ঢাকা , সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নরসিংদীর রায়পুরাতে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করে বীর মুক্তিযোদ্ধা !

মুক্তিযোদ্ধারা নিঃসন্দেহে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের ত্যাগ ও অবদানে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও আজও বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় পাওয়া যায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। জাতি হিসেবে সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের। এমনই এক বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান মিলেছে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার উত্তর মির্জানগর গ্রামে।
বিতর্কিত ওই মুক্তিযোদ্ধার নাম মোঃ মফিজ উদ্দিন, পিতার নাম মৃত সিরাজ উদ্দিন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক. ম.  মোজাম্মেল হক ও মুক্তিযোদ্ধা সচিব হারিস মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে রায়পুরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। প্রায় তিন বছরের মতো নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। তার মুক্তিযোদ্ধা ভোটার নম্বর ছিল-৬৫৮, গেজেট নাম্বার ছিল-৩৫৯৬।
কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা চূড়ান্ত বাছাই পর্ব থেকে তিনি বাদ পড়েছেন। বন্ধ হয়েছে তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। আবারো সেই ভাতা চালু করতে পায়তারা করছেন সেই মুক্তিযোদ্ধা। ভাতা চালু করতে মুক্তিযোদ্ধা সচিব হারিস মিয়ার এক আত্মীয় কাবিল নামের এক ব্যক্তির শরণাপন্ন হন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বশির আহমেদ। বশির আহমেদ নরসিংদী ডিসি অফিসের সাধারণ শাখায় কর্মরত।
এ বিষয়ে  কাবিল জানায়, আমি যখন তার বাবার বিষয়ে উপরে তদবির করতে যাই, তখন জানতে পারি তিনি প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করেছেন। সচিব আমার আত্মীয় হয় বিধায় আমি ওখান থেকে বেঁচে আসছি। একথা আমি আগে জানলে কখনো তদবির করতে যাইতাম না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিসি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বশির আহমেদই প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। তার বাবা এগুলি কিভাবে করবে? ডিসি অফিসে চাকুরি করার সুবাদে তার সবকিছুই জানা।
এ বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয় বশির আহমদের সাথে। তিনি জানান, আমি ঢাকায় ট্রেনিং এ আছি, ফ্রি হয়ে ফোন দিবো। পরবর্তীতে তাকে আবার ফোন দিলে একই কথা বলেন।
এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হয় মির্জানগর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রেজাউল করিমের সাথে। তিনি জানান, মফিজ উদ্দিন ২০১৪ সালের দিকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা ভুক্ত হন। কিন্তু চূড়ান্ত বাছাই শুরু হলে তার কাগজপত্র সঠিক না থাকার কারণে তিনি বাদ পড়ে যান। প্রায় তিন বছরের মত  তিনি ভাতা নিয়েছেন। সরকার চাইলে সেই ভাতা তিনি ফেরত দিতে বাধ্য। স্বাক্ষর জাল করার কারণে তার শাস্তি হবে।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

নরসিংদীর রায়পুরাতে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করে বীর মুক্তিযোদ্ধা !

আপডেট টাইম : ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪
মুক্তিযোদ্ধারা নিঃসন্দেহে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের ত্যাগ ও অবদানে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও আজও বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় পাওয়া যায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। জাতি হিসেবে সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের। এমনই এক বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান মিলেছে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার উত্তর মির্জানগর গ্রামে।
বিতর্কিত ওই মুক্তিযোদ্ধার নাম মোঃ মফিজ উদ্দিন, পিতার নাম মৃত সিরাজ উদ্দিন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক. ম.  মোজাম্মেল হক ও মুক্তিযোদ্ধা সচিব হারিস মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে রায়পুরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। প্রায় তিন বছরের মতো নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। তার মুক্তিযোদ্ধা ভোটার নম্বর ছিল-৬৫৮, গেজেট নাম্বার ছিল-৩৫৯৬।
কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা চূড়ান্ত বাছাই পর্ব থেকে তিনি বাদ পড়েছেন। বন্ধ হয়েছে তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। আবারো সেই ভাতা চালু করতে পায়তারা করছেন সেই মুক্তিযোদ্ধা। ভাতা চালু করতে মুক্তিযোদ্ধা সচিব হারিস মিয়ার এক আত্মীয় কাবিল নামের এক ব্যক্তির শরণাপন্ন হন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বশির আহমেদ। বশির আহমেদ নরসিংদী ডিসি অফিসের সাধারণ শাখায় কর্মরত।
এ বিষয়ে  কাবিল জানায়, আমি যখন তার বাবার বিষয়ে উপরে তদবির করতে যাই, তখন জানতে পারি তিনি প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করেছেন। সচিব আমার আত্মীয় হয় বিধায় আমি ওখান থেকে বেঁচে আসছি। একথা আমি আগে জানলে কখনো তদবির করতে যাইতাম না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিসি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বশির আহমেদই প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। তার বাবা এগুলি কিভাবে করবে? ডিসি অফিসে চাকুরি করার সুবাদে তার সবকিছুই জানা।
এ বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয় বশির আহমদের সাথে। তিনি জানান, আমি ঢাকায় ট্রেনিং এ আছি, ফ্রি হয়ে ফোন দিবো। পরবর্তীতে তাকে আবার ফোন দিলে একই কথা বলেন।
এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হয় মির্জানগর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রেজাউল করিমের সাথে। তিনি জানান, মফিজ উদ্দিন ২০১৪ সালের দিকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা ভুক্ত হন। কিন্তু চূড়ান্ত বাছাই শুরু হলে তার কাগজপত্র সঠিক না থাকার কারণে তিনি বাদ পড়ে যান। প্রায় তিন বছরের মত  তিনি ভাতা নিয়েছেন। সরকার চাইলে সেই ভাতা তিনি ফেরত দিতে বাধ্য। স্বাক্ষর জাল করার কারণে তার শাস্তি হবে।