রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে টাকা চুরির অভিযোগে আশিক হোসেন নামে ১২ বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে জখম করেছে গৃহকর্তা। শিশুটি বর্তমানে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের পূর্ব পোকন্দা গ্রামে মাত্র ৫ হাজার টাকা চুরির অভিযোগে শিশু আশিক হোসেনকে এলোপাথাড়ী পিটিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘরের মধ্যে আটকিয়ে নির্যাতন করে গৃহকর্তা মিঠুন। এ সময় পীপাসার্ত শিশুটি বারবার পানি পান করতে চাইলেও তাকে পানি পান করতে দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় তার আত্মীয়-স্বজন তাকে উদ্ধার করে বুধবার বিকেলে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
শিশু আশিক জানায়, তার বাবা অসুস্থ। সংসারে অভাব অনটনের কারণে সে একই গ্রামের মাজিদুল ইসলামের ছেলে মিঠুনের বাড়িতে সকাল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত কাজ করে। বিনিময়ে সে প্রতিদিন ১০০ টাকা পারিশ্রমিক পায়। সেই টাকা প্রতি সপ্তাহের দুই হাটবারে ৩০০ করে ৬০০ টাকা তাকে দেয়া হয়। প্রতি সপ্তাহে ৭০০ টাকা পাওনা হলেও তাকে ১০০ টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে মিঠুন তার বিরুদ্ধে ৫ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ তোলেন। সে টাকা চুরির কথা অস্বীকার করলে তাকে লাঠি দিয়ে পিটানো শুরু হয়। পিটিয়ে এক পর্যায়ে তাকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। ২ টার পর তাকে আবারো পিটিয়ে টাকা চুরির কথা স্বীকার করানো হয় এবং সেই স্বীকারোক্তি ভিডিও ধারণ করা হয়।
এই ঘটনায় শিশু আশিকের ভগ্নিপতি কামাল হোসেন বাদী হয়ে বুধবার রাতে লালপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার মোঃ ওয়ালিউজ্জামান পান্না জানান, শিশুটিকে অমানবিকভাবে প্রচন্ড মারপিট করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট