প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা এনেছে, এ দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দেশবাসীর জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তাই আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকাকে ভোট দিন।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলে যায়। এ সময়ে তিনি গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজের মা-বাবা ও ভাই হারিয়েছি। আপনারাই (কোটালীপাড়ার মানুষ) আমার আপনজন। আপনারা সব সময়ই আমার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট ও সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত এবং দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দান করাই তাঁর চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোর উন্নয়ন। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, জাতি যথাযথ সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বদরবারে এগিয়ে যাবে।
আমরা এই লক্ষ্য পূরণে কাজ করতে চাই।’আওয়ামী লীগ সরকারের করা উন্নয়ন যারা দেখতে পায় না, তাদের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু লোক অভিযোগ করেই যাচ্ছে, যা বলার অধিকার তাদের নেই। তবু তারা তা করছে, কারণ তারা নির্বিবাদে কথা বলতে পারছে। তারা এই উন্নয়নের সুফল কিন্তু ঠিকই ভোগ করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাদের করুণা করা ছাড়া আমার কিছু করার নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটালীপাড়ার মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য তাঁরা রাস্তাঘাট, সেতু ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। মানুষ কোটালীপাড়ায় আসার ক্ষেত্রে আগে যে কষ্ট পেত, যোগাযোগের উন্নয়নের ফলে এখন আর তাদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি ও বিদেশিদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা তাঁর সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা এবং আপনারা আমাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়, বরং জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্য ক্ষমতায় এসেছি।’ দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা চরম দারিদ্র্য কমিয়ে এখন ৫ শতাংশে নিয়ে এসেছেন। তাঁর পিতা সাধারণ লোকদের বিনা মূল্যে বাড়ি দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশের প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন লোককে বাড়ি দিচ্ছে, ফলে এ দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর দুই দিনের সফরের অংশ হিসেবে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিন ঘণ্টার সড়কপথে গাড়িতে পদ্মা সেতু পার হয়ে সকাল ১১টা ২৭ মিনিটে কোটালীপাড়ায় পৌঁছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে গোটা গোপালগঞ্জ উৎসবের আমেজে বর্ণিল পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সেজেছে এবং জেলাজুড়ে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ।
প্রিন্ট