সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের দর্পণ।সমাজের অনিয়ম, দুর্নীতি নানা অসঙ্গতির সংবাদ প্রকাশ করাই সাংবাদিকদের কাজ। সাংবাদিকরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু শিবপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা কি আইনের উর্ধ্বে। তা না হলে তারা আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে কিভাবে নির্বাচন করে। নরসিংদী বিজ্ঞ শিবপুর সহকারি জজ আদালত প্রেসক্লাবের নির্বাচনের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
কিন্তু সেগুলির কোন তোয়াক্কা না করে একতরফা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছেন শিবপুরের কিছু সাংবাদিক। নরসিংদীর সর্বত্র আলোচনা এবং সমালোচনার জন্ম দিয়েছে অবৈধ এই নির্বাচন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মো: করিম খন্দকার এবং মো:মাসুম নামের দুজন সাংবাদিক মোহাম্মদ কামাল হোসেন প্রধান (আহবায়ক), এসএম খোরশেদ আলম (সাবেক সভাপতি), এস এম আরিফুল হাসান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), মোঃ আজমল হোসেন ভূইয়া (সাবেক কোষাধক্ষ) চারজনকে আসামি করে নরসিংদী বিজ্ঞ শিবপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। দেওয়ানি মোকাদ্দমা নং ৯৯/ ২০২৩।
শিবপুর প্রেসক্লাব ২০০৫ সালে গঠন করা হয় এবং তার বর্তমান কার্যালয় শিবপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত। ২০১৭ সালে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হলেও এখনও বিভিন্ন অসঙ্গতি রয়েছে। প্রেসক্লাবের সদস্যদের মাসিক 50 টাকা চাঁদা ভারা বাবদ প্রদান করলেও দীর্ঘ ৭৭ মাস ধরে এক লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার উপরে ভাড়া বকেয়া।
তাছাড়া সাবেক সভাপতি এস এম খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আরিফুল হাসান ও তাদের দলীয় কিছু লোকজন নিয়ে ন্যায় নীতির বহির্ভূত কর্মকান্ড করে , যা সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত মানহানি কর এবং লজ্জাকর। তাদের কর্মকান্ডে বিরক্ত হয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকার কিছু মানুষ অভিযোগ দায়ের করেন। ২০২১- ২৩ সালের আয় এবং ব্যয়ের সঠিক হিসাব দিতে তারা ব্যর্থ হয়। তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী টাকা উত্তোলন করে সেই টাকা আত্মসাৎ করে দেউলিয়ার পথে নিয়ে গেছে শিবপুর প্রেসক্লাবকে। তাদের মধ্যে একজন গোপনে এসএম আরিফুল হাসান নরসিংদী প্রেসক্লাবের সদস্য পদ গ্রহণ করে।
কোন ধরনের আত্ম-পক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বাদীগণকে প্রেসক্লাব থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। যা তাদের মন গড়া ইচ্ছা অনুযায়ী। এই ধরনের বিভিন্ন অসংগতি তারা মামলায় উল্লেখ করেন।
তাদের এসব বিষয় আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত চলতি মাসের ১২ তারিখ শিবপুর প্রেসক্লাবের নির্বাচনের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এবং আগামী ৩০ অক্টোবর মামলার শুনানির দিন ধার্য করে।
কিন্তু এসবের কোন তুয়াক্কা করেনি শিবপুর প্রেসক্লাবের কিছু সাংবাদিক। তারা ১৪ অক্টোবর একতরফা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন করে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সেই নির্বাচনের সভাপতি হন সাবেক সভাপতি এস এম খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক হন আব্দুর রব শেখ মানিক।
এসব বিষয় নিয়ে মোবাইলে কথা হয় মোহাম্মদ কামাল হোসেন প্রধান আহবায়কের সাথে। তিনি নিষেধাজ্ঞার কথা স্বীকার করে বলেন, সবার জন্য যেটি ভালো হয় আমি তার পক্ষে। বর্তমানে যে নির্বাচন হয়েছে আমি তাতে ছিলাম না।
অবৈধ এবং হাস্যকর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বইছে। অন্যদিকে সাংবাদিকদের মধ্যে চলছে তীব্র ক্ষোভ। যেকোনো সময় এখানে গঠতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
তাই বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
প্রিন্ট