-শামীম আহমেদ
মানুষের জীবনচক্র যেন এক বিশাল মায়াজাল। দিনের পর দিন প্রযুক্তির উৎকর্ষ, বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার—সবকিছুই যেন এক অসম্ভব গতি নিয়ে ছুটে চলেছে। কিন্তু এই আধুনিকতার মাঝে আমরা ভুলে গিয়েছিলাম, আমাদের শ্বাস নেওয়ার সেই অক্সিজেনের কথা।
সেদিন পৃথিবীর আকাশে এক অদ্ভুত রং খেলা করছিল। সূর্যের আলো যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মেঘের ওপর। হঠাৎই সেই মেঘ থেকে বেরিয়ে এলো এক রহস্যময় কণা, যা বাতাসে মিশে গেল। কেউ বুঝতেও পারল না, এই ছোট্ট কণাই পৃথিবীর জন্য মহাবিপদ ডেকে আনছে।
ধীরে ধীরে মানুষ লক্ষ্য করতে শুরু করল, বায়ুর মান বদলে যাচ্ছে। গাছপালা মরে যাচ্ছে, জলাশয়গুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর সবাই অনুভব করল, বাতাসে যেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকরা বললেন, পৃথিবীর বাতাস থেকে অক্সিজেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।
আতঙ্কিত মানুষ নেমে পড়ল সমস্যার সমাধান খুঁজতে। বিজ্ঞানীরা বহু গবেষণা করলেন, কিন্তু সমাধান যেন অধরাই রইল। একসময় মানুষ বুঝল, এই সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। তারা ধীরে ধীরে সংবেদনশীল হয়ে উঠল; প্রতিটি শ্বাস যেন তাদের কাছে নতুন করে বেঁচে থাকার আশা।
একদিন, সবাই মিলে পৃথিবীর শেষ অক্সিজেন ভর্তি মৃত বটগাছের নিচে জড়ো হল। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ল, কেউ আবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। সবাই জানত, এটাই শেষ দিন। সূর্য ডোবার আগেই পৃথিবী অক্সিজেন শূন্য হয়ে যাবে।
সন্ধ্যার আকাশ লালচে হয়ে উঠল, ধীরে ধীরে রাত নেমে এল। সব কিছু নিস্তব্ধ। গাছের মরা পাতা যেন শূন্যতার গান গাইছে। সেই নিস্তব্ধতার মাঝেই এক বৃদ্ধ বলল, "আমরা বেঁচে থাকার জন্য শুধু প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলাম। কিন্তু প্রকৃতির প্রতি যে দায়িত্ব ছিল, তা ভুলে গেছি।"
পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে গেল। অক্সিজেন শূন্য পৃথিবীতে শুধু পড়ে রইল মানুষদের অবহেলার স্মৃতি আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দগদগে ক্ষত…।
লেখকঃ শামীম আহমেদ
- কবি, লেখক ও সাহিত্যিক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha