ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়া শহরে ঋণখেলাপি দুই ব্যক্তির বাড়ির সামনে ঋণ পরিশোধের দাবিতে ব্যানার নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শহরে কোর্টপাড়ায় ঋণখেলাপি রাশিদুল ইসলামের বাড়ির সামনে ও পুলিশ লাইনসের পাশে হাজিগলিতে ইউনুস আলীর বাড়ির সামনে এই কর্মসূচি শনিবার ছটিরদিনে পালন করেন তাঁরা।
ঋণ আদায়ে সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এক্সিম ব্যাংক (এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ পিএলসি) কুষ্টিয়া শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই ঋণগ্রহীতার বাড়ির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এক্সিম ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা সূত্রে জানা যায়, ইফাদ অটোরাইস মিলের মালিক ইউনুস আলী তাঁর চালকলের বিপরীতে ব্যাংক থেকে ২০১৭ সালে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেন। বর্তমানে ব্যাংক তাঁর কাছে ৩৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাবে। তিন বছর ধরে তিনি কোনো টাকা দেন না। বারবার নোটিশ করা হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। নিরুপায় হয়ে ঋণ পরিশোধের দাবিতে সকাল থেকে তাঁর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আধা ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ব্যাংকটির কর্মচারী-কর্মকর্তারা। সেখানে হ্যান্ডি মাইকে ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন। বাড়ির সামনে এমন কর্মসূচি দেখতে আশপাশের বাসিন্দারা জড়ো হন।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান, রাশিদুল ইসলাম চালকল ব্যবসায়ী। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বালিয়াশিশা এলাকায় আল্লাহর দান রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী তিনি। রাইস মিলটির অনুকূলে তিনি ২০১০ সালে তাঁদের ব্যাংক থেকে প্রথমবার এক কোটি টাকা ঋণ নেন। এরপর বছর বছর তিনি আরও ঋণ নেন। কিন্তু ঋণের টাকা ঠিকমতো তিনি পরিশোধ করেননি। বর্তমানে ব্যাংক তাঁর কাছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাওনা। ছয় মাস ধরে তিনি কোনো টাকাই পরিশোধ করছেন না। বারবার নোটিশ করা হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ জন্য বাধ্য হয়ে তাঁরা রাশিদুলের বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এক্সিম ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ ইউনুছ আলী বলেন, রাশিদুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর বাড়ি ও অফিসে গিয়েছিলাম। তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাঁর কারণে শাখায় আমানতকারীদের টাকা দিতে পারছি না। কারণ, আমানতের টাকা দিয়েই তো তাঁদের ঋণ দেওয়া হয়েছিল।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে রাশিদুল ইসলামকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ জন্য তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাড়ির অন্য বাসিন্দারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ব্যাংক কর্মকর্তা মইনুল হোসেন বলেন, শত চেষ্টা করেও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। সমাজের সামনে তাঁদের মুখোশ উন্মোচন করে সামাজিক চাপ প্রয়োগের জন্যই তাঁরা এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।
ছবি ক্যাপশন-ঋণখেলাপি এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে এক্সিম ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান
প্রিন্ট