কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় গত মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। অনুক‚ল আবহাওয়া সেই সঙ্গে কৃষি প্রণোদনা পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ভেড়ামারা উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অফিস বন্ধ থাকায় কৃষকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভেড়ামারায় পাট চাষে সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা।
গতবার পাটের ফলন যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি কৃষকরা দামও ভালো পেয়েছেন। ফলে চাষিরা বেশ লাভবান হয়েছেন। এবারও তারা লাভের আশা করছেন। কারণ, সরকার ধান, চাল, গম, ভুট্টা, চিনি ও সার ছয়টি পণ্য মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এখন পাটজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর ভেড়ামারা উপজেলায় ৪ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। সরকার এবারও চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্য দামে পাট কিনবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষকরা।
বাজারে ভালো দাম, অনুক‚ল আবহাওয়া এবং সময়মতো কৃষি প্রণোদনা পাওয়ায় কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে মন্তব্য করে কৃষকরা । উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, বীজ বিতরণ ও সার বিনা মূল্যে দিয়েছে। গত বছর কৃষকরা প্রতি মণ পাটে ৩ থেকে প্রায় ৫ হাজার টাকা দাম পেয়েছেন। প্রতি বিঘায় বীজ বপন থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘায় প্রায় ১০-১২ মণ পাটের ফলন পাওয়া যায়।
কৃষক সালাম হোসেন জানান, চৈত্রের শেষ ভাগে পাটের মৌসুম শুরু হয়। বৈশাখে পুরোদমে এর আবাদ হয়। পাট কাটা হয় আষাঢ় ও শ্রাবণে। এ সময় বৃষ্টি বেশি হলে সহজে জাগ দিতে পারেন চাষিরা। এতে ভালো পাট পাওয়া যায়। তবে কোনো কারণে পানির অভাব দেখা দিলে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পাট চাষি মনোয়ার হোসেন বলেন বলেন, চলতি বছর ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। তবে দাম নিয়ে কিছুটা চিন্তিত আছি। ভেড়ামারা উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অফিস বন্ধ থাকায় কৃষকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অফিসে তালাবন্ধ অবস্থায় দেখা গেছে।
পাট চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাট গাছের বয়স ২ মাস পূর্ণ হয়েছে। গাছ ও পাতা অনেক ভালো আছে। এবারও ভালো ফলন পাব।
ভেড়ামারা উপজেলার কৃষি অফিসার শায়খুল ইসলাম বলেন, এ বছর ভেড়ামারা উপজেলায় ৪ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। সরকার ধান, চাল, গম, ভুট্টা, চিনি ও সার ছয়টি পণ্য মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এখন পাটজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৃষক যেন ভালো দাম পান, এ জন্য সরকার বিদেশে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং পাটের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য নতুন আইন করেছে।
প্রিন্ট