ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নলছিটিতে নিষিদ্ধ পলিথিনের অবাধ ব্যবহার

ঝালকাঠির নলছিটিতে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। সরকারিভাবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ব্যপকহারে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে যাচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারের দোকানীরা ২০টাকার পন্য ক্রয় করলেও ক্রেতাকে ধরিয়ে দিচ্ছেন  একটি পলিথিনের ব্যাগ। পরিবেশের জন্য মারাত্বক হুমকির এই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ শহরের পয়ঃনিস্কাষনে বাধার সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতাসহ নানান সমস্যার সৃষ্টি করছে। বাজারে যাওয়ার সময় নিজের ঘর থেকে পাট কিংবা কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার কথা ভুলেই গেছে দেশের মানুষ। এখন বাজারের ব্যাগ মানেই পলিথিন। নিত্যপণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে পলিথিনের বাইরে যেন আর কিছুই ভাবছে না জনগণ। ক্ষতিকর মেনেই পলিব্যাগ ব্যবহার করছেন ক্রেতারা এতে প্রতিদিন বাড়ছে এই নিষিদ্ধ বস্তুর ব্যবহার। ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।
মাটিতে না পচাঁয় কৃষি জমির উৎপাদন কমে যায় তাই সরকার ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন, বিপপন, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করে আইন করে। নলছিটির মাছবাজার,সবজিবাজার, ফলের দোকান,মুদি দোকান এমনকি ফার্মেসী থেকে শুরু করে প্রতিটা দোকানে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিনের ব্যাগ। কোন ধরনের রাগডাক ছাড়াই ব্যবহার হচ্ছে  পলিথিনের বিভিন্ন সাইজের ব্যাগ এটা যে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ তা কেউ আমলেই নিচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা তাইফুর রহমান জানান, পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাওয়ার কারণ হলো পাশেই যে ড্রেনেজ সিষ্টেম রয়েছে তার ভিতর পলিথিনের বিভিন্ন আকারের ব্যাগ আটকে আছে যার কারনে পানি ড্রেনে হচ্ছে না। পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত। এতে পরিবেশও ভালো থাকবে আমরাও ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবো।
ব্যবসায়ী নুর ইসলাম জানান,ক্রেতা সাথে করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে না আসায় আমাদেরকেই ব্যাগ দিতে হয় এক্ষেত্রে দামে সস্তা হওয়ায় পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করি। প্রতিদিন শতশত ক্রেতা আসেন যাদের বেশিরভাগ ব্যাগ ছাড়াই আসেন তাই ব্যয়ের কথা চিন্তা করে তাদের অন্য কোন ব্যাগ দেয়া যায় না। তবে এটা সত্য যে পলি দিয়ে তৈরি যে কোন পন্যই পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর তা হয়তো অনেকেই জানে। জেনেশুনেই দোকানদার দিচ্ছে আর ক্রেতাও কোন কিছু ক্রয় করে সেই ব্যাগেই নিয়ে যাচ্ছেন। এর বিকল্প পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা যায় তবে পলিথিন ব্যাগ যতটা সহজলভ্য পাটের ব্যাগ ততটা সহজলভ্য নয় আবার দামেও একটু বেশি । তাই কেউ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
বিডি ক্লিন সদস্য নাঈম মল্লিক বলেন, আমরা বিডি ক্লিন সদস্যরা পরিস্কার করার উদ্দেশ্যে কোথাও গেলে সেখানে অধিকাংশ পাওয়া যায় পরিত্যক্ত পলিথিন ব্যাগ যা সহজে পঁচে মাটিতে মিশে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নাই। এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে আমাদের নগর জীবনে ও কৃষিখাতে।  পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার পরও কারা কালোবাজারে এই ব্যাগ উৎপাদন ও বিপপন করছে তা সরকারের আরও কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। তূনমুল পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে এর ব্যবহারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। পলিথিন ব্যাগের ব্যবহারের পরিবেশের যে ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে আরও প্রচারণা করতে হবে পাশাপাশি পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহারের সুবিধাসমূহের প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো.নজরুল ইসলাম বলেন, পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহারে সাধারনকে নিরুৎসাহিত করতে প্রচারণা বৃদ্ধি করা হবে। আর যারা পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও বিপপনের সাথে জরিত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

নলছিটিতে নিষিদ্ধ পলিথিনের অবাধ ব্যবহার

আপডেট টাইম : ১২:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩
মোঃ আমিন হোসেন, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি :
ঝালকাঠির নলছিটিতে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। সরকারিভাবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ব্যপকহারে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে যাচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারের দোকানীরা ২০টাকার পন্য ক্রয় করলেও ক্রেতাকে ধরিয়ে দিচ্ছেন  একটি পলিথিনের ব্যাগ। পরিবেশের জন্য মারাত্বক হুমকির এই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ শহরের পয়ঃনিস্কাষনে বাধার সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতাসহ নানান সমস্যার সৃষ্টি করছে। বাজারে যাওয়ার সময় নিজের ঘর থেকে পাট কিংবা কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার কথা ভুলেই গেছে দেশের মানুষ। এখন বাজারের ব্যাগ মানেই পলিথিন। নিত্যপণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে পলিথিনের বাইরে যেন আর কিছুই ভাবছে না জনগণ। ক্ষতিকর মেনেই পলিব্যাগ ব্যবহার করছেন ক্রেতারা এতে প্রতিদিন বাড়ছে এই নিষিদ্ধ বস্তুর ব্যবহার। ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।
মাটিতে না পচাঁয় কৃষি জমির উৎপাদন কমে যায় তাই সরকার ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন, বিপপন, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করে আইন করে। নলছিটির মাছবাজার,সবজিবাজার, ফলের দোকান,মুদি দোকান এমনকি ফার্মেসী থেকে শুরু করে প্রতিটা দোকানে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিনের ব্যাগ। কোন ধরনের রাগডাক ছাড়াই ব্যবহার হচ্ছে  পলিথিনের বিভিন্ন সাইজের ব্যাগ এটা যে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ তা কেউ আমলেই নিচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা তাইফুর রহমান জানান, পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাওয়ার কারণ হলো পাশেই যে ড্রেনেজ সিষ্টেম রয়েছে তার ভিতর পলিথিনের বিভিন্ন আকারের ব্যাগ আটকে আছে যার কারনে পানি ড্রেনে হচ্ছে না। পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত। এতে পরিবেশও ভালো থাকবে আমরাও ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবো।
ব্যবসায়ী নুর ইসলাম জানান,ক্রেতা সাথে করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে না আসায় আমাদেরকেই ব্যাগ দিতে হয় এক্ষেত্রে দামে সস্তা হওয়ায় পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করি। প্রতিদিন শতশত ক্রেতা আসেন যাদের বেশিরভাগ ব্যাগ ছাড়াই আসেন তাই ব্যয়ের কথা চিন্তা করে তাদের অন্য কোন ব্যাগ দেয়া যায় না। তবে এটা সত্য যে পলি দিয়ে তৈরি যে কোন পন্যই পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর তা হয়তো অনেকেই জানে। জেনেশুনেই দোকানদার দিচ্ছে আর ক্রেতাও কোন কিছু ক্রয় করে সেই ব্যাগেই নিয়ে যাচ্ছেন। এর বিকল্প পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা যায় তবে পলিথিন ব্যাগ যতটা সহজলভ্য পাটের ব্যাগ ততটা সহজলভ্য নয় আবার দামেও একটু বেশি । তাই কেউ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
বিডি ক্লিন সদস্য নাঈম মল্লিক বলেন, আমরা বিডি ক্লিন সদস্যরা পরিস্কার করার উদ্দেশ্যে কোথাও গেলে সেখানে অধিকাংশ পাওয়া যায় পরিত্যক্ত পলিথিন ব্যাগ যা সহজে পঁচে মাটিতে মিশে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নাই। এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে আমাদের নগর জীবনে ও কৃষিখাতে।  পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার পরও কারা কালোবাজারে এই ব্যাগ উৎপাদন ও বিপপন করছে তা সরকারের আরও কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। তূনমুল পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে এর ব্যবহারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। পলিথিন ব্যাগের ব্যবহারের পরিবেশের যে ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে আরও প্রচারণা করতে হবে পাশাপাশি পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহারের সুবিধাসমূহের প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো.নজরুল ইসলাম বলেন, পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহারে সাধারনকে নিরুৎসাহিত করতে প্রচারণা বৃদ্ধি করা হবে। আর যারা পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও বিপপনের সাথে জরিত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট