কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় এক্মি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের নাটকের রহস্য উন্মোচন করেছে দৌলতপুর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর ২০২৪) বেলা সাড়ে বারোটার দিকে পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন ছিনতাই নাটকের আসল রহস্য।
ঘটনার তদন্তে জানা যায়, মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত থাকার কারণে ছিনতাইয়ের নাটক সাজানো হয়েছিল এবং নাটকের মূল হোতা ছিলেন এক্মি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান নিজেই। হাফিজুর রহমান নাটোর জেলার বনপাড়া উপজেলার বড়াইগ্রাম এলাকার লেদু প্রামানিকের ছেলে।
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘আমি মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম এবং কোম্পানির কাছে বেশ কিছু টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিলাম। চাকরি ছাড়তে চেয়েছিলাম, কিন্তু টাকা না দিয়ে চাকরি ছাড়তে পারছিলাম না, তাই আমি নিজেই ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘গত ২ নভেম্বর রাতে ছাতারপাড়া এলাকায় আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি বন্ধুর কাছে রেখে আসি, পরে ছিনতাই হওয়ার ভান করে আমি দৌলতপুর হাসপাতালে ভর্তি হই।’’
ঘটনার পর, ৩ নভেম্বর রাতে দৌলতপুর থানা পুলিশকে জানানো হয় যে, শীতলাই পাড়া গ্রামে কিছু ছিনতাইকারীরা এক্মি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হাফিজুর রহমানের কাছ থেকে মোটরসাইকেল ও টাকা ছিনতাই করেছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং তদন্তে জানতে পারে যে, হাফিজুর রহমান বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রদান করেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, মোটরসাইকেল ও টাকা ছিনতাই হয়নি। মোটরসাইকেলটি তিনি দাশুড়িয়ায় তার বন্ধুর বাসায় রেখে এসেছিলেন।
পুলিশের মাধ্যমে হাফিজুর রহমানের বন্ধুর বাসা থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ‘‘কোম্পানির কাছে আমার বেশ কিছু টাকা বাকি ছিল এবং আমি সেগুলি পরিশোধ করতে চাচ্ছিলাম না। এজন্যই আমি এই ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিলাম।’’
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আওয়াল কবীর বলেন, ‘‘কোম্পানির চাপের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে হাফিজুর রহমান ছিনতাই নাটক সাজিয়েছিল। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সরলভাবে তার ভুল স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’’
প্রিন্ট