সাজেদুর রহমানঃ
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল ও ভারতের পেট্রোপোল স্থল বন্দরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাসিক বাণিজ্য বৈঠক দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। গত বছর ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত বৈদেশিক বানিজ্যে বিরাজমান সমস্যা সমাধান কল্পে বৈঠক হচ্ছে না। এতে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনায় নানান সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। যে কারণে চলমান সংকট নিরাসনে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহল জানিয়েছেন স্থল পথে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থাকে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরের মাধ্যমে। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন কাঁচা মালামাল,ঔষধ শিল্পের কাঁচামাল শিশু খাদ্য মেশিনারী পার্টস কসমেটিক্স প্রভৃতি। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাটের তৈরি বিভিন্ন পণ্য প্লাস্টিক পণ্য কেমিক্যাল এবং মাছ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাণিজ্য জটিলতা সমাধানে ২০১৬ সালে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে মাসিক বৈঠক রীতি চালু হয়। বেনপোল পেট্রাপোল সীমান্তের শূন্যরেখায় কাস্টমস বন্দর কর্তৃপক্ষ, আমদানি-রপ্তানি সংগঠন সিএন্ডএফ প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে প্রতিমাসে বৈঠক করতেন। এতে অনেক সমস্যা সমাধান হতো।
গত বছর ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতপের পর বাংলাদেশে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় এদেশের প্রতি ভারতের হিংসাত্বক রাজনীতি শুরু হওয়ায় বৈদেশিক বানিজ্যে ধস নেমে এসেছে। বেনাপোল বন্দরে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বর্তমানে বাণিজ্য অর্ধেক কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মহল।
বেনাপোল আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের জটিলতা নিরাসনে বৈঠক দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ থাকায় সংকট দিন দিন বাড়ছে দ্রুত বৈঠক চালু করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ভারত ল্যান্ড পোর্ট চেম্বার অফ কমার্স এর পরিচালক আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়। এই বিশাল বাণিজ্য সচল রাখতে মাসিক বৈঠক চালু রাখা জরুরী।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, বৈদেশিক বানিজ্য গতিশীল করতে আগে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে মাসিক বৈঠক হতো নোম্যান্সল্যান্ডে। বর্তমানে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানীতে একের পর এক সমস্যা দেখা দিলেও বৈঠকে বসার পরিবেশ হচ্ছে না।
বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন বলেন, আগে দুই দেশের মধ্যে শূন্য রেখায় বৈঠক হতো এখন কোন সমস্যা হলে ফোনে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের নির্দেশ পেলে পূর্বের ন্যায় বৈঠক আয়োজনের জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
প্রিন্ট