ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নড়াইলে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ, ৬ বেডের বিপরীতে ভর্তি অর্ধশতাধিক Logo মধুখালীতে নিখোঁজের দুইদিন পর ভুট্টা ক্ষেতে মিলল মাদরাসা শিক্ষকের লাশ, আটক এক Logo সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন Logo তিন দশকেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি মাধবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে Logo হাতিয়ায় আমার দেশ পত্রিকার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo নড়াইলের কালিয়ায় বাড়ির পেছনে মিললো যুবকের মরদেহ Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষাউপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে শারজায় বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত Logo মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা অস্বীকার, অসঙ্গতি আর বিচারপ্রক্রিয়ার লড়াই Logo যশোরে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সাইন্সফিকশন ছোটগল্প

পৃথিবীর শেষ অক্সিজেন!

-শামীম আহমেদ

মানুষের জীবনচক্র যেন এক বিশাল মায়াজাল। দিনের পর দিন প্রযুক্তির উৎকর্ষ, বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার—সবকিছুই যেন এক অসম্ভব গতি নিয়ে ছুটে চলেছে। কিন্তু এই আধুনিকতার মাঝে আমরা ভুলে গিয়েছিলাম, আমাদের শ্বাস নেওয়ার সেই অক্সিজেনের কথা।

সেদিন পৃথিবীর আকাশে এক অদ্ভুত রং খেলা করছিল। সূর্যের আলো যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মেঘের ওপর। হঠাৎই সেই মেঘ থেকে বেরিয়ে এলো এক রহস্যময় কণা, যা বাতাসে মিশে গেল। কেউ বুঝতেও পারল না, এই ছোট্ট কণাই পৃথিবীর জন্য মহাবিপদ ডেকে আনছে।

ধীরে ধীরে মানুষ লক্ষ্য করতে শুরু করল, বায়ুর মান বদলে যাচ্ছে। গাছপালা মরে যাচ্ছে, জলাশয়গুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর সবাই অনুভব করল, বাতাসে যেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকরা বললেন, পৃথিবীর বাতাস থেকে অক্সিজেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।

আতঙ্কিত মানুষ নেমে পড়ল সমস্যার সমাধান খুঁজতে। বিজ্ঞানীরা বহু গবেষণা করলেন, কিন্তু সমাধান যেন অধরাই রইল। একসময় মানুষ বুঝল, এই সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। তারা ধীরে ধীরে সংবেদনশীল হয়ে উঠল; প্রতিটি শ্বাস যেন তাদের কাছে নতুন করে বেঁচে থাকার আশা।

একদিন, সবাই মিলে পৃথিবীর শেষ অক্সিজেন ভর্তি মৃত বটগাছের নিচে জড়ো হল। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ল, কেউ আবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। সবাই জানত, এটাই শেষ দিন। সূর্য ডোবার আগেই পৃথিবী অক্সিজেন শূন্য হয়ে যাবে।

 

সন্ধ্যার আকাশ লালচে হয়ে উঠল, ধীরে ধীরে রাত নেমে এল। সব কিছু নিস্তব্ধ। গাছের মরা পাতা যেন শূন্যতার গান গাইছে। সেই নিস্তব্ধতার মাঝেই এক বৃদ্ধ বলল, “আমরা বেঁচে থাকার জন্য শুধু প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলাম। কিন্তু প্রকৃতির প্রতি যে দায়িত্ব ছিল, তা ভুলে গেছি।”
পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে গেল। অক্সিজেন শূন্য পৃথিবীতে শুধু পড়ে রইল মানুষদের অবহেলার স্মৃতি আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দগদগে ক্ষত…।

 

লেখকঃ শামীম আহমেদ

             – কবি, লেখক ও সাহিত্যিক


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ, ৬ বেডের বিপরীতে ভর্তি অর্ধশতাধিক

error: Content is protected !!

সাইন্সফিকশন ছোটগল্প

পৃথিবীর শেষ অক্সিজেন!

আপডেট টাইম : ১১:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
শামীম আহমেদ, কবি, লেখক ও সাহিত্যিক :

-শামীম আহমেদ

মানুষের জীবনচক্র যেন এক বিশাল মায়াজাল। দিনের পর দিন প্রযুক্তির উৎকর্ষ, বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার—সবকিছুই যেন এক অসম্ভব গতি নিয়ে ছুটে চলেছে। কিন্তু এই আধুনিকতার মাঝে আমরা ভুলে গিয়েছিলাম, আমাদের শ্বাস নেওয়ার সেই অক্সিজেনের কথা।

সেদিন পৃথিবীর আকাশে এক অদ্ভুত রং খেলা করছিল। সূর্যের আলো যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মেঘের ওপর। হঠাৎই সেই মেঘ থেকে বেরিয়ে এলো এক রহস্যময় কণা, যা বাতাসে মিশে গেল। কেউ বুঝতেও পারল না, এই ছোট্ট কণাই পৃথিবীর জন্য মহাবিপদ ডেকে আনছে।

ধীরে ধীরে মানুষ লক্ষ্য করতে শুরু করল, বায়ুর মান বদলে যাচ্ছে। গাছপালা মরে যাচ্ছে, জলাশয়গুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর সবাই অনুভব করল, বাতাসে যেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকরা বললেন, পৃথিবীর বাতাস থেকে অক্সিজেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।

আতঙ্কিত মানুষ নেমে পড়ল সমস্যার সমাধান খুঁজতে। বিজ্ঞানীরা বহু গবেষণা করলেন, কিন্তু সমাধান যেন অধরাই রইল। একসময় মানুষ বুঝল, এই সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। তারা ধীরে ধীরে সংবেদনশীল হয়ে উঠল; প্রতিটি শ্বাস যেন তাদের কাছে নতুন করে বেঁচে থাকার আশা।

একদিন, সবাই মিলে পৃথিবীর শেষ অক্সিজেন ভর্তি মৃত বটগাছের নিচে জড়ো হল। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ল, কেউ আবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। সবাই জানত, এটাই শেষ দিন। সূর্য ডোবার আগেই পৃথিবী অক্সিজেন শূন্য হয়ে যাবে।

 

সন্ধ্যার আকাশ লালচে হয়ে উঠল, ধীরে ধীরে রাত নেমে এল। সব কিছু নিস্তব্ধ। গাছের মরা পাতা যেন শূন্যতার গান গাইছে। সেই নিস্তব্ধতার মাঝেই এক বৃদ্ধ বলল, “আমরা বেঁচে থাকার জন্য শুধু প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলাম। কিন্তু প্রকৃতির প্রতি যে দায়িত্ব ছিল, তা ভুলে গেছি।”
পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে গেল। অক্সিজেন শূন্য পৃথিবীতে শুধু পড়ে রইল মানুষদের অবহেলার স্মৃতি আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দগদগে ক্ষত…।

 

লেখকঃ শামীম আহমেদ

             – কবি, লেখক ও সাহিত্যিক


প্রিন্ট