ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আলুর কেজি ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ তরকারির দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার সকালে আলফাডাঙ্গা সদর বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভাষ্য, স্মরণকালে পুরানো আলু কখনো এত দামে বিক্রি হয়নি। আলু এমন একটি তরকারি, যা ধনী-গরিব সকল শ্রেণীর মানুষের প্রিয় খাবার। কিন্তু বর্তমানে এটি সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাকসুদ আলম ও মনিরুল ইসলাম নামে দুজন ক্রেতা জানান, গত এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় ক্রয় করেছেন। কিন্তু এখন সেই আলু ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তারা বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য বাজার করার পয়সা মেটানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। আলু সহ অন্যান্য সবজি কেনার সময় মাসিক খরচ শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
এদিকে, বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা আলুর দাম শুনে আলুর পরিবর্তে অন্য তরকারি ক্রয় করে বাড়ি ফিরছেন।
হিমায়েত হোসেন নামে একজন ক্রেতা বলেন, “আমাদের দুঃখের কথা কাকে বলবো! সিন্ডিকেট এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কারচুপির কারণে আলু সহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েই চলেছে। তাদের কোনো প্রতিকার নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা আমাদের জিম্মি করে ফেলেছে।”
বাজারের অন্যান্য দ্রব্যের দাম:
শীত আসলেও সবজির বাজার এখনো গরম। সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
- সিম – ১০০ টাকা প্রতি কেজি
- মিষ্টি কুমড়া – ৮০ টাকা
- পাতাকপি – ৭০ টাকা
- ফুলকপি – ১২০ টাকা
- বেগুন – ৭০ টাকা
- পটল – ৭০ টাকা
- করলা – ৮০ টাকা
- লাউ – প্রকারভেদে ৬০ থেকে ১৫০ টাকা
- লাল শাক ও পালং শাক – ৩০ থেকে ৫০ টাকা প্রতি মণ
পাইকাড়ি ব্যবসায়ীদের মন্তব্য:
আলু পাইকাড়ি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, “মোকামে আলুর দাম বেশি এবং আমদানি কম। বেশি দামে কিনলে আমাদের বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এ অঞ্চলে আলুর উৎপাদন কম, তাই আমাদের দাম বাড়াতে হচ্ছে।”
এদিকে, আলফাডাঙ্গা কাঁচা বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি জুদ্দু শেখ জানান, “পাইকাড়ি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে আলু কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমার ব্যবসায়িক জীবনে কখনো ৭৫ টাকা কেজি পুরানো আলু দেখিনি। বর্তমানে বিক্রি অর্ধেকে নেমে গেছে। তবে, কিছু দিনের মধ্যে নতুন আলু বাজারে এলে পুরানো আলুর দাম কমে যাবে।”
প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি:
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমীন ইয়াসমীন জানান, “বাজার মনিটরিং জোরদার করা হবে এবং পাশ্ববর্তী উপজেলাতে খবর নিয়ে দেখতে হবে। যদি অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বেশি রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট