ঢাকা , সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সদ্য কারা মুক্ত বিডিআর সদস্যকে ভেড়ামারা বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ফুল দিয়ে সংবর্ধনা

ইসমাইল হােসেন বাবু, ষ্টাফ রিপােটার

ঢাকা বিডিআর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত আসামী কারামুক্ত বিডিআর সিভিল কুকার মজিবর রহমান মুক্তি পাওয়ায় তার সহকর্মীরা বিডিআর কল্যান পরিষদ বিডিআর সদস্যরা তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।

 

পরে ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে সদ্যকারা মুক্ত মজিবুর রহমানের বাড়ির আঙিনায় ২৫ শে জানুয়ারি শনিবার বেলা বারোটার সময় বিডিআর সদস্য দিল্লাল হোসেনকে সভাপতিত্ব করে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অভিযুক্ত চাকরিচুত ভেড়ামারার বিডিআর সদস্য তৈয়ব আলী, নাসিম মিয়া। দৌলতপুর উপজেলার বিডিআর সদস্য আনিস, জাহিদ, মৌলা বক্স সভায় বক্তব্য রাখেন।

 

আলোচনা সভায় সদ্য কারামুক্ত মজিবর রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে বক্তব্য দিতে গিয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাগারে আটক থাকার পর অবশেষে গত ২৩ জানুয়ারি ১৬৮ জন বিডি আর জোয়ানেরা জামিনে কারা মুক্তি পেয়েছে। বিডিআর সিভিল কুকার মজিবর রহমান তিনি আরো বলেন, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ১৬ টি বছর অহেতুক জেলখানায় আটকিয়ে রেখেছিল। কারণ আমি বিডিআর পিলখানায় বাবুর্চির দায়িত্বে ছিলাম। নেই বিডিআরের পোশাক, ছিল না অস্ত্রগুলি। আমার মত নিরস্ত্র ব্যক্তিকে বিস্ফোরক মামলায় অভিযুক্ত করে কারাগারে পাঠায় ঘটনার ৩ দিন পরে গ্রেফতার করে । তারপর জেলখানায় দীর্ঘ ষোলটি বছর কান্নাকাটি করে মানবতার জীবন যাপন কাটাই।

 

সরকার পরিবর্তন তথা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সরকার পরিবর্তন হয়। আজ আমি সহ আমরা অনেক বিডিআর সদস্যই গত ২৩শে জানুয়ারি কারামুক্তি পাই।

 

চাকরিচু্্যত বিডিআর সদস্য তৈয়ব আলী , নাসিম মিয়া, দিল্লাল হোসেন ,আনিস ও মৌলা বক্স বক্তৃতায় বলেন, অবিচারের স্বীকার কারাবন্দি বিডিআরদের মুক্তি ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সু- পরিকল্পিত বাংলাদেশের সীমান্ত শক্তি বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংসের নিমিত্তে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের পর এখন সব গোপন কথা ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়াতে আসছে। টিভি খবরে শোনা যাচ্ছে আসল ঘটনা। পিলখানায় নাটকীয় ঘটনার সাথে কারা কারা জড়িত। আমাদের উপর অহেতুক মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের বাঁচার কোন অবলম্বন নেই ।খালি হাতে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি ।কেউ আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করছে না।

 

তাই আর মিথ্যা মামলা নয়, নিরাপরাধী অভিযুক্ত বিডিআর ভাইদেরকে অবিলম্বে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক । অভিযুক্ত মিথ্যা মামলার পুনরায় তদন্ত করে আমাদেরকে চাকরিতে পূর্ণ বহন করে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হোক। আমরা সীমান্তের অনন্ত প্রহরী , ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করি থাকে। সকল দিক বিবেচনা করে আমাদেরকে পুনরায় চাকরিতে যোগদান করানো হোক।,এই প্রত্যাশা বর্তমান সরকারের কাছে ,আকুল আবেদন ও প্রার্থনা জানাই।

 

কারামুক্ত মজিবর রহমান বলেন, আমাদের বিনা অপরাধে রাজনৈতিক কারণে এত বছর বন্দী রাখা হয়েছিল। আমাদের ধারণা ছিল, সরকার পরিবর্তন হলে আমরা হয়তো মুক্তি পাব। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে আজ আমরা জামিনী মুক্তি পেলাম ঠিকই কিন্তু মামলা অব্যাহত। জামিনে কারামুক্ত হওয়ায় সাধুবাদ জানাই যারা সরকার বৈষম্য আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন এনেছে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সাংবাদিক ভাইদের।

 

উল্লেখ্য,২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।

 

সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

সদ্য কারা মুক্ত বিডিআর সদস্যকে ভেড়ামারা বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ফুল দিয়ে সংবর্ধনা

আপডেট টাইম : ০৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
ইসমাইল হােসেন বাবু, ষ্টাফ রিপােটার :

ইসমাইল হােসেন বাবু, ষ্টাফ রিপােটার

ঢাকা বিডিআর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত আসামী কারামুক্ত বিডিআর সিভিল কুকার মজিবর রহমান মুক্তি পাওয়ায় তার সহকর্মীরা বিডিআর কল্যান পরিষদ বিডিআর সদস্যরা তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।

 

পরে ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে সদ্যকারা মুক্ত মজিবুর রহমানের বাড়ির আঙিনায় ২৫ শে জানুয়ারি শনিবার বেলা বারোটার সময় বিডিআর সদস্য দিল্লাল হোসেনকে সভাপতিত্ব করে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অভিযুক্ত চাকরিচুত ভেড়ামারার বিডিআর সদস্য তৈয়ব আলী, নাসিম মিয়া। দৌলতপুর উপজেলার বিডিআর সদস্য আনিস, জাহিদ, মৌলা বক্স সভায় বক্তব্য রাখেন।

 

আলোচনা সভায় সদ্য কারামুক্ত মজিবর রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে বক্তব্য দিতে গিয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাগারে আটক থাকার পর অবশেষে গত ২৩ জানুয়ারি ১৬৮ জন বিডি আর জোয়ানেরা জামিনে কারা মুক্তি পেয়েছে। বিডিআর সিভিল কুকার মজিবর রহমান তিনি আরো বলেন, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ১৬ টি বছর অহেতুক জেলখানায় আটকিয়ে রেখেছিল। কারণ আমি বিডিআর পিলখানায় বাবুর্চির দায়িত্বে ছিলাম। নেই বিডিআরের পোশাক, ছিল না অস্ত্রগুলি। আমার মত নিরস্ত্র ব্যক্তিকে বিস্ফোরক মামলায় অভিযুক্ত করে কারাগারে পাঠায় ঘটনার ৩ দিন পরে গ্রেফতার করে । তারপর জেলখানায় দীর্ঘ ষোলটি বছর কান্নাকাটি করে মানবতার জীবন যাপন কাটাই।

 

সরকার পরিবর্তন তথা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সরকার পরিবর্তন হয়। আজ আমি সহ আমরা অনেক বিডিআর সদস্যই গত ২৩শে জানুয়ারি কারামুক্তি পাই।

 

চাকরিচু্্যত বিডিআর সদস্য তৈয়ব আলী , নাসিম মিয়া, দিল্লাল হোসেন ,আনিস ও মৌলা বক্স বক্তৃতায় বলেন, অবিচারের স্বীকার কারাবন্দি বিডিআরদের মুক্তি ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সু- পরিকল্পিত বাংলাদেশের সীমান্ত শক্তি বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংসের নিমিত্তে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের পর এখন সব গোপন কথা ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়াতে আসছে। টিভি খবরে শোনা যাচ্ছে আসল ঘটনা। পিলখানায় নাটকীয় ঘটনার সাথে কারা কারা জড়িত। আমাদের উপর অহেতুক মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের বাঁচার কোন অবলম্বন নেই ।খালি হাতে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি ।কেউ আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করছে না।

 

তাই আর মিথ্যা মামলা নয়, নিরাপরাধী অভিযুক্ত বিডিআর ভাইদেরকে অবিলম্বে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক । অভিযুক্ত মিথ্যা মামলার পুনরায় তদন্ত করে আমাদেরকে চাকরিতে পূর্ণ বহন করে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হোক। আমরা সীমান্তের অনন্ত প্রহরী , ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করি থাকে। সকল দিক বিবেচনা করে আমাদেরকে পুনরায় চাকরিতে যোগদান করানো হোক।,এই প্রত্যাশা বর্তমান সরকারের কাছে ,আকুল আবেদন ও প্রার্থনা জানাই।

 

কারামুক্ত মজিবর রহমান বলেন, আমাদের বিনা অপরাধে রাজনৈতিক কারণে এত বছর বন্দী রাখা হয়েছিল। আমাদের ধারণা ছিল, সরকার পরিবর্তন হলে আমরা হয়তো মুক্তি পাব। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে আজ আমরা জামিনী মুক্তি পেলাম ঠিকই কিন্তু মামলা অব্যাহত। জামিনে কারামুক্ত হওয়ায় সাধুবাদ জানাই যারা সরকার বৈষম্য আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন এনেছে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সাংবাদিক ভাইদের।

 

উল্লেখ্য,২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।

 

সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।


প্রিন্ট