র মতে, বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ফেরিঘাটটি এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় লিমন নামের এক ইজারাদারকে এবং ফুলতলা ভাটোপাড়া ফেরিঘাটটি ৫৫ হাজার টাকায় আইনুল নামের এক ইজারাদারকে এক মাসের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা পরিষদ চারটি ফেরিঘাট ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। .

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল, ১৪৩২ সনের ১লা বৈশাখ থেকে ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত এক বছরের জন্য ফেরিঘাটগুলো ইজারা দেওয়া হবে।
.

ঘাটগুলোর সরকারি ইজারা মূল্য ছিল:
বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর: ৮২,৬১,০০০ টাকা।ফুলতলা ভাটোপাড়া: ৬৬,১১,০০০ টাকা। প্রেমতলী: ৫,৮৩,০০০ টাকা ও গাবতলী (পবা উপজেলা): ১১,৮৮,৭৮৩ টাকা।

.

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও সিডিউল ক্রয়ের তেমন সাড়া না পেয়ে জেলা পরিষদ ঘাটগুলো মাসিক খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কোনো ধরনের নোটিশ বা পূর্ব ইজারাদারদের অবহিত না করেই ফুলতলা ভাটোপাড়া ও বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ঘাট দুইটি এক মাসের জন্য নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়া হয়।

.

এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে, আন্তঃজেলা ফেরিঘাট যেমন ভগবন্তপুর এক মাসের জন্য ৬ লাখ টাকায় এবং সুলতানগঞ্জ ঘাট ২৬ লাখ টাকার ডাকের পরিবর্তে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। একজন ইজারাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ফুলতলা ভাটোপাড়া ঘাট প্রতিবছর প্রায় ৬৫ লাখ ও বিদিরপুর ঘাট ৭৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়ে থাকে। অথচ এই দুইটি ঘাট মাত্র ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যেমন বঞ্চিত হয়েছেন, তেমনি সরকার রাজস্ব হারিয়েছে লক্ষাধিক টাকা।

.

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের এক কর্মচারী বলেন, প্রধান সহকারী আব্দুল মতিন এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন,আওয়ামী মতাদর্শী এই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিযম করে আসছে, তিনি বলেন,সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

.

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অ:দা:) আলেফ আলী জানান, “ঘাটগুলোর ইজারা ওপেন ডাকের মাধ্যমে হয়েছে, যেখানে সবাই অংশ নিতে পারে। পুরাতন ইজারাদারসহ প্রায় ৫০ জন ইজারাদার ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে ডাক হয়েছে। আপনারা যাচাই করে দেখতে পারেন।” তবে, কম মূল্যে ঘাট ইজারা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি ঘাটের ফাইল দেখি না, এটি দেখেন প্রধান সহকারী আব্দুল মতিন। আমি নিজেও মনে করি, এই ঘাটগুলোর প্রকৃত মূল্য অনেক বেশি হওয়া উচিত। বিষয়টি তদন্ত হওয়া দরকার।”

.

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের উপর হামলা

error: Content is protected !!

রাজশাহীতে ফেরিঘাট ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহী জেলা পরিষদের অধীনস্ত গোদাগাড়ী উপজেলার চারটি ফেরিঘাট ইজারার মধ্যে দুইটি ফেরিঘাট নামমাত্র মূল্যে এক মাসের জন্য ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের প্রায় ১০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
.

জানা গেছে, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান ও পরিষদের সার্ভেয়ার আলিফের কারসাজির মাধ্যমে গোদাগাড়ীর ফুলতলা ভাটোপাড়া ও বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ফেরিঘাট দুইটি পছন্দের ইজারাদারদের এক মাসের জন্য নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করছে।
.

সূত্র মতে, বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ফেরিঘাটটি এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় লিমন নামের এক ইজারাদারকে এবং ফুলতলা ভাটোপাড়া ফেরিঘাটটি ৫৫ হাজার টাকায় আইনুল নামের এক ইজারাদারকে এক মাসের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা পরিষদ চারটি ফেরিঘাট ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। .

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল, ১৪৩২ সনের ১লা বৈশাখ থেকে ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত এক বছরের জন্য ফেরিঘাটগুলো ইজারা দেওয়া হবে।
.

ঘাটগুলোর সরকারি ইজারা মূল্য ছিল:
বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর: ৮২,৬১,০০০ টাকা।ফুলতলা ভাটোপাড়া: ৬৬,১১,০০০ টাকা। প্রেমতলী: ৫,৮৩,০০০ টাকা ও গাবতলী (পবা উপজেলা): ১১,৮৮,৭৮৩ টাকা।

.

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও সিডিউল ক্রয়ের তেমন সাড়া না পেয়ে জেলা পরিষদ ঘাটগুলো মাসিক খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কোনো ধরনের নোটিশ বা পূর্ব ইজারাদারদের অবহিত না করেই ফুলতলা ভাটোপাড়া ও বড়গাছি-পেটাও-বিদিরপুর ঘাট দুইটি এক মাসের জন্য নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়া হয়।

.

এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে, আন্তঃজেলা ফেরিঘাট যেমন ভগবন্তপুর এক মাসের জন্য ৬ লাখ টাকায় এবং সুলতানগঞ্জ ঘাট ২৬ লাখ টাকার ডাকের পরিবর্তে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। একজন ইজারাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ফুলতলা ভাটোপাড়া ঘাট প্রতিবছর প্রায় ৬৫ লাখ ও বিদিরপুর ঘাট ৭৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়ে থাকে। অথচ এই দুইটি ঘাট মাত্র ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যেমন বঞ্চিত হয়েছেন, তেমনি সরকার রাজস্ব হারিয়েছে লক্ষাধিক টাকা।

.

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের এক কর্মচারী বলেন, প্রধান সহকারী আব্দুল মতিন এসব অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন,আওয়ামী মতাদর্শী এই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিযম করে আসছে, তিনি বলেন,সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

.

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অ:দা:) আলেফ আলী জানান, “ঘাটগুলোর ইজারা ওপেন ডাকের মাধ্যমে হয়েছে, যেখানে সবাই অংশ নিতে পারে। পুরাতন ইজারাদারসহ প্রায় ৫০ জন ইজারাদার ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে ডাক হয়েছে। আপনারা যাচাই করে দেখতে পারেন।” তবে, কম মূল্যে ঘাট ইজারা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি ঘাটের ফাইল দেখি না, এটি দেখেন প্রধান সহকারী আব্দুল মতিন। আমি নিজেও মনে করি, এই ঘাটগুলোর প্রকৃত মূল্য অনেক বেশি হওয়া উচিত। বিষয়টি তদন্ত হওয়া দরকার।”

.

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


প্রিন্ট