ছোটগল্প
২১২৫ সাল। পৃথিবীর সব পানি শুকিয়ে গেল! মানুষের জীবনে শুরু হলো এক অদ্ভুত অধ্যায়। কোনো কল থেকে পানি পড়ছে না। পুকুর, নদী, সমুদ্র সবকিছুই শুকিয়ে গেছে। পুরো পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোন পানির অস্তিত্ব নাই! পৃথিবীর গাছ-পালায় ধুসর রঙ ধরেছে। কোথাও কোন সবুজ নাই!
তাপমাত্রা অসহনীয়। শহরের রাস্তাগুলো ধূলিকণায় ঢাকা, আকাশে কোনও মেঘ নেই। একফোঁটা পানিও মাটিতে পাওয়া যায় না। পানির স্তর এতটাই নীচে নেমে গেছে যে শহরের রিজার্ভের পানিও শেষ হয়ে এসেছে। হতাশায় ডুবে আছে মানুষ…।
অ্যাডাম নামের এক তরুণ বিজ্ঞানী তার ল্যাবে বসে চিন্তা করছিলেন কীভাবে পৃথিবীর এই সমস্যার সমাধান করা যায়। তিনি বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেছেন, কিন্তু কোনওটাই কার্যকরী ছিল না। কিন্তু হঠাৎ তার মনে এক অসাধারণ ধারণা আসে। যদি তিনি এমন কোনও যন্ত্র তৈরি করতে পারেন যা বায়ুমণ্ডল থেকে আর্দ্রতা সংগ্রহ করে পানি তৈরি করতে পারে?
পরবর্তী কয়েক মাস অ্যাডাম তার গবেষণায় লেগে থাকেন। দিন রাত পরিশ্রম করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তিনি একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যা বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে পানি হিসেবে বের করে। এই যন্ত্রটি অত্যন্ত কার্যকরী এবং অল্প সময়ের মধ্যেই শহরের পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়।
শহরের মানুষজন অ্যাডামের উদ্ভাবনের জন্য কৃতজ্ঞ ছিল। তারা বুঝতে পেরেছিল যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কেবলমাত্র সমস্যার সমাধানই করতে পারে না, বরং মানবজাতিকে নতুন সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
অবশেষে মানুষ পানি সংরক্ষণের গুরুত্ব বুঝতে পারে। তারা শপথ করে, আর কখনোই পানির অপচয় করবে না। অ্যাডামের যন্ত্রটি শুধুমাত্র তার শহরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এটি সারা বিশ্বের জন্য একটি আশীর্বাদ হয়ে উঠেছিল। মানুষ পানির সঙ্কট থেকে মুক্তি পেল। পৃথিবী ধীরে ধীরে পুনরায় সবুজ হয়ে উঠল…।
শামীম আহমেদ
কবি, লেখক ও সাহিত্যিক
প্রিন্ট