রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউপিতে বসত বাড়িতে হামলার ঘটনায় রাজবাড়ীর বিজ্ঞ দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারায় কসবামাজাইল ইউপির ডেমনামারা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত আতাহার হোসেন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেছেন। মিসপি নং ৩/২১।
বিজ্ঞ আদালত এফআইআর হিসেবে এন্ট্রি করতে পাংশা মডেল থানার ওসি বরাবর মামলার নথি প্রেরণ করেছেন। মামলায় কসবামাজাইল ইউপির ডেমনামারা গ্রামের রাজ্জাক খান ও আনোয়ার খানসহ ২০জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বাদী আতাহার হোসেন উল্লেখ করেছেন- আসামীগণ অবৈধ পেশী শক্তি ও আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আসামীদের সাথে বাদীর গ্রাম্য দলাদলি ও ইউনিয়ন রাজনীতিতে আসামীগণের বিরোধী চেয়ারম্যান প্রার্থী রাকিবুল বিশ্বাসের সমর্থক হওয়ায় শত্রুতা ও মনোদ্বন্দ থাকায় আসামীগণ যেনতেন ভাবে বাদীকে খুন জখমসহ ক্ষতি করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত থাকে।
অতঃপর গত ২৬শে সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে আসামীগণ এলাকায় প্রাধান্য বিস্তারসহ অবৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্র যথা বন্দুক, বোমা, রামদা, হাসুয়া, হাতুড়ি, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি, ছ্যানদা, ফালা প্রভৃতিতে সজ্জিত হয়ে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে জনমনে তীব্র আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য বাদী আতাহার হোসেনের বসত বাড়ির গেটে উপস্থিত হয়ে ১নং আসামী রাজ্জাক খানের হুকুমে অবৈধ পেশী শক্তির মহড়া ও দাপট দেখিয়ে বাদীকে খুন জখম করতে আক্রমন করলে বাদীর বসতবাড়ির গেট আটকিয়ে দিয়ে বাউন্ডারির মধ্যে প্রবেশ করলে ১নং আসামী রাজ্জাক খান অবৈধ ছররা বন্দুক দিয়ে বাদীকে একাধিক গুলি করলে গেটে লেগে গেটের বিভিন্ন জায়গায় পবিত্র কাবাঘরের ছবিযুক্ত টাইলস্ ছিদ্র হয়।
২নং আসামী আনোয়ার খান তার হাতে থাকা অবৈধ ছররা বন্দুক দিয়ে বাদীকে গুলি করলে উক্ত ছররা গুলি বসতবাড়ির গেটে ও বাউন্ডারী দেয়ালের টাইলসএ লেগে ছিদ্র সৃষ্টি ও প্রচন্ড শব্দ হয়।
আসামী আলামীন, সাকিব, তরুন ও মনোয়ার তাদের হাতে থাকা দেশীয় তৈরী বোমা বাদীর বসতবাড়ির সামনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। আসামী আলাল একটি দেশীয় তৈরী বোমা নিক্ষেপ করে তিনতলা বিল্ডিং ঘরের দরজার সামনে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বসতবাড়ি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।
আসামী স্বপন, শফিক ও সেলিম শেখ তাদের হাতে থাকা রামদা, ছ্যানদা, হাসুয়া ও হাতুড়ি দিয়ে বসতবাড়ির স্টিলের গেটে হামলা করে ক্ষতিসাধন করে এবং ১নং স্বাক্ষী আমজাদ বিশ্বাস বসতবাড়ির গেট ভাঙ্গা নিষেধ করলে আসামী মনোয়ার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে সে ডান হাত দিয়ে ঠেকালে রক্তজমাট ছোলা-ফোলা রক্তাক্ত জখম হয়।
অন্যান্য আসামীরা বসতবাড়ির গেটে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে বসতবাড়ির গেট হাতুড়ি দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করে। বসতবাড়ির গেট ও বাউন্ডারী ওয়ালের আনুমানিক একলাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
আসামীগণ হৈচৈ, বাদী ও কতক স্বাক্ষীর আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগিয়ে আসলে কসবামাজাইল ক্যাম্পের পুলিশ আসছে- সংবাদ পেয়ে আসামীগণ শূন্যে গুলি ছুড়িয়ে, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে পেশী শক্তির দাপট দেখিয়ে ত্রাস, নৈরাজ্য ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঘটনার পর থেকে আতাহার হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রিন্ট