ইস্রাফিল হোসেন ইমন, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হালিমা বেগম একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত এবং বহুলালোচিত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের আর্থিক অনিয়ম, দূর্নীতি ও বিদ্যালয়ের অনুপস্থিত থাকা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে এবার মাঠে নেমেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।
গতকাল রবিবার সকাল ১১ টায় তদন্ত শুরু করে ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আনোয়ার হোসাইন। এর আগে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত রির্পোট দাখিলের নির্দেশ দেয়।
কমিটির প্রধান করা হয়, ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আনোয়ার হোসাই কে। অন্যান্য দুজন সদস্য হলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো: হেলালুদ্দিন ও সহকারী প্রোগ্রামার ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর মারজিয়া খানম।
গতকাল রবিবার হালিমা বেগম একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল ২৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার উপস্থিতিতে তদন্ত শুরু করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আনোয়ার হোসাইন। দুই দফায় চলা তদন্ত চলে উপজেলা ভূমি অফিসে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে।
দিনভর চলা এই তদন্ত কার্যক্রমে গুরুত্ব পায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার পাল’র ২৮/০২/২০২৪ তারিখে দাখিল করা ১৩টি অভিযোগ। যে অভিযোগ ইতোমধ্যে প্রমানিত হয়ে বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে যশোর শিক্ষা বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছিল বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তথা উপজেলা প্রশাসন কে।
কিন্তু কার্যত কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করাই অদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যার প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম শফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শফিকুলের বিরুদ্ধে এর আগেও যশোর বোর্ড উপজেলা প্রশাসনকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সে সময়ও ৩ সদস্যের কমিটি তার বিরুদ্ধে আনীত ১৩ টি অভিযোগের প্রত্যেকটি সত্যতা পেয়েছিল। বোর্ড উপজেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয় কে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রধান শিক্ষক শফিকুলের উপস্থিতিতে এবার তদন্ত হলো। তদন্তে প্রত্যেকটি অভিযোগই আবার প্রমাণিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ কোন অভিযোগের বিরুদ্ধে শফিকুল উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারে নাই। তাছাড়াও ওই বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক কোন রুপ ছুটি না নিয়েই নিয়মবর্হিভূত ভাবে সে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। কিন্তু তাকে নিয়মিত ভাবেই বেতন ভাতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বলছে, প্রধান শিক্ষক শফিকুল তার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের সঠিক জবাব দিতে পারে নাই।
অন্যদিকে শফিকুলের সাথে অভিযোগের বিষয়ে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
তদন্ত কমিটির প্রধান আনোয়ার হোসাইন বলেন, আমরা প্রধান শিক্ষক শফিকুলের উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ তদন্ত করেছি। যথাসময়ে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট