ঢাকা , সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় Logo বাঘায় মুক্তিযোদ্ধার সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী চাঁদের মতবিনিময় Logo শিবগঞ্জে চোখ উপড়ে পাহারাদারকে হত্যা Logo মধুখালীতে সাংবাদিক সাগর চক্রবর্তীর মোটরসাইকেল চুরি Logo বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা  Logo বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য পালশা ডে নাইট শর্ট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo তানোর বিএনপির রাজনীতিতে জাহাঙ্গীরকে দায়িত্বশীল পদে দেখতে চায় তৃণমুল Logo কালুখালীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo তানোরে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু Logo হিলিতে বিদুৎ স্পৃষ্টে নিহত-১আহত হয়েছে ৬ জন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

লক্ষ্মীর কপালে জোটেনি ঘর

মহম্মদপুরে অনাহারে-অর্ধাহারে জীর্ণ কুটিরে একাকী বাস করেন লক্ষ্মী রানী। বর্ষাকালে কষ্টের সীমা থাকে না তার। ঘরের মধ্যে বৃষ্টির পানি পড়ায় ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেন না। স্বামী-সংসার ও মা-বাবা হারানো ৫০ বছরের বেশি বয়সী লক্ষ্মী রানী জীর্ণ এই বাড়িতে বসবাস করছেন দুই যুগের অধিক সময় ধরে।

জন্ম থেকে দুটি পা পঙ্গু। কিশোরী বয়সে বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু পঙ্গুত্বের অভিশাপে সংসার করার সৌভাগ্য হয়নি। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে লক্ষ্মী রানীর স্বামী চলে যান লক্ষ্মী রানীকে ছেড়ে।

পোড়া কপালে সুখের দেখা কখনও মেলেনি। ঘরের বাতিটাও জ্বলে না। রাতে ঘুমানোর জন্য রয়েছে একটি ছিঁড়ে যাওয়া খেজুর পাতার পাটি। তাই নতুন করে পাতা সংগ্রহ করে আরেকটি পাটি বানাতে চেষ্টা করছেন।

এই গল্প মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের রুই-ফলোশিয়া গ্রামের অসহায় লক্ষ্মী রানীর।

লক্ষ্মী রানীর কাছে একটু এগিয়ে গিয়ে কথা বলার সময় তিনি কেঁদে ফেলেন। অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, ‘শুনেছি সরকার সবাইরে ঘর বানায়ে দেছে। আমি এই ঘরটাই শুতি পারিনে। আপনারা সরকাররে কয়ে আমারে এটটা ঘর বানায়ে দেন।’

লক্ষ্মী রানী চিকিৎসা ও অন্নবস্ত্রের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বললেন, ‘কোনো দিন খাবার জোটে, কোনো দিন জোটেই না, মাঝে মাঝে উপোসও থাকতি অয়। আমার খোঁজ কেউ নেয় না।’

সরেজমিনে রোববার সকালে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঘরের মধ্যেই রান্নার চুলা। বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে মাটির ডোয়া। একটু ঝোড়ো বাতাসেই দোল খায় বসতঘর। প্রতিবেশীরা চালডাল দিলে মাঝেমধ্যে নিজেই রান্না করেন, অন্যথায় না খেয়ে দিনাতিপাত করেন।

সাত বোনের মধ্যে লক্ষ্মী ছিল বড়। অন্য ছয় বোনের বিয়ের পর সবাই ভারতে চলে যায়। এর কিছুদিন পর মারা যায় বাবা মুকুন্দ সরকার ও মা বিকোশা রানী সরকার। তারপর থেকে অসহায় জীবন-যাপন শুরু তার। তার দুঃখ-দুর্দশা দেখে প্রতিবেশী লক্ষ্মণ কুমার বিশ্বাস নামের এক লোক দেখাশোনা করেন।

বাবুখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর সাজ্জাদ আলী বলেন, এটা তার দেখার বিষয় নয়। তবে তার কাছে আবেদন করলে একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।

ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, লক্ষ্মী রানীর বিষয়ে তথ্য পেয়েছেন। খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Litu Sikder

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্যামনগর উপজেলার গাবুরাতে অভিযোজন কৃষি চর্চা বাড়াতে কৃষি ফসল ও সবজি চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ

error: Content is protected !!

লক্ষ্মীর কপালে জোটেনি ঘর

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ :

মহম্মদপুরে অনাহারে-অর্ধাহারে জীর্ণ কুটিরে একাকী বাস করেন লক্ষ্মী রানী। বর্ষাকালে কষ্টের সীমা থাকে না তার। ঘরের মধ্যে বৃষ্টির পানি পড়ায় ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেন না। স্বামী-সংসার ও মা-বাবা হারানো ৫০ বছরের বেশি বয়সী লক্ষ্মী রানী জীর্ণ এই বাড়িতে বসবাস করছেন দুই যুগের অধিক সময় ধরে।

জন্ম থেকে দুটি পা পঙ্গু। কিশোরী বয়সে বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু পঙ্গুত্বের অভিশাপে সংসার করার সৌভাগ্য হয়নি। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে লক্ষ্মী রানীর স্বামী চলে যান লক্ষ্মী রানীকে ছেড়ে।

পোড়া কপালে সুখের দেখা কখনও মেলেনি। ঘরের বাতিটাও জ্বলে না। রাতে ঘুমানোর জন্য রয়েছে একটি ছিঁড়ে যাওয়া খেজুর পাতার পাটি। তাই নতুন করে পাতা সংগ্রহ করে আরেকটি পাটি বানাতে চেষ্টা করছেন।

এই গল্প মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের রুই-ফলোশিয়া গ্রামের অসহায় লক্ষ্মী রানীর।

লক্ষ্মী রানীর কাছে একটু এগিয়ে গিয়ে কথা বলার সময় তিনি কেঁদে ফেলেন। অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, ‘শুনেছি সরকার সবাইরে ঘর বানায়ে দেছে। আমি এই ঘরটাই শুতি পারিনে। আপনারা সরকাররে কয়ে আমারে এটটা ঘর বানায়ে দেন।’

লক্ষ্মী রানী চিকিৎসা ও অন্নবস্ত্রের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বললেন, ‘কোনো দিন খাবার জোটে, কোনো দিন জোটেই না, মাঝে মাঝে উপোসও থাকতি অয়। আমার খোঁজ কেউ নেয় না।’

সরেজমিনে রোববার সকালে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঘরের মধ্যেই রান্নার চুলা। বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে মাটির ডোয়া। একটু ঝোড়ো বাতাসেই দোল খায় বসতঘর। প্রতিবেশীরা চালডাল দিলে মাঝেমধ্যে নিজেই রান্না করেন, অন্যথায় না খেয়ে দিনাতিপাত করেন।

সাত বোনের মধ্যে লক্ষ্মী ছিল বড়। অন্য ছয় বোনের বিয়ের পর সবাই ভারতে চলে যায়। এর কিছুদিন পর মারা যায় বাবা মুকুন্দ সরকার ও মা বিকোশা রানী সরকার। তারপর থেকে অসহায় জীবন-যাপন শুরু তার। তার দুঃখ-দুর্দশা দেখে প্রতিবেশী লক্ষ্মণ কুমার বিশ্বাস নামের এক লোক দেখাশোনা করেন।

বাবুখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর সাজ্জাদ আলী বলেন, এটা তার দেখার বিষয় নয়। তবে তার কাছে আবেদন করলে একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।

ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, লক্ষ্মী রানীর বিষয়ে তথ্য পেয়েছেন। খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


প্রিন্ট