মামলাবাজ চামেলী বিরুদ্ধে সাবেক প্রবাসী পরিবারকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৩ নং শুকতাইল ইউনিয়নের মোল্লা পাড়া গ্ৰামে। চামেলী বেগম ওই গ্ৰামের ইয়াহিয়া মোল্লার স্ত্রী ও একই ইউনিয়নের খাঁ পাড়া গ্ৰামের লুৎফর মোল্লার মেয়ে। চামেলীর স্বামী ইয়াহিয়া মোল্লা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) তে মেকানিক্যাল পদে চাকুরী করে। চামেলীর স্বামী ইয়াহিয়া মোল্লা ও প্রভাবশালী আত্মীয়দের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর এমন দমনপীড়ন করে আসছে বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে।
এলাকার নিরপক্ষ একটি সূত্র জানায়, ইয়াহিয়া মোল্লা ও হিরু মোল্লা আপন ভাই, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য, এলাকাবাসী সাথে কথা বলে জানাযায়, গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বার প্রভাবশালী চামেলী তার স্বামী (বিজিবি) সদস্য ইয়াহিয়া মোল্লা নির্দেশে শুকতাইল ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্ৰামের মৃত আলতাব হোসেন মোল্লার ছেলে হিরু মোল্লার ৯ নং শুকতাইল মৌজার ৩২৬ নং এস এ দাগের রেকর্ডীয় ভূমির অংশ জবরদখল করে সেফটি ট্যাংকি নির্মান শুরু করে। এসময় হিরু মোল্লার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাঁধা দেয়, পরবর্তিতে চামেলি বেগম ক্ষিপ্তহয়ে তার বাবার বাড়ীর পোষা লাঠিয়াল বাহিনী ডেকে এনে ফাতেমা বেগম ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করে।
পরে ফাতেমা বেগম বাধ্য হয়ে পুলিশের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দেয়।
এসময় গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আবু হাসান ও এ এস আই ওহেদুজ্জামান ঘটনা স্থলে আসে এবং নিরেপেক্ষ ভুমিকা পালন করে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তিতে পুলিশ অফিসারদের কাছে অগ্যাত ফোন আসে, এরপর পুলিশ অফিসার দুজন চামেলী বেগমের ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। ঘরথেকে বেরিয়ে নিরেপেক্ষ ভুমিকা রাখা পুলিশ অফিসারদের আচরন পরিবর্তন হয়।
এসময় পুলিশ অফিসারগণ দুই পক্ষকে মিটিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ধমকের সুরে ফাতেমা বেগম ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়িতে যেতে বলে। পরবর্তিতে দুপুরে হিরু মোল্লা, স্ত্রী ফাতেমা বেগম, ছেলে বাইজির মোল্লা গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়িতে গেলে ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন অকাত্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হিরু মোল্লা ও তার ছেলে বাইজিদ মোল্লাকে লকাবে আটকে রাখে।
পরবর্তিতে গোপালগঞ্জ সদর থানার মাধ্যমে চামেলী বেগমকে বাদী বানিয়ে হিরু মোল্লা, ফাতেমা বেগম, বাইজির মোল্লা, ফোরকান মোল্লা, হেদায়েত মোল্লা, হিরা বেগম সহ অগ্যত ৪/৫ জনকে আসামি দেখিয়ে ১৪৩,৪৪৭,৩২৩,৩২৫,৩০৭,৩০৯,৪২৭ ও ১১৪ ধারায় মামলা দায়ের করে আটক দুজনকে আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, চামেলী বেগম একজন মামলা বাজ মহিলা, সে আমাদের পরিবারের সদস্য ও এলাকার সাধারণ মানুষের নামে একাধিক মিথ্যা ও হয়রানি মূলক দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তার জন্য ৯৯৯ এ ফোন করে ছিলাম, পুলিশ আমাদের আস্থা ভেঙে দিয়েছে। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ফোন ও ঘুষের বিনিময়ে আমাদের পরিবারের ওপর অন্যায় করেছে। স্থানীয় পুলিশের উপর আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। আপনাদের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ উদ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিযুক্ত চামেলী বেগম দাবি করে বলেন, আমার স্বামীর রেকর্ডীয় জায়গায় মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করছিলাম হিরু মোল্লার পরিবার শত্রুতা করে বাধা দিয়েছে, আমি আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের নামে মামলা করেছি।
এঘটনায় এলাকাজুড়ে গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ি ও চামেলী বেগমকে নিয়ে ব্যপক আলোচনা- সমালোচনা শুরু হয়েছে। গ্ৰামের সচেতন ও সাধারণ মানুষ পুলিশ অফিসারদের এমন অপেশাদার ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছেন।
৯৯৯ এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া এস আই আবু হাসান ও এ এস আই ওহেদুজ্জামান তদন্তের সময় নিরেপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন বলে দাবি করেন।
এবিষয়ে গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন গালিগালাজ করার কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ৯৯৯ যারা ফোন করেছিলেন তারাই পুলিশের উপস্থিতিতে চামেলী বেগমের ওপর হামলা করলে আমাদের অফিসার তাদের আটক করেছে।
প্রিন্ট