ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু Logo লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে ৭ই ডিসেম্বর কর্মশালা সফল করার লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে সার পচার, বিতরণে অনিয়ম, হট্টগোল ও মারপিট Logo ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় কওমী মাদরাসা ঐক্য পরিষদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশের নৃত্য দল ভারতে সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশগ্রহণ করে Logo সুন্দরবন প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo বাগাতিপাড়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর আত্মহত্যা ! Logo কালুখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ Logo বাগাতিপাড়ায় জাটকা মাছ জব্দ করে দন্ড
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঠাকুরগাঁওয়ে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে মন্ত্রণালয়ে প্রত্যয়ন পাঠানোর অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যয়নপত্র পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আমরা সরাসরি জড়িত নই। এটি নিয়ে একটি চক্র কাজ করছিল। আমাদের কাছে থেকে শুধুমাত্র কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে।

 

ইউএনও বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যয়নপত্রের স্মারক নম্বরে আকাশচুম্বি পার্থক্য দেখে আমাকে অবহিত করা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে সবগুলো প্রত্যয়নপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রত্যয়নপত্রে আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে পাঠানো হয়েছে। আমি এ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না।’

 

জানা গেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদন করা হয়। আবেদনে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করার নিয়ম রয়েছে ৷

 

অভিযুক্ত ১৭টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো- সদর উপজেলাধীন ঝাড়গাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, জাঠিভাঙ্গা শিডিউল কাস্ট উচ্চ বিদ্যালয়, ফাড়াবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বগুলাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়, দেওগাঁও দোয়েল উচ্চ বিদ্যালয়, মোলানখুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, ভগদগাজী উচ্চ বিদ্যালয়, শিবগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝাড়গাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ভেলারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশ বাংলা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পুরাতন ঠাকুরগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কাচারী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, কশালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, দারাজগাঁও হামিদ আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় ও কদম রসুল হাট উচ্চ বিদ্যালয়।

 

ফাড়াবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা সরাসরি জড়িত নয়। এটা নিয়ে একটি চক্র কাজ করছিল। আমাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র কিছু কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে। বাকি সব তারা (চক্র) করে দিয়েছেন। ইউএনও স্যারের প্রত্যয়নপত্র আমাদের নেওয়া হয়নি। তারা সবকিছু করে দেওয়ার কথা বলেছিল। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয় না, নম্বরও নেওয়া হয়নি।

 

শিবগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘পাশে পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রহমতুল্লাহ স্যারের মাধ্যমে কয়েকজন ব্যক্তি স্কুলে আসেন। তাদের মাধ্যমে এসব হয়েছে।

 

পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের জামালপুর ইউনিয়নের রইসুল নামে এক ব্যক্তি স্কুলে আসেন। তার সঙ্গে আরো কয়েকজন এসে আমাদের অনুদানের বিষয়টি বুঝান। অনুদান পাওয়ার পরে কিছু (টাকা) তারাও নিতে চেয়েছিলেন। তারা আমাদের না বলেই এসব জালিয়াতি কাগজপত্র বানিয়েছেন।’

 

শিক্ষক রহমতুল্লাহ’র নাম নেওয়া রাইসুলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বড়পূগী গ্রামে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও রাইসুলের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যয়নপত্রের স্মারক নম্বরে আকাশচুম্বি পার্থক্য দেখে আমাকে অবহিত করা হয়। মন্ত্রণালয় থেকেও আমাকে সবগুলো প্রত্যায়নপত্র পাঠানো হয়। আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রত্যয়নপত্রগুলো পাঠানো হয়েছে। এই প্রত্যায়নপত্র সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আখতার বলেন, ‘আমাদের কাছে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রত্যয়নপত্র এসেছে। সেগুলোতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে৷ বিষয়টি অনেক বেশি স্পর্শকাতর। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’

 

 

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে আরো বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু

error: Content is protected !!

ঠাকুরগাঁওয়ে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে মন্ত্রণালয়ে প্রত্যয়ন পাঠানোর অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতনিধি :

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যয়নপত্র পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আমরা সরাসরি জড়িত নই। এটি নিয়ে একটি চক্র কাজ করছিল। আমাদের কাছে থেকে শুধুমাত্র কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে।

 

ইউএনও বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যয়নপত্রের স্মারক নম্বরে আকাশচুম্বি পার্থক্য দেখে আমাকে অবহিত করা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে সবগুলো প্রত্যয়নপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রত্যয়নপত্রে আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে পাঠানো হয়েছে। আমি এ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না।’

 

জানা গেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদন করা হয়। আবেদনে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করার নিয়ম রয়েছে ৷

 

অভিযুক্ত ১৭টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো- সদর উপজেলাধীন ঝাড়গাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, জাঠিভাঙ্গা শিডিউল কাস্ট উচ্চ বিদ্যালয়, ফাড়াবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বগুলাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়, দেওগাঁও দোয়েল উচ্চ বিদ্যালয়, মোলানখুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, ভগদগাজী উচ্চ বিদ্যালয়, শিবগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝাড়গাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ভেলারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশ বাংলা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পুরাতন ঠাকুরগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কাচারী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, কশালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, দারাজগাঁও হামিদ আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় ও কদম রসুল হাট উচ্চ বিদ্যালয়।

 

ফাড়াবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা সরাসরি জড়িত নয়। এটা নিয়ে একটি চক্র কাজ করছিল। আমাদের কাছ থেকে শুধুমাত্র কিছু কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে। বাকি সব তারা (চক্র) করে দিয়েছেন। ইউএনও স্যারের প্রত্যয়নপত্র আমাদের নেওয়া হয়নি। তারা সবকিছু করে দেওয়ার কথা বলেছিল। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয় না, নম্বরও নেওয়া হয়নি।

 

শিবগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘পাশে পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রহমতুল্লাহ স্যারের মাধ্যমে কয়েকজন ব্যক্তি স্কুলে আসেন। তাদের মাধ্যমে এসব হয়েছে।

 

পারপূগী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রহমতুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের জামালপুর ইউনিয়নের রইসুল নামে এক ব্যক্তি স্কুলে আসেন। তার সঙ্গে আরো কয়েকজন এসে আমাদের অনুদানের বিষয়টি বুঝান। অনুদান পাওয়ার পরে কিছু (টাকা) তারাও নিতে চেয়েছিলেন। তারা আমাদের না বলেই এসব জালিয়াতি কাগজপত্র বানিয়েছেন।’

 

শিক্ষক রহমতুল্লাহ’র নাম নেওয়া রাইসুলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বড়পূগী গ্রামে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও রাইসুলের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যয়নপত্রের স্মারক নম্বরে আকাশচুম্বি পার্থক্য দেখে আমাকে অবহিত করা হয়। মন্ত্রণালয় থেকেও আমাকে সবগুলো প্রত্যায়নপত্র পাঠানো হয়। আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রত্যয়নপত্রগুলো পাঠানো হয়েছে। এই প্রত্যায়নপত্র সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আখতার বলেন, ‘আমাদের কাছে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রত্যয়নপত্র এসেছে। সেগুলোতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে৷ বিষয়টি অনেক বেশি স্পর্শকাতর। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’

 

 

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে আরো বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


প্রিন্ট