বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি :
লাগাতার বৃষ্টি ও ভারতীয় ইছামতি নদীর উজানের পানিতে যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গোগা, কায়বা ও পুটখালী ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের শতাধিক একর আউশ ও আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মাছ চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ইছামতি নদী প্রবাহিত খালের মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুইচ গেট নির্মাণ করলে সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলের ফসল ও মাছের ঘের ভবিষ্যতে প্লাবিত হবে না বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী পুটখালী, দৌলতপুর, গোগা, রুদ্রপুর, কায়বা, ভবানিপুর, পাঁচ কায়বা, রাড়িপুকুর, বসতপুর, আমলা, সেতা, বিষ্ণপুর, কালিয়ানি, রাজাপুর, বারপোতা, ভুলাট, দাউদখালিসহ অনেক গ্রামের ফসলি জমি, মাছের ঘের, বাওড় ও মাছ চাষের জলাশয় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এলাকার প্রায় অর্ধশত গ্রামের কাঁচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে গরু, ছাগল, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসানসহ উপজেলার একটি টিম সীমান্তবর্তী পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
দেখা গেছে, ভারতের সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে শার্শার সীমান্তবর্তী এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ। বিশেষ করে উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের সাহেবের খাল দিয়ে ভারতীয় পানি প্রবেশ করছে। ভারতীয় পানির চাপে ও অতি বর্ষণের ফলে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ কারণে সীমান্তে বসবাসকারী অনেকের বাড়ির উঠানে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। পাকা সড়কের ওপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামো, রাস্তা-ঘাটের চরম ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ মাছ চাষীর লাখ লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের অভিমত
রুদ্রপুর গ্রামের কৃষক আমজেদ আলী বলেন, “টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় ইছামতি নদীর পানি প্রবেশ করে আমাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। এই মাঠে আমরা চাষাবাদ করে থাকি। আমন ধান রোপণ করেছিলাম। সব পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নাই।”
পুটখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকত হোসেন জানান, “বেনাপোলের পুটখালী গ্রামে অনেক মাছের ঘের ভেসে গেছে। একদিকে বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে ভারতের ইছামতি নদীর পানি প্রবেশ করায় মাছের ঘের, আউশ-আমন ধান ও আমন ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।”
প্রশাসনের বক্তব্য
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকার ক্ষতির বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
প্রিন্ট