ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন ২৬ ডিসেম্বর। এদিকে প্রতীক বরাদ্দের আগে তা প্রদর্শন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে। ইউপি নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও কেউ নিয়ম মানছেন না।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৬ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৭ ডিসেম্বর।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুল ওহাব মোল্লার সমর্থক ‘সজিব মুন’ ও ‘সাইদুর রহমান সোহেল’ নামক পৃথক দুটি ফেসবুক আইডি থেকে তাঁর পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়ে একটি পোস্টার পোস্ট দেওয়া হয়। গত ২৯ নভেম্বর ওই দুটি আইডি থেকে পোস্টটি দেওয়া হয়। ময়না ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী পলাশ বিশ্বাস এবং ও গুণবহা ইউনিয়নের মো. কামরুল ইসলাম নিজ নিজ ফেসবুক আইডি থেকে ছবি ও নৌকা প্রতীক যুক্ত করে পোস্টার পোস্ট করেন। রূপাপাত ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মো. মহব্বত আলীর পক্ষে তাঁর সমর্থক এএস রুবেল সিকদার ১ ডিসেম্বর এবং পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের মো. সোলায়মান মোল্লার পক্ষে ২ ডিসেম্বর তাঁর সমর্থক সৈয়দ তারেক মো. আব্দুল্লাহ ভোট চেয়ে একই পোস্ট দেন।
ইউপি নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ৫ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘কোনো প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করিতে পারিবেন না’। আর বিধিমালার ৩১ নম্বর ধারার ১ ও ২ উপধারায় বিধান লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের কথা উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবিএম আজমল হোসেন জানান, নির্বাচনে নানা ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কাছে জবাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ‘বিনয়ের সঙ্গে’ চিঠির জবাব দেন আবার গিয়ে পুনরায় বিধি লঙ্ঘন করেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে ফেসবুকে পোস্টার প্রদর্শনে বিধি ভঙ্গ হলেও বিষয়টি নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন, ‘সজিব আমার সমর্থক হলেও সে ‘ছেলে মানুষ’। তাই হয়তো ভুল করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে।’ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখনই পোস্টটি মুছে (ডিলিট) দিচ্ছি।’ মো. মহব্বত আলীর দাবি, তাঁর সমর্থক যুবলীগের এক নেতা তাঁকে ‘ভালোবেসে’ পোস্টটি দিয়েছেন। তবে এটি বিধি লঙ্ঘন বলে তিনি স্বীকার করেন। মো. সোলায়মান মোল্লার নামে পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অন্য প্রার্থী পলাশ বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রিন্ট