ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন Logo মুকসুদপুরে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মিয়া আটক Logo “এখনো গুলির শব্দ কানে বাজে” – শাহদৌলা সরকারি কলেজ কর্তৃক স্মরণ সভায় গুলি বিদ্ধ রনি আহমেদ Logo লালপুরে রেললাইনে ফাটল, ট্রেন চলাচলে ধীরগতি Logo লালপুরে পদ্মা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান Logo আমতলীতে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ Logo বাবাকে তালাবদ্ধ করে রাখলেন মেয়েরা, উদ্ধারের পর ইউএনওের তৎপরতা Logo দুর্ঘটনার কবলে হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহর: মধ্যরাতে ইবিতে বিক্ষোভ Logo ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ঘোষণা, ১৪৪ ধারা জারি Logo ৪ মাসে ৩ শতাধিক আন্দোলন, দাবি আদায়ে এ কী কৌশল!
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

“এখনো গুলির শব্দ কানে বাজে” – শাহদৌলা সরকারি কলেজ কর্তৃক স্মরণ সভায় গুলি বিদ্ধ রনি আহমেদ

রাজশাহীর বাঘায় শাহদৌলা সরকারি কলেজে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে একটি স্মরণ সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর ২০২৪) কলেজ প্রাঙ্গণে প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিয়ার সঞ্চালনায় এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম।

 

স্বাগত বক্তব্যে, নতুন স্বপ্নে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিষয়াদি তুলে ধরে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার হোক আমাদের সকলের। বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে শহিদ এবং আহতদেরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকলের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

 

স্মরণ সভায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রনি আহমেদ (৩০) তার বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং নির্বিচারে গুলি করার দৃশ্য দেখে আমার মনের টানে আন্দোলনে যোগ দিই। আমি নিজে অন্তত ৩ হাজার গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখেছি এবং ৭ জনের লাশ নিজ হাতে বের করেছি।”

 

রনি আহমেদ আরও জানান, “ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পেছন থেকে পুলিশ এবং উপরে চক্কর দেওয়া হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছি। ১৯ জুলাই ঢাকার বনশ্রী এলাকায় বেরিকেড দিয়েছিলাম। মাগরিবের আযানের সময় হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশ-বিজিবি একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সামনের ৬-৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যায়, তাদের লাশ নিতে গুলি করতে করতে ভেতরে চলে আসে পুলিশ।”

 

তিনি আরও বলেন, “বিজিবির ছোড়া গুলি আমার বাম পায়ের উরু ভেদ করে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ জায়গায় অনেক রক্তপাত হচ্ছিল, আশপাশে তেমন কেউ ছিল না। আমি ভাবছিলাম আর বাঁচব না। তখন কালেমা পড়া শুরু করি। এরপর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় আশ্রয় নেয়ার পর, প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়ে পরে হাসপাতালে ভর্তি হই।”

 

রনি আহমেদ জানান, গুলির শব্দ এখনো তার কানে বাজে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর দেশে ফিরে আসি, এবং ১০ আগস্ট থেকে বাঘা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করি।”

 

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তব্য রাখেন, প্রভাষক মাসুদ রানা, সাংবাদিক আব্দুল লতিফ মিঞা, ছাত্রদের পক্ষ থেকে মেহেদী হাসান এবং নাফিজ।

 

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ইসলাম শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মাওলানা হাবিবুর রহমান, গীতাপাঠ করেন প্রভাষক দীনেশ চন্দ্র সরকার। জাতীয় সঙ্গীতের পর শহিদ ও আহতদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে দেশাত্মবোধক গান, ইসলামী সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয় এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

 

আরও পড়ুনঃ লালপুরে রেললাইনে ফাটল, ট্রেন চলাচলে ধীরগতি

 

অনুষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় দর্শনার্থীরা এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন

error: Content is protected !!

“এখনো গুলির শব্দ কানে বাজে” – শাহদৌলা সরকারি কলেজ কর্তৃক স্মরণ সভায় গুলি বিদ্ধ রনি আহমেদ

আপডেট টাইম : ৪ ঘন্টা আগে
আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

রাজশাহীর বাঘায় শাহদৌলা সরকারি কলেজে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে একটি স্মরণ সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর ২০২৪) কলেজ প্রাঙ্গণে প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিয়ার সঞ্চালনায় এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম।

 

স্বাগত বক্তব্যে, নতুন স্বপ্নে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিষয়াদি তুলে ধরে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার হোক আমাদের সকলের। বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে শহিদ এবং আহতদেরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকলের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

 

স্মরণ সভায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রনি আহমেদ (৩০) তার বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং নির্বিচারে গুলি করার দৃশ্য দেখে আমার মনের টানে আন্দোলনে যোগ দিই। আমি নিজে অন্তত ৩ হাজার গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখেছি এবং ৭ জনের লাশ নিজ হাতে বের করেছি।”

 

রনি আহমেদ আরও জানান, “ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পেছন থেকে পুলিশ এবং উপরে চক্কর দেওয়া হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছি। ১৯ জুলাই ঢাকার বনশ্রী এলাকায় বেরিকেড দিয়েছিলাম। মাগরিবের আযানের সময় হেলিকপ্টার চক্কর দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশ-বিজিবি একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সামনের ৬-৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যায়, তাদের লাশ নিতে গুলি করতে করতে ভেতরে চলে আসে পুলিশ।”

 

তিনি আরও বলেন, “বিজিবির ছোড়া গুলি আমার বাম পায়ের উরু ভেদ করে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ জায়গায় অনেক রক্তপাত হচ্ছিল, আশপাশে তেমন কেউ ছিল না। আমি ভাবছিলাম আর বাঁচব না। তখন কালেমা পড়া শুরু করি। এরপর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় আশ্রয় নেয়ার পর, প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়ে পরে হাসপাতালে ভর্তি হই।”

 

রনি আহমেদ জানান, গুলির শব্দ এখনো তার কানে বাজে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর দেশে ফিরে আসি, এবং ১০ আগস্ট থেকে বাঘা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করি।”

 

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তব্য রাখেন, প্রভাষক মাসুদ রানা, সাংবাদিক আব্দুল লতিফ মিঞা, ছাত্রদের পক্ষ থেকে মেহেদী হাসান এবং নাফিজ।

 

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ইসলাম শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মাওলানা হাবিবুর রহমান, গীতাপাঠ করেন প্রভাষক দীনেশ চন্দ্র সরকার। জাতীয় সঙ্গীতের পর শহিদ ও আহতদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে দেশাত্মবোধক গান, ইসলামী সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয় এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

 

আরও পড়ুনঃ লালপুরে রেললাইনে ফাটল, ট্রেন চলাচলে ধীরগতি

 

অনুষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় দর্শনার্থীরা এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।


প্রিন্ট