জসিম উদ্দিন ইতি:
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কুলিক নদীর ভূগর্ভস্থ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের গর্তে ডুবে শায়ন (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার উত্তরগাঁও গ্রামে কুলিক নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর পাড় বাঁধার কাজ করছিল। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আবার রামরায় দীঘি বিনোদন পার্কে ওই গর্ত থেকে বালু এনে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হচ্ছিল। আর সেই নদীর গর্ভে রবিউল ইসলামের ছেলে ১০ বছরের শিশু শায়ন নিহত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, শায়ন সেখানে ড্রেজার দেখতে গিয়েছিল। হঠাৎ পা পিছলে গিয়ে নদীর গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে নিহতের চাচা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইউএনও সাহেব কি পারবে মায়ের কোলের সেই বাচ্চাটিকে ফিরিয়ে দিতে? যেখানে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজার বা পাম্প দিয়ে বালু বা মাটি উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এ আইন ভঙ্গ করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ—সেখানে বালু মহাল ছাড়াই কেন বালু উত্তোলন করা হলো, এর বিচার দাবী করছি।
এরপর কথা হয় রামরায় পার্কে নিয়ে যাওয়া বালুর শ্রমিক তরিকুলের সাথে। তিনি বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে ৫শ’ টাকা হাজিরায় আমরা এখানে কাজ করছি। এ পর্যন্ত ১০০-১৫০ গাড়ি বালু এসেছে।
ছেলের মৃত্যুতে শোকে প্রলাপ বকছেন নিহতের বাবা রবিউল ইসলাম। তিনিও আইন অমান্যকারীদের বিচার দাবী করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল মাজলুবিন রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসকের সিএ সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নায়িম আশরাফ বলেন, “আপনার কথাগুলি আমি শুনলাম, স্যারকে বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট