গোপালগঞ্জে আলমগীর হোসেন নামের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় উন্নয়নের বরাদ্দ আত্মসাত ও বিভিন্ন অনিয়ম করার অভিযোগ উঠেছে। আর এসকল অনৈতিক কাজে প্রধান শিক্ষকে সহযোগিতা করছেন ওই ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার (এটিও) সুব্রত কুমার সাহা। উপজেলা শিক্ষা অফিস ও স্কুলের গোপন সূত্রে জানা গেছে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজকে সমর্থন করছেন এটিও সুব্রত।
আলমগীর হোসেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২০নং গোবরা ইউনিয় পরিষদের ১১৮ নং গিরিশনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে দাপটের সাথে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান শিক্ষকের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিচার চেয়ে ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি শওকত শিকদার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী (টুটুল), ইউপি সদস্য মন্টু শেখ সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে আলমগীর হোসেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের মতামতের তোয়াক্কা না করে নিজের ক্ষমতা খাটিয়ে ইচ্ছা স্বাধীন ভাবে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। বিগত তিন অর্থ বছরের স্লিপের বরাদ্দকৃত ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০২২ সালে নির্বাচনের নামে নমিনেশ পেপার বিক্রয় করে অভিবাবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন না করে দফায় দফায় এডহক কমিটি গঠন করেছেন। পাশাপাশি বিদ্যালয়টিতে একনায়কতন্ত্র চালানোর উদ্দেশ্যে কৌশল করে এডহক কমিটিতে দাতা সদস্যের নাম বাদ দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করে অধিকাংশ সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুকে মগ্ন থাকেন।
স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে করেন না কোন সমন্নয় মিটিং। অভিযোগ পত্রটিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষা দানের পরিবেশ সম্পুন্ন রুপে নষ্ট করে ফেলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এসকল অভিযোগের সত্যতা জানতে সরজমিনে বিদ্যালয় টি তে গিয়ে দেখা যায় শুধু নুতন একটি ভবন দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়ের ভিতরে সম্পুর্ন অগোছালো, শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্যানের ব্যবস্থা নেই। নেই অনার বোড, ডিসপ্লে বোর্ড ও বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন। দেখা যায়নি কোন আলমারি সহ পুরাতন কোন আসবাবপত্র। কোথায় গিয়েছে সরকারি এই সম্পদ?
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, স্লিপের কিছু টাকা দিয়ে স্কুলের কেনাকাটা করেছি, বাকী টাকা এটিও স্যারের কাছে গচ্ছিত আছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের স্কুলের কিছু পুরাতন মালামাল নুতন ভবন তৈরি কালীন সময়ে চুরি হয়ে গেছে তাই আপনারা পুরাতন আসবাবপত্র দেখতে পাননি।
এটিও সুব্রত কুমার সাহা বলেন, আমি কেন টাকা রাখতে যাবো, এটি আমার কাজ নয়। ওই শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে আমাকে ব্যবহার করছে। আমার জানামতে টাকা গুলো ব্যাংকে আছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র হালদার জানান, এবিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছি।প্রধান শিক্ষক অনিয়ম করে থাকলে তদন্ত পূর্বক সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট