মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হাজীপুর, ৪ নং ওয়ার্ডের মোস্তফাপুর ও ১ নং ওয়ার্ডের লক্ষীকোল গ্রামের ক্ষুদ্র জমির মালিক, বর্গাচাষী এবং কৃষি দিন মুজুরী মাগুরা জেলা প্রশাসক বরাবর দুই ফসলী ও তিন ফসলী জমির মাটি কেটে ঘের খননের কারণে ফসলের ক্ষেত নষ্ট হওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে।
সরেজমিনে রবিবার ২১ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার সময় প্রায় শতাধিক কৃষক ও জমির মালিকের পক্ষে ভুক্তভোগী হাজীপুর গ্রামের কৃষক মোঃ মুক্তার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুন্সি আব্দুর রউফ, লক্ষীকোল গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, হাজীপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লিটন ও দিলীপসহ সাক্ষরকৃত ৬০ জন কৃষক অভিযোগে বলেন, অত্যন্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানান, হাজীপুর গ্রামের মোঃ সাহেব আলীর পুত্র মোঃ আবু সালাম হাজীপুর বরইচারা মোস্তফাপুর ফুলবাড়ি মৌজার দুই ফসলী ও তিন ফসলী জমি অতিলোভে জমির মালিকগণের কাছ থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি মূল্য জমি ক্রয় ও লিজ নিয়ে মাছের ঘের খনন এবং বর্তমানে এখনও ঘের খননের কাজ অব্যাহত রেখেছে। মাছের ঘের পাড় দিয়ে শিমুল (মান্দার) গাছ লাগিয়েছে, গাছের ছায়ায় ও পাড়ে হাজার হাজার ইঁদুর বাসা বেধেছে। আর এই গাছের ছায়া ও ইঁদুরের আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। ঘের পাড়ের কারণে পাড়ে চারপাশে জলাবদ্ধতা হয়ে থাকছে আর এর জন্য দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম পাশের ১ কিলোমিটারের বেশি ফসলের শত শত একর ও বিঘার জমি অনাবাদী হয়ে পড়েছে।
যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ঘোষণা দিয়েছেন, কোন অবস্থাতেই কৃষি আবাদি জমি নষ্ট করা যাবে না এবং অনাবাদি যেসব জমি আছে সেগুলোও ফসল উৎপাদনে আনা হোক মাছের ঘের করা যাবে না। এমতাবস্থায় মাছের ঘের বিনষ্ট করিয়া ও দূর্নীতিবাজ প্রতারক সালামকে দূর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করিলে বাঁচবে কৃষক, বাঁচবে বর্গাচাষী ও কৃষি দিনমজুরি ও শত শত বিঘা বা একরের কৃষি জমি। সেই সাথে দেশের খাদ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। তারা আরও বলেন, আব্দুস সালাম একজন অসৎ লোক মাগুরা থাকাকালীন সময়ে তার কোন আয়ের কোন উৎস ছিলো না। দীর্ঘ দিন সে ঢাকায় অবস্থান করিয়া অবৈধ পন্থায় অগাধ সহায় সম্পত্তির মালিক হন, যা তদন্ত হওয়া আবশ্যক।
আব্দুস সালাম জানান, এলাকার কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ঘেরের পশ্চিম পাশে কচুরিপানা রয়েছে যেটা পরিত্যক্ত জমি এখানে কোন ফসল উৎপাদন করা হয়না। হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহারুল হক আখরোট জানান, লক্ষীপুর, হাজীপুর ও ফুল বাড়ি বিলের মাঠে খাল খনন করতে চেয়ে ছিলেন কিন্তু ঘেরের মালিক এলাকার দুষ্কৃত লোকজন নিয়ে বাঁধা দেয় খাল করতে। আর এ জন্য এখন তারা পানিতে ডুবে মরছে এবং তাদের জমির ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে।
পানির কারণে চেয়ারম্যান আরও জানায়, কৃষি জমি বাঁচিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং কোনক্রমেই কৃষি জমি বদ্ধ রাখা যাবে না, প্রয়োজনে মাছের ঘের থাকবে না।
প্রিন্ট