ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

শতাধিক বছরের রীতি মেনে পীরের মাজারে চাদর চাপিয়ে মঙ্গলকোট থানার কালিপূজার সূচনা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • ৫২ বার পঠিত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য নজির গড়ে উঠেছে, যা একদা মুঘল সম্রাট শাহজাহান বাদশার শিক্ষা ও দীক্ষাগুরু আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ (হামিদ বাঙালি) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এখানেই পীরের মাজারে চাদর চাপিয়ে কালিপূজার শুভ সূচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে (৩১ অক্টোবর) মঙ্গলকোটের পুরাতন থানায় পীর পাঞ্জাতন বাবার মাজারে চাদর চাপিয়ে থানার আইসি মধুসূদন ঘোষসহ অন্যান্য অতিথিবর্গ কালিপূজার শুভ সূচনা করেন।

 

শতাধিক বছরের ধর্মীয় রীতি মেনে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অসামান্য উদাহরণ। আগামী রবিবার পুরাতন থানার মাঠে পীর বাবার জলসা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে এলাকার সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, ‘আঠারো অলি’ খ্যাত মঙ্গলকোটে সুফি আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ পায়ে হেঁটে এসেছিলেন। পরবর্তীতে আফগান-মুঘল যুদ্ধের সময় শাহজাদা খুরহম মঙ্গলকোটে এসে এই সুফির সান্নিধ্যে আসেন এবং দীক্ষাও নেন। গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান পায়ে হেঁটে মঙ্গলকোটে আসেন, যা ইতিহাসে বিরল।

 

আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ ছিলেন একজন পারস্যের বাসিন্দা, তবে তিনি নিজেকে ‘বাঙালি’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। এই সুফিকে সাধারণ বাঙালিরা ‘হামিদ বাঙালি’ হিসেবে জানে। দক্ষিণবঙ্গের বর্ষীয়ান সাংবাদিক রণদেব মুখার্জি জানান, “মঙ্গলকোটের কুনুর নদীর তীরে দানিশমন্দের মাজারে প্রার্থনা করার পর মা কালী পূজা শুরু করা হয়।”

 

ধর্মীয় পরিমণ্ডলে মঙ্গলকোটের এ প্রথা শতাব্দী প্রাচীন এবং সম্প্রীতির এক অনন্য ধারার প্রতীক। মঙ্গলকোটে ধর্মীয় হানাহানির মাঝেও দানিশমন্দের বারদুয়ারি মসজিদের পাশে চাদর চড়িয়ে দেবী আরাধনায় মাতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

 

মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ জানান, “এহেন মাহাত্ম্যপূর্ণ স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন অটুট থাকুক অনন্তকাল।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিজিটাল ক্যাম্পাইন সেশন ২১ উপলক্ষে ওয়ালটন প্লাজা যশোর এরিয়ার উদ্যোগে নড়াইলে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা

error: Content is protected !!

শতাধিক বছরের রীতি মেনে পীরের মাজারে চাদর চাপিয়ে মঙ্গলকোট থানার কালিপূজার সূচনা

আপডেট টাইম : ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
ডেস্ক রিপোর্ট :

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য নজির গড়ে উঠেছে, যা একদা মুঘল সম্রাট শাহজাহান বাদশার শিক্ষা ও দীক্ষাগুরু আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ (হামিদ বাঙালি) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এখানেই পীরের মাজারে চাদর চাপিয়ে কালিপূজার শুভ সূচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে (৩১ অক্টোবর) মঙ্গলকোটের পুরাতন থানায় পীর পাঞ্জাতন বাবার মাজারে চাদর চাপিয়ে থানার আইসি মধুসূদন ঘোষসহ অন্যান্য অতিথিবর্গ কালিপূজার শুভ সূচনা করেন।

 

শতাধিক বছরের ধর্মীয় রীতি মেনে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অসামান্য উদাহরণ। আগামী রবিবার পুরাতন থানার মাঠে পীর বাবার জলসা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে এলাকার সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, ‘আঠারো অলি’ খ্যাত মঙ্গলকোটে সুফি আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ পায়ে হেঁটে এসেছিলেন। পরবর্তীতে আফগান-মুঘল যুদ্ধের সময় শাহজাদা খুরহম মঙ্গলকোটে এসে এই সুফির সান্নিধ্যে আসেন এবং দীক্ষাও নেন। গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান পায়ে হেঁটে মঙ্গলকোটে আসেন, যা ইতিহাসে বিরল।

 

আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ ছিলেন একজন পারস্যের বাসিন্দা, তবে তিনি নিজেকে ‘বাঙালি’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। এই সুফিকে সাধারণ বাঙালিরা ‘হামিদ বাঙালি’ হিসেবে জানে। দক্ষিণবঙ্গের বর্ষীয়ান সাংবাদিক রণদেব মুখার্জি জানান, “মঙ্গলকোটের কুনুর নদীর তীরে দানিশমন্দের মাজারে প্রার্থনা করার পর মা কালী পূজা শুরু করা হয়।”

 

ধর্মীয় পরিমণ্ডলে মঙ্গলকোটের এ প্রথা শতাব্দী প্রাচীন এবং সম্প্রীতির এক অনন্য ধারার প্রতীক। মঙ্গলকোটে ধর্মীয় হানাহানির মাঝেও দানিশমন্দের বারদুয়ারি মসজিদের পাশে চাদর চড়িয়ে দেবী আরাধনায় মাতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

 

মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ জানান, “এহেন মাহাত্ম্যপূর্ণ স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন অটুট থাকুক অনন্তকাল।”


প্রিন্ট