“শুনছি সরকার ঘর বানায় দিচ্ছে। বড়লোকেরা সে ঘর পাইছে। চেয়ারম্যান- মেম্বরগের পাছে দোড়োইছি কোনো লাভ হই নেই। বয়স্ক-বিধবা বা দশ টাহার চালির কার্ড কোনডাই আমার কপালে জুটি নেই। টাহা-পয়সা নাই। তাই গত বছর ঝড়ে ভাইঙে পড়া ঘর সারতি পারি নেই। আপনারা সরকাররে এটটু কবেন আমারে যেন এটটা ঘর বানায় দেয়।” কথাগুলো বলছিলেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের জনার্দ্দনপুর গ্রামের নিঃসন্তান ও বিধবা আয়শা খাতুন (৬৫)।
আয়শার স্বামী মারা গেছেন এক যুগের বেশি আগে। বাবা ও শ্বশুরবাড়ির কেউ বেঁচে নেই। স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটার ওপর ভাঙাচোরা, জরাজীর্ণ ঘরে একাকী বসবাস তার। সামান্য বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে পানি পড়ে। বাতাসে উড়ে যায় বেড়া। গেল বছর ঝড়ে সে ঘরটিও হেলে পড়েছিল উঠানে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় কোনো রকমে দাঁড় করা হয় ঘরটিকে। বছরের পর বছর চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে ধরনা দিলেও ভাগ্যে জোটেনি সরকারি ঘর। জোটেনি বিধবাভাতা বা বয়স্কভাতা। বাধ্য হয়েই বৃদ্ধ বয়সে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
এদিকে স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল বসতভিটাও কেড়ে নিতে প্রতিবেশীরা মরিয়া। তাকে উচ্ছেদ করতে এলাকার কিছু মানুষ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এক পর্যায়ে ঘরে আগুন দেওয়াসহ চালাচ্ছেন নানা রকম অত্যাচার-নির্যাতন। বিচারের আসায় সমাজপতিদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরলেও সাড়া মেলেনি বলে জানান আয়শা।
এ ছাড়া গভীর রাতে ঘরে ঢুকে তাকে বাড়ি ছাড়ার জন্য ভয় দেখানো হয়। তার কেউ না থাকায় সবাই জমিটুকু দখল করতে চায়। তিনি স্বামীর ভিটায় মরতে চান। কোথাও যেতে চান না। জমি দিতে না চাওয়ায় প্রতিবেশী কয়েকজন তাকে উচ্ছেদ করার জন্য হয়রানি ও অত্যাচার করছে। কয়েক বছর আগে থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ মিয়া জানান, নিঃসন্তান বিধবা আয়শা অনেক কষ্টে আছেন। তার স্বামীর বসতভিটার ওপর অনেকের লোভ। অসহায় এ নারীকে দেখার কেউ নেই। সরকারি তাকে একটা ঘর করে দিলে শেষ বয়সে একটু আরামে থাকতে পারবেন।
দীঘা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা খোকন মিয়া জানান, অল্পদিন হলো চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন। অসহায় এই নারীর নিরাপত্তা ও সরকারি সহযোগিতা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।
ইউএনও রামানন্দ পাল ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আব্দুল্লাহহেল কাফী বলেন, শিগগিরই আয়শা বেগমকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রিন্ট

মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় 
শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ 





















