ঢাকা , সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মুকসুদপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো সাব্বির খাঁন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির খান গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত এলাকায় ছিলো মূর্তিমান আতঙ্ক। আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনামলে গোপালগঞ্জ ১ আসনের এমপি মুহাম্মাদ ফারুক খানের ভাই হওয়ায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মুকসুদপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এখন মুকসুদপুরের মানুষের মুখে মুখে ফিরছে পলাতক সাব্বিরের অপরাধের কাহিনী।

সর্বশেষ ২০২৩-২৪ সালে উপজেলার দিসতাইল গ্রামে হত্যাকান্ড ও বাড়িঘর লুট ভাংচুরের নেতৃত্ব দেন সাব্বির খান। সাব্বির খান এলাকা ছাড়লেও তার ভয়াল স্মৃতি এখনো মুকসুদপুরের মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায়। সরেজমিন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান সাব্বির খান
তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বেজড়া ভাটরা গ্রামের সিদ্দিক খানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাব্বির খান হয়ে উঠেন এলাকায় ক্ষমতাসীন রাজনীতির মধ্যমণি। গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী ও সম্পদের পাহাড়। দলের নেতাদের ম্যানেজ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন সাব্বির খান । সন্ত্রাসী বাহিনীর সাহায্যে জিম্মি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন মুকসুদপুর এলাকাজুড়ে। মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের উপরেও একাধিকবার হামলা করেছেন। দুই দফা হন খান্দারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান । জীবনে ১ বারও গ্রেফতার হয়নি অর্থ ও ক্ষমতার প্রভাবে ।

সাব্বিরের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, সাব্বির খান সম্পর্কে আলাদা করে কিছু বলার নেই। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল তছরুপ থেকে শুরু করে মাদক পাচার, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, টেন্ডারবাজি, হাট-ঘাট থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড-এই জীবনে সব অপরাধই করেছেন তিনি। সংক্ষেপে তার অপরাধের ফিরিস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। যতদূর জানি সাব্বির খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সাব্বিরবিহীন মুকসুদপুরের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছে।

২০২০ সালে জুন মাসে পুলিশের উপরে হামলা করে আমাসি ছিনিয়ে নেয় সাব্বির খান । পুলিশ বাদি হয়ে মামলা হলেও এ আসনের এমপি মুহাম্মাদ ফারুক খানের ভাই বলে তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাব্বির খান পরিবারের সকলকে নিয়ে মালোশিয়াতে আত্মগোপন করেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

e-Paper-25.08.2025

error: Content is protected !!

মুকসুদপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো সাব্বির খাঁন

আপডেট টাইম : ৯ ঘন্টা আগে
নিজস্ব প্রতিনিধি :

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির খান গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত এলাকায় ছিলো মূর্তিমান আতঙ্ক। আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনামলে গোপালগঞ্জ ১ আসনের এমপি মুহাম্মাদ ফারুক খানের ভাই হওয়ায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মুকসুদপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এখন মুকসুদপুরের মানুষের মুখে মুখে ফিরছে পলাতক সাব্বিরের অপরাধের কাহিনী।

সর্বশেষ ২০২৩-২৪ সালে উপজেলার দিসতাইল গ্রামে হত্যাকান্ড ও বাড়িঘর লুট ভাংচুরের নেতৃত্ব দেন সাব্বির খান। সাব্বির খান এলাকা ছাড়লেও তার ভয়াল স্মৃতি এখনো মুকসুদপুরের মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায়। সরেজমিন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান সাব্বির খান
তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বেজড়া ভাটরা গ্রামের সিদ্দিক খানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাব্বির খান হয়ে উঠেন এলাকায় ক্ষমতাসীন রাজনীতির মধ্যমণি। গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী ও সম্পদের পাহাড়। দলের নেতাদের ম্যানেজ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন সাব্বির খান । সন্ত্রাসী বাহিনীর সাহায্যে জিম্মি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন মুকসুদপুর এলাকাজুড়ে। মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের উপরেও একাধিকবার হামলা করেছেন। দুই দফা হন খান্দারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান । জীবনে ১ বারও গ্রেফতার হয়নি অর্থ ও ক্ষমতার প্রভাবে ।

সাব্বিরের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, সাব্বির খান সম্পর্কে আলাদা করে কিছু বলার নেই। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল তছরুপ থেকে শুরু করে মাদক পাচার, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, টেন্ডারবাজি, হাট-ঘাট থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড-এই জীবনে সব অপরাধই করেছেন তিনি। সংক্ষেপে তার অপরাধের ফিরিস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। যতদূর জানি সাব্বির খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সাব্বিরবিহীন মুকসুদপুরের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছে।

২০২০ সালে জুন মাসে পুলিশের উপরে হামলা করে আমাসি ছিনিয়ে নেয় সাব্বির খান । পুলিশ বাদি হয়ে মামলা হলেও এ আসনের এমপি মুহাম্মাদ ফারুক খানের ভাই বলে তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাব্বির খান পরিবারের সকলকে নিয়ে মালোশিয়াতে আত্মগোপন করেন।


প্রিন্ট