রাজশাহীর তানোর উপজেলা সরকারি হাসপাতালে জনবল সঙ্কট থাকলেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া, বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। ভাল কিছু করার ইচ্ছে শক্তি থাকলেই শত প্রতিকুলতার মাঝেও ভাল কিছু করা যায় তানোর উপজেলা হাসপাতালের কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ বার্নাবাস হাসদাক সেটা প্রমাণ করেছে। জনবল সঙ্কটের পরেও এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মেলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন পর মানুষ কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলা হাসপাতালে ২৯ জন চিকিৎসক পদের মধ্য ৪ জন চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে। সার্জারি, নাক-কান-গলা, চর্ম-যৌন ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ। এছাড়াও জুনিয়র মেকানিক এক জন, অফিস সহকারী দু’জন, ক্যশিয়ার একজন, মাঠকর্মী ১৩ জন, ইন্সেপক্টর দু’জন, জুনিয়র ফ্যাকো দুটি ও কামারগাঁ ইউপি উপ-স্বাস্থকেন্দ্রে চিকিৎসক একটি পদ শূণ্য রয়েছে। এছাড়াও পুরাতন ভবনের সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে। কিন্ত্ত এতো প্রতিকুলতার পরে চিকিৎসকদের স্বদিচ্ছার কারণে চিকিৎসা সেবা মান বেড়েছে। এখন প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৬শ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশনায় হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও টিএইচও ডাঃ বার্নাবাস হাসদাকের কঠোর নজরদারি হাসপাতালের পুরো চিত্র বদলে দিয়েছে। এখন আর নেই সেই আগের মতো দালালদের দৌরাত্ম্য ও চিকিৎসা সেবা নিতে আশা সাধারণ মানুষের হয়রানি। দীর্ঘদিন পর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীসহ এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে বিনামূল্যে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা পাবার বিশস্ত প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে উপজেলা হাসপাতাল। রাজশাহী জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে তানোর পৌর এলাকার আমশো মহল্লায় উপজেলা হাসপাতালের অবস্থান। এছাড়াও উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ কৃষিজীবী জীবনধারণও সাধারণ। ফলে এসব মানুষ চাইলেও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে জেলা শহরে যেতে পারে না। আবার উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে টাকা দিয়েও সাধারণ মানুষ কাঙ্খিত সেবা পায় না। তবে নিঃখরচায় এসব মানুষের উন্নত স্বাস্খ্য সেবা প্রদানের অঙ্গীকার ও কাঙ্খিত মাণের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে চলেছে উপজেলা হাসপাতাল। উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিস্ট সরকারি হাসপাতাল এখন উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবার বিশস্ত প্রতিষ্ঠান। মফস্বল এলাকায় উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানে তানোর উপজেলা হাসপাতাল অন্যদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে।
জানা গেছে, উপজেলা হাসপাতালের আধুনিক সুবিধা সংবলিত নতুন ভবন, নিজস্ব বিদ্যুৎ, অক্সিজেন ও পরিবহণ ব্যবস্থা, সার্বনিক একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও আল্ট্রসনোগ্রাফি, শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ও আধূনিক যন্ত্রপাতি সম্মৃদ্ধ অপারেশন থিয়েটার, দালাল ও ধুমপানমুক্ত উন্নত পরিবেশ, নিয়ম-শৃঙ্খলা, রোগী, ওষুধ, পথ্য-মানসম্মত খাবার সরবরাহ ও স্বজনদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবায় আস্থা ও ভরসার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে উপজেলা হাসপাতাল।
ফলে এখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে চিকিৎসা সেবা গ্রহণকারীদের সংখ্যা। আবার হাতের কাছে উন্নত চিকিৎসা সেবা পেয়ে এই জনপদের মানুষও হাসপাতাল নিয়ে খুশি। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. বার্নাবাস হাসদাক বলেন, তারা মানব সেবার প্রত্যয় নিয়ে চিকিৎসক হয়েছেন। তিনি বলেন, তারা সব সময় সাধারণ মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দেবার চেস্টা করে যাচ্ছেন, আগামি দিনেও তাদের এই চেস্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, এখন হাসপাতালের রোগীদের উন্নত মানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, এমপি মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। সাধারণ মানুষের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, এর জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা সব করবো, ইনশাআল্লাহ্।
প্রিন্ট