ঢাকা , শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার আ. লীগ নেতা কৃষ্ণ চন্দ্র এখন এনসিপিতে Logo ইতিহাস ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ গোপালগঞ্জ -ভিপি নুরুল হক নুর Logo শহিদুল ইসলাম বাবুলের মুক্তির দাবিতে সদরপুর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ Logo মধুখালীতে ইউনিয়ন কর্মী সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১০ Logo বৃহত্তর রাজশাহীর কৃষি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান সুমন রাফি Logo মাগুরায় সাবেক এমপি কাজী কামাল ও যুবদল নেতা নয়নের গণ সংবর্ধনা Logo চট্টগ্রামের পটিয়ায় প্রধান শিক্ষকের উপর দুর্বৃত্তদের হামলা Logo আমরা সবাই মিলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবোঃ -মহম্মদপুরে কাজী কামাল  Logo কালুখালীতে শিল্প ও বনিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটি গঠন Logo ঠাকুরগাঁওয়ে চাষ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন জাতের আখ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নরসিংদীর গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী

-‘বীরশ্রেষ্ঠ’ মতিউর রহমান।

সাদ্দাম উদ্দিন রাজঃ

আজ ২০ আগস্ট। নরসিংদী জেলার গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৫৪ তম (শহীদ দিবস) মৃত্যুবার্ষিকী। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার ১০৯, আগা সাদেক রোডের “মোবারক লজ” এ জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে। যা এখন মতিননগর গ্রাম নামে পরিচিত। ৯ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ৬ষ্ঠ। তাঁর বাবা মৌলবী আব্দুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন।

 

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকশনসহ মেট্টিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন।

 

কমিশনপ্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৭১ সালের এ দিনে করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটি থেকে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন তিনি।

 

সেখানে বিমানবাহিনীর সেফটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় রশিদ মিনহাজ নামে একজন শিক্ষানবিশ পাইলটকে অজ্ঞান করে বাংলাদেশ অভিমুখে রওনা দেন। বিপদবার্তা শত্রুদের কাছে পৌঁছালে আরও চারটা বিমান মতিউর রহমানকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে মতিউরের সামনের আসনে বসে থাকা মিনহাজের জ্ঞান ফিরে এলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি।

 

এর ফলে ভারতীয় সীমান্তের ৩৫ মাইল দূরে থাট্টায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে নিজ আসন থেকে ছিটকে পড়ে শহীদ হন মতিউর রহমান। তাঁর মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধ মাইল দূরে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতিউর রহমান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে মতিউরের অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ জাতীয় খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে।

 

পাকিস্তান সরকার মতিউর রহমানের মরদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে সমাহিত করেছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ২৪ জুন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে তাকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫ জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার আ. লীগ নেতা কৃষ্ণ চন্দ্র এখন এনসিপিতে

error: Content is protected !!

নরসিংদীর গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী

আপডেট টাইম : ০৩:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫
সাদ্দাম উদ্দিন রাজ, রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি :

সাদ্দাম উদ্দিন রাজঃ

আজ ২০ আগস্ট। নরসিংদী জেলার গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৫৪ তম (শহীদ দিবস) মৃত্যুবার্ষিকী। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার ১০৯, আগা সাদেক রোডের “মোবারক লজ” এ জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে। যা এখন মতিননগর গ্রাম নামে পরিচিত। ৯ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ৬ষ্ঠ। তাঁর বাবা মৌলবী আব্দুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন।

 

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকশনসহ মেট্টিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন।

 

কমিশনপ্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৭১ সালের এ দিনে করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটি থেকে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন তিনি।

 

সেখানে বিমানবাহিনীর সেফটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় রশিদ মিনহাজ নামে একজন শিক্ষানবিশ পাইলটকে অজ্ঞান করে বাংলাদেশ অভিমুখে রওনা দেন। বিপদবার্তা শত্রুদের কাছে পৌঁছালে আরও চারটা বিমান মতিউর রহমানকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে মতিউরের সামনের আসনে বসে থাকা মিনহাজের জ্ঞান ফিরে এলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি।

 

এর ফলে ভারতীয় সীমান্তের ৩৫ মাইল দূরে থাট্টায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে নিজ আসন থেকে ছিটকে পড়ে শহীদ হন মতিউর রহমান। তাঁর মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধ মাইল দূরে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতিউর রহমান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে মতিউরের অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ জাতীয় খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে।

 

পাকিস্তান সরকার মতিউর রহমানের মরদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে সমাহিত করেছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ২৪ জুন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে তাকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫ জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।


প্রিন্ট